- দে । শ
- জানুয়ারি ১৩, ২০২২
পিঁপড়ে খেলে আয়ু বাড়ে? অতিমারিকালে পিঁপড়ের চাটনি হিট
গবেষকরা জানায়, পিঁপড়ের কিছু প্রজাতি কোলেস্টেরল কমাতে এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসাবে কাজ করে।

করোনা থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গাইডলাইনের পাশাপাশি ইউনিটি বাড়াতে এবং ফিট থাকাতে আমরা ঘরোয়া টোটকারও সাহায্য নিয়েছি। যেমন উষ্ণ গরম জল, আদা-গোলমরিচ, তুলসি সহ চা, মধু, কবিরাজী পথ্য ইত্যাদি। গত দুবছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনা থেকে বাঁচতে নেটিজেনদের নানা মজাদার খবরেরও ছলক উঠে আসে। বিদেশের এক মহিলা টাকা ভাইরাসমুক্ত করতে গিয়ে সব টাকা নষ্ট করে ফেললেন। কেউ আবার অতিরিক্ত স্যানিটাইজ হাতে মেথে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। কারেন্ট চলে যাওয়ায় মোমবাতি জ্বালাতে গিয়ে ঘটে যায় বিপদ। শরীরের বেশ কিছু অংশ জ্বলে যায়। অনেক আবার গোমূত্র খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন। ঘটনাগুলো আপাতদূষ্টিতে মজাদার মনে হলেও অতিমারি প্রিয়ডেই আমরা দেখলাম আপন জনের মূত্যুতেও তাঁকে ছুঁতে না পারার যন্ত্রনা। মানুষের মনের ওপর কতটা গভীর ক্ষত তৈরি করল। থমকে গেল গোটা বিশ্ব।
প্রথম, দ্বিতীয়র পর এবার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে । সকলেরই কাম্য পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক । সংক্রমণকে রুখতে হার্ড ইউমিনিটি তৈরি হওয়া দরকার। সেই চেষ্টায় গত বছর, কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় লাল পিঁপড়ের চাটনি খুব আলোচিত হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচুর শেয়ার হয়েছিল সেই রেসিপি। তারপর বলা হল, এই চাটনি কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় কার্যকর। পিঁপড়ের মতো প্রাণীকে খাবার হিসেবে ব্যবহার করাটা অনেকে খুব অদ্ভুত বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু ছত্তিশগড়ের আদিবাসী এলাকায় এই চাটনি বেশ হিট। জানা যাচ্ছে, বস্তার জেলায় ২৩ বছর বয়সী এক যুবক তাঁর ধাবায় পিঁপনের চাটনি দেওয়া শুরু করেছেন। আর এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা হয়েছে। তবে
বিশ্বের অনেক জায়গায় পিঁপড়ে মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়াতেও মানুষ পিঁপড়ে শিকার করে খায়। হরমিগাস কুলোনাস প্রজাতির পিঁপড়ে বা বিগ বাট কলম্বিয়ার উত্তর মধ্য স্যান্টান্ডার অঞ্চলে শিকার করা হয়। এই প্রজাতির পিঁপড়েরা বসন্তে বংশবৃদ্ধি করে। তাদের রানী পিঁপড়ে ধরা পড়লে তা দিয়ে সুস্বাদু খাদ্য তৈরি হয়।কলম্বিয়ায় মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারী বৃষ্টিপাতের পর পিঁপড়ের প্রজনন মরসুম আসে। তখন তারা অনেক ডিম দেয়। এগুলো নুন দিয়ে ভাজলে এর স্বাদ চিনাবাদাম বা পপকর্নের মতো হয়। এখানে এই মরসুমে পিঁপড়ে খুব ধুমধাম করে খাওয়া হয় এবং তাদের দাম কলম্বিয়ান কফিকেও ছাড়িয়ে যায়। সেই সময় পিঁপড়ে আয়ের একটি ভাল উৎস।
শুধু কলম্বিয়াতেই নয়, মেক্সিকোতেও এই ধরনের পিঁপড়ে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। মেক্সিকোতে উড়ন্ত পিঁপড়ে বিশেষ করে বর্ষাকালে ধরা হয় এবং ভাজা খাওয়া হয়। এছাড়াও নানা পদ বানাতে পিঁপড়ে ব্যবহৃত হয় । অনেক লোক এই পিঁপড়েগুলিকে পিজা বা টপিংসের জন্য মশলা হিসাবে ব্যবহার করে। সেখানে এটি একটি খুব প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয় ।
ব্রাজিলে রানী পিঁপড়ে প্রচুর খাওয়া হয়। এগুলো এখানে জলখাবারহিসেবে ভাজা হয় বা চকোলেটে ডুবিয়ে আনন্দের সাথে খাওয়া হয়। এক সময় এখানকার গরীবদের খাবার ছিল পিঁপড়ে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি এখন ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডও পিঁপড়ে খাওয়া হয় । বেশিরভাগ সময় পিঁপড়ে অন্য পোকামাকড়ের সাথে খাওয়া হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে লাওস এবং উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে পিঁপড়ের ডিম খাওয়া হয়। সেখানে পিঁপড়ের ডিম প্রোটিনের একটি উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়। বিশ্বের অনেক দেশেই পিঁপড়েকে অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে দেখা হয়। পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার তো পিঁপড়ে খাওয়া হয়ই। পিঁপড়ে খাওয়া মানুষও দীর্ঘজীবী হয় বলে মনে করা হয়। গবেষণা আরও জানায়, পিঁপড়ের কিছু প্রজাতি কোলেস্টেরল কমাতে এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসাবে কাজ করে।
❤ Support Us