- প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ২৪, ২০২২
মেয়েদের বিক্রি করেছি, এ বার বেচেছি কিডনিও! সন্তানদের খিদের জ্বালায় কাতরাতে দেখতে পারছি না: আফগান মা

প্রতীকী চিত্র ।
চার বছর আগে আফগানিস্তানের বদগিস প্রদেশের ভিটেমাটি ছেড়ে উঠে এসেছিলেন হেরাটের বস্তিতে দেলরম রহমতি । আট সন্তানের মুখে দুবেলা অন্ন তুলে দিতে দিশেহারা মা। খিদের জ্বালায় মাস কয়েক আগে নিজের দুই মেয়েকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি । রহমতির বলেছেন, ‘অপরিচিত লোকেদের হাতে মেয়েদের বেচে দিয়েছি এক লক্ষ আফগান মুদ্রায় (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৭০ হাজার টাকা)। একজন আট আর অন্যটার বয়স ছয়।’ মেয়েরা বড় হলে মেয়েদের তুলে দিতে হবে ক্রেতাদের হাতে।
মেয়ে বিক্রি করে হাতে কিছুটা অর্থ এলেও রহমতির সংসারে সাশ্রয় হয়নি। দুই ছেলের চিকিৎসায় সব অর্থ শেষ! রহমতির এক ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন আর অন্য জন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। স্বামীর জন্য নিয়মিত ওষুধও কিনতে হয় । দু’মাস আগে দেড় লক্ষ আফগানিতে (ভারতীয় মুদ্রায় যা ১ লক্ষ টাকার কিছু বেশি) নিজের ডান কিডনিও বিক্রি করেছেন রহমতি । এখন নিজেই সে অসুস্থ। কিন্তু, চিকিৎসা করানোর জন্য অর্থ নেই তাঁর হাতে। রহমতি বলেছেন, ‘মা হয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিক্রি করাটা যন্ত্রণার, ঋণের বোঝা নামাতে আর খিদের জ্বালায় আমার কিডনিও বেঁচেছি।’
তালিবানশাসিত আফগানিস্তানে এ রকম হাজারো রহমতির দেখা মিলছে খবর ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর ।রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, ‘সাম্প্রতিককালের আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক সঙ্কট চরমে উঠেছে।’
২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতা দখলের পর বিদেশি দেশ গুলো আর্খিত সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। এর পাশাপাশি অতিমারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনাবৃষ্টি— কর্মহীন দেশের বহু মানুষ। হু হু করে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বিপাকে পড়েছেন রহমতিরা। নিজেদের কিডনি বিক্রি করাই তাঁদের কাছে অর্থ উপার্জনের অন্যতম পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি রহমতি। তিনি বলেছেন, ‘এখনও হাঁটতে-চলতে অসুবিধা হচ্ছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আমার ক্ষতের ঘা শুকোয়নি। হাসপাতাল থেকে চলে আসতে হয়েছে। তবে নিজের মরণ ভাল। কিন্তু সন্তানদের খিদের জ্বালায় কাতরাতে দেখতে পারছি না!’
❤ Support Us