Advertisement
  • বি। দে । শ
  • জুন ১২, ২০২৪

পিআরআইও রিপোর্টে রঞ্জিত ২০২৩ । অস্ত্রের উল্লাসে ঢেকেছে শান্তির মুখ

২০২৩ সাল সামগ্রিকভাবে ১২২,০০০টি যুদ্ধজনিত মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছিল। ২০২৩ সালের তিন মাসেরও কম সময়ে ইউক্রেনে ৭১০০০এরও বেশি মানুষ ও গাজায় প্রায় ২৩০০০জন নিহত হয়েছেন।

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পিআরআইও রিপোর্টে রঞ্জিত ২০২৩ । অস্ত্রের উল্লাসে ঢেকেছে শান্তির মুখ

কেবল তাকিয়ে দেখি মার্চপাস্ট, কুচকাওয়াজ, লেফট রাইট
এই রক্তাক্ত মাটিতে আর ফুল কই, শুধু অস্ত্রের উল্লাস।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে প্রায় আট দশক হয়ে গেল। ১৯৩৯ সালে শুরু হওয়া মানব ইতিহাসের নৃশংসতম অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল ১৯৪৫-১৯৪৬ সালে। সমগ্র বিশ্ব হিটলার, মুসোলিনি , স্তালিনের মতো একনায়কদের যুগপৎ আধিপত্য ও পতন দেখেছিল। দেখেছিল যুদ্ধবন্দিদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ, অত্যাচারের পাশাপাশি নানারকম পৈশাচিক গবেষণা; দেখেছিল গ্যাস চেম্বার, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প,অবাধ যৌন হেনস্থা । তবে সবকিছুকে হয়ত ছাপিয়ে গিয়েছিল ৬ ও ৯ আগস্ট জাপানের দুটি শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিকে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে নয় ছয় করে দেওয়ার মতো পারমাণবিক বিস্ফোরণ, যার স্মৃতি আজও বহন করে নিয়ে চলেছে ‘সূর্যোদয়ের দেশ’ জাপান। জাপান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখনও সে মানবাত্মাকে পূজা করে। কিন্তু সারা বিশ্ব কি জাপানের থেকে শিক্ষা নিতে পেরেছে?

হয়ত না। ২০২১,২০২২,২০২৩।বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াবহতাকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বিগত তিনটি বছর । বিশেষ করে ২০২৩ সাল।মোট ৫৯টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ওই বছরে। নরওয়ের শান্তি ও সংঘর্ষবিষয়ক গবেষণা সংস্থা দ্য পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অসলোর (পিআরআইও) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে ।

ওই সংস্থার গবেষক অধ্যাপক সিরি আস রাস্টেডের মতে, শীতল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে সংঘাত বাড়ছে এবং বর্তমানে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দিন যতো গড়াচ্ছে, সংঘাত তত জটিল হচ্ছে এবং সংঘাতকে ইন্ধন জোগানোর উপাদানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘

রুস্টাড আরও বলেন, রাষ্ট্র-ভিত্তিক সংঘাতের বৃদ্ধির জন্য ইসলামিক স্টেটকে আংশিকভাবে দায়ী করা যেতে পারে । এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এর বিস্তৃতি, এবং অন্যান্য অ-রাষ্ট্রীয় ইন্ধনদাতাদের সংঘাতে জড়িয়ে পড়া, যেমন জামাত নুসরাত আল-ইসলাম , ওয়াল-মুসলিম গ্রুপ প্রভৃতিও এর জন্য দায়ী । তথ্যটিতে আরও দেখানো হয়েছে যে গত, বছর যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা কমে গেলেও, সামগ্রিকভাবে বিগত তিন বছরে বিগত তিন দশকের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সংঘাত-সংক্রান্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধের মৃত্যুর ঘটনা যে যে কারণে ঘটেছে, তা হল – : ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ, ইউক্রেনে রাশিয়ান আক্রমণ এবং গাজায় বোমা হামলা। ২০২৩ সাল সামগ্রিকভাবে ১২২,০০০টি যুদ্ধজনিত মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছিল। ২০২৩ সালের তিন মাসেরও কম সময়ে ইউক্রেনে ৭১০০০এরও বেশি মানুষ ও গাজায় প্রায় ২৩০০০জন নিহত হয়েছেন।

আফ্রিকা এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রভিত্তিক দ্বন্দ্বে সবাইকে ছাপিয়ে গেছে। সেখানে প্রতি বছর ২৮ টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এশিয়া বছরে ১৭, মধ্যপ্রাচ্য ১০ টি , ইউরোপ ৩ টি ও আমেরিকা বছরে ১ টি সংঘাতের বার্ষিক গড় নিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

অধ্যাপক রাস্টেড অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যের ফল নিয়ে আশাবাদী। তিনি জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিসংখ্যান দেখে আশা করা যায় যে সিরিয়ার মতো চরম সহিংস এবং জটিল সংঘাত কমতে পারে। অন্যদিকে, নতুন হিংসাত্মক সংঘাত আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, যা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!