Advertisement
  • ক | বি | তা রোব-e-বর্ণ
  • জানুয়ারি ১৫, ২০২৩

গুচ্ছ কবিতা

রফিক উল ইসলাম
গুচ্ছ কবিতা

ঘু মে র  স ঙ্গে  লু কো চু রি

কাল রাতে মশারির ভেতর ঘুমিয়েছি। আহা মশারির ভেতর
ঘুম, যেন তরল সোনার ওপর ভাসমান শহর, পাইপলাইন বসাও
আর ইচ্ছেমতন টেনেটুনে নাও নির্ঘুম পৃথিবী!

অনেকদিন যাঁরা ঠিকঠাক ঘুমোননি, এটা তাঁদের জন্যে
সুখবর। আমার ঘুম অবশ্য অন্যরকম। কখনো ঘুম থাকে
মশারির ভেতর, আমি একা বাইরে বেরিয়ে পায়চারি করতে করতে
মলিন আকাশে ভাঙা চাঁদের রতিক্রিয়া দেখি। কখনো
আমি শুয়ে থাকি বিছানায়, ঘুম উঠে চলে যায় সমুদ্রপারে,
ভোর হওয়ার আগেই খুঁজে আনে আমার হারিয়ে যাওয়া
অসফল কাহিনিগুলি…

ঘুম আর আমি এইভাবে লুকোচুরি করে বেঁচে আছি
বহুকাল। মশারির ভেতর আমাদের এইসব সংযুক্তি আর
বিচ্ছিন্ন হওয়া, কোথাকার জল কোথায় গড়িয়ে যাওয়া,
ভাঙা চাঁদ জানে না, সমুদ্রপারও না !

 

তৃ ণ শা সি ত  রা ত্রি  পা র হ তে  হ তে

বৃষ্টি নিয়ে গেল প্রতারক হাতদুটি। মাঝেমধ্যে এরকম আসে। আর খুদকুঁড়ো যা পায় ঝোলাভর্তি করে। ফেরাবার উপায় থাকে না। তার উজাড় করা কণ্ঠস্বর আর মাধুকরীর স্বপ্নে চরাচর ঢেকে যায়।

তৃণশাসিত রাত্রি পার হতে হতে এরকম বৃষ্টি আসে। বৃষ্টি এলে ধুয়ে যায় কিছু না কিছু। যেমন এবার গেছে প্রতারক হাতদুটি। সঙ্গে নিয়ে গেছে লোলচর্ম কিছু পাণ্ডুলিপি, ভ্রূকুটি আর গুঞ্জন। অথচ এদেরকেই পরমার্থ জেনেছি এতদিন। আজ ভিক্ষুজল আমার প্রণয়গাথা লুণ্ঠন করে গেল।

পরিত্যক্ত কুঠারটির পাশে বেশ আছি। কোনো সংঘর্ষ নেই। শুধু ফাঁকা বারান্দায় মৃদু কথোপকথন। যদি কোনওদিন বৃষ্টি ফিরে আসে, যদি ফিরিয়ে দেয় কিছু…

ভি ন  গাঁ য়ে র  ক থা টি

কুয়াশায় জেগে থাকা চোখদুটি শরীর পাচ্ছ না? ভাসতে ভাসতে
আমার খাতায় নামো। নামো এবং নিজেদের কথা নিজেরাই
টুকে দাও। সেইসব সংশ্লেষ আর রিক্ততার কথা, বিনিময় আর
জলভারে নুয়ে পড়ার কথা…

কাগজের ঠোঁট মায়াপ্রবণ, কাগজের হাত নিরুচ্চার আঁকিবুঁকি থেকে
মাণিক্য খুঁটে নেয়। এ সবই তার সহজাত। আমি এখন
অন্ধ আছি, তোমরা লেখো মঞ্জরি। আমি এখন পালিয়ে যাব
দূরের গাঁয়ে, তোমরা লেখো স্তনভার। ধরণীতলে তোমাদের আসন
পাকা হয়ে যাক, আমি এতটুকু চাইব না।

ভিন গাঁয়ের কথাটি কেবল আমি লিখব
তারার আলো খসিয়ে।

♦♦♦♦    ♦♦♦♦


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!