- এই মুহূর্তে ভা | ই | রা | ল
- জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
ক্লাসরুমে ছাত্রকে বিয়ে শিক্ষিকার, ভিডিও ভাইরাল হতে সামনে এলো আসল কাহিনী

বিয়ের সাজে ‘কনে’ শিক্ষিকা, সামনে ছাত্র ‘বড়’। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে রাজ্য তোলপাড়
বিয়ের সাজে ‘কনে’ শিক্ষিকা, সামনে ছাত্র ‘বড়’। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের মধ্যেই বিয়ের আসর। সিঁদুরদান থেকে মালাবদল অনুষ্ঠান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিতর্কের মুখে তড়িঘড়ি ‘পাত্রী’কে ছুটিতে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদিয়ার হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি ক্যাম্পাসের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের ক্লাসরুমের এই দৃশ্য এখন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে একগুচ্ছ। যদিও এটি আসল বিয়ে নয় প্রোজেক্টের অংশ হিসেবে বিয়ের আসর, এমনই দাবি করেছেন ওই অধ্যাপিকা। আবার কখনও বলছেন বলছেন, এটা ফেশার্স পার্টির নাটকের অংশ। প্রজেক্ট আর ফ্রেশার্স পার্টির মধ্যে যে আকাশ-পাতাল ফারাক রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পূর্ণাঙ্গ বিয়ের দৃশ্য। বিভাগীয় প্রধানকে সিঁদুর পড়িয়ে দিচ্ছেন প্রথম বর্ষের ছাত্র। মালাবদল, সাতপাকে ঘোরা থেকে শুরু করে শুভদৃষ্টিও। একে অপরকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে গ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন তাঁরা। সাক্ষী হিসেবে তিনজনের সইও রয়েছে তাতে। এই ভাইরাল ভিডিও সামনে আসতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিতর্কের মুখে ওই অধ্যাপিকা জানিয়েছেন ক্লাসরুমে বিয়ে ঘটনা আদৌ সত্যি নয়। পুরোটাই একটি প্রজেক্টের অংশ। ক্লাসরুমে অধ্যাপিকা ও ছাত্রের মালাবদলের ছবি-ভিডিও সামনে আসতেই পদক্ষেপ নিয়েছে ম্যাকাউট কর্তৃপক্ষ। আপাতত ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ওই অধ্যাপিকাকে। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।
ম্যাকউটের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ি বলেন, ‘ এ ঘটনায় আমরা একটু হতচকিত হয়ে গিয়েছি। কারণ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতায় এই ধরনের ঘটনা দেখিনি কখনো। অধ্যাপিকাকে কম্পালসরি লিভে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এবার সে ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির অধ্যাপিকা পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ফ্রেশার্স অনুষ্ঠানের একটি অংশে বিয়ের বিষয়টি ছিল। তিনি বলেন, “কোনও ড্রামার একটা ক্লিপিং এভাবে ভাইরাল হতে পারে এটা আমার চিন্তার বাইরে। টিচার্স ডে, ফ্রেশার্স ডে এসব অনুষ্ঠানে তো নাচ, গান, নাটক হয়। কিন্তু নাচ, গান বাজে নাটকের একটা নির্দিষ্ট অংশ ভাইরাল হয়েছে। এটা আমরা ফ্রেশার্স পার্টি প্ল্যান করেছিলাম। যেখানে নাচ, গান, ড্রামা সবই হচ্ছে। সেই হিসেবেই ড্রামাটা হয়েছিল, যেখানে ছাত্র এবং শিক্ষক অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু একটা পার্ট নিয়ে সেটা ভাইরাল করে দিল। এটা আমার জন্য আশ্চর্যজনক বিষয়। আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আমি আইনি পথে হাঁটছি এবং অভিযোগও জানিয়েছি। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ যে তদন্ত কমিটি করেছে। যাঁরা তদন্ত করে সত্যিটা সামনে নিয়ে আসবে।”
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি- এর অন্তবর্তী উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এই বিষয়ে তাদের কিছুই জানা ছিল না। তবে অধ্যাপিকার কাছে জবাব জানতে চাইলে, তিনি জানিয়েছেন, গোটাটাই আসলে একটা নাটক। এটা একটা সাইকো ড্রামা। ক্লাসরুমে তার প্রজেক্ট চলছিল। যেহেতু পুরো বিষয়টা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গিয়েছে, তাই অধ্যাপিকাকে কয়েকদিনের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারী কমিটির মহিলা সদস্য এবং বাকিরা আশ্বাস দিয়েছেন যে গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবেন।’
❤ Support Us