- প্রচ্ছদ রচনা
- মে ২৩, ২০২২
চিনকে বাইডেনের আচমকা হুমকি, তাইওয়ানে হামলা হলে চুপ করে বসে থাকব না। ছুটে যাবে মার্কিন সেনা ।
যুদ্ধের আবহ দেখা দিলে সরাসরি সত্যি কি মহাসমুদ্রে ছুটবে মার্কিন রণতরী? না, বাইডেনের বিবৃতি নিছক এক ফাঁকা আওয়াজ।

রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন টোকিওর সংবাদ সম্মেলনে। (এপি ছবি/ইভান ভুচি)
এই প্রথম নয়, আগেও তাইওয়ানেকে ঘিরে আমেরিকা চিনকে হুমকি দিয়েছে। এবার সরাসরি, যুদ্ধের ভয় দেখালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন । জাপানের কোয়াড সম্মেলনে মঞ্চ থেকে। ওখানে উপস্থিত তখন বহু দেশের নেতারা । মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তূতায় গরম গরম শব্দ প্রয়োগ করে বললেন—আমরা খবর রাখছি এবং যথাযথ সতর্ক। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তাইওয়ানে চিন আক্রমণ করতে পারে, বিশেষজ্ঞরাও এরকম বলছেন। চিন যদি স্বশাসিত তাইওয়ানে হামলা চালায়, আমেরিকা চুপ করে থাকবে না।
তাইওয়ানকে বাঁচাতে মার্কিন সেনা ছুটে যাবে। আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, চিন আগুন নিয়ে খেলছে । তাইওয়ান দখলের চেষ্টা করছে । ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা করেছে আমেরিকা আর জাপান। সে প্রসঙ্গ টেনে বাইডেন স্মরণ করিয়ে দিলেন চিনের মতিগতি ভালো নয়। তাইওয়ান আক্রান্ত হলে ইউক্রেনের মতোই দুর্বিসহ অবস্থার মুখোমুখি হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বাইডেন বলেছেন, পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করলে আমরা সরাসরি তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াব। সোমবারই যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয় আমেরিকা ও জাপানের । প্রত্যক্ষভাবে চিন, তাইওয়ানের উল্লেখ নেই। পরোক্ষভাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মার্কিন-জাপান প্রতীজ্ঞাবদ্ধ । বাইডেন বলেছেন, আমরা ‘এক চিন নীতি’তে স্বাক্ষর করেছি। তার অর্থ এই নয়, কেউ জোর করে তাইওয়ান দখল করার চেষ্টা চুপ করে বসে থাকব। তাইওয়ান পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকার এরকম কড়া বার্তা এই প্রথম। সত্যি যদি চিন তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে মার্কিন সেনা পাল্টা আঘাত হানবে? না এটা শুধু একটি হুমকি?
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা পাকিস্তানের পাশে ছিল। ভারত-পাকিস্তান একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে আমেরিকা ভয় দেখাল আমরা সপ্তম নৌবহর পাঠাচ্ছি। রাশিয়া চুপচাপ বসে থাকে নি। তাঁরাও তাঁদের রণতরী পাঠানোর আওয়াজ তুলল। ক্ষমতামত্ত আমেরিকা সপ্তম নৌবহর পাঠায়নি। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে মস্কোকে দেখে নেওয়ার অনেক আওয়াজ দিয়েছে । আসলে যা ফাঁকা হুমকি মাত্র। নেটো বাহিনী আসে নি। অস্ত্র আসেনি। জেলেনেস্কির করুণ আর্তনাদ যুদ্ধের বাতাসে মিশে গেল। ইউক্রেন আজ ধ্বংসস্তূপ। তাইওয়ানে চিন হামলা চালালে একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিশ্ব জনমতের তোয়াক্কা না করেই আধিপত্যবাদী বেইজিং তার মতলব হাসিল করবে ।
বাইডেনের হুমকির প্রতিক্রিয়ায়, চিনের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘চিন-তাইওয়ান-এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ সহ্য করব না। চিনের দৃঢ় সংকল্প, ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতাকে ছোট করে দেখা ঠিক নয়। ‘
গত কয়েক বছর জুড়ে তাইওয়ান সংলগ্ন এলাকায় চিন সেনারা একাধিক মহড়া দিয়েছে। আকাশসীমা স্পর্শ করেছে চিনের বিমান। ভূমধ্যসাগরে প্রস্তুত রণসজ্জা। এরকম চিত্র দেখেই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তাইওয়ানে চিন আক্রমনের অঙ্ক কষছে ।
❤ Support Us