- এই মুহূর্তে স | হ | জ | পা | ঠ
- মার্চ ১৭, ২০২৫
চন্দ্রযান ৫-এ কেন্দ্রের ছাড়পত্র, নতুন মিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরো

চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর, কেন্দ্রীয় সরকার চন্দ্রযান-৪ মিশনের অনুমোদন দিয়েছে, যা চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে ২০২৭ সালে উৎক্ষেপিত হবে। তার আগেই ইসরো চন্দ্রযান-৫-এর অনুমোদন পেল ইসরো। জাপানের সহযোগিতায় এটি পরিচালিত হবে। এই মিশনে ২৫০ কেজির উন্নত রোভার থাকবে, যা চাঁদের ভূতাত্ত্বিক ও খনিজ গবেষণা করবে।
চন্দ্রযান, ভারতের মহাকাশ অন্বেষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এবার চন্দ্রযান-৫-এর অনুমোদন পেল ইসরো, আরো উন্নত রোভার পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। ইসরো চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন জানিয়েছেন, ‘এই উন্নত রোভারটি চাঁদের পৃষ্ঠ ও উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা চালাবে। মাত্র তিন দিন আগে আমরা চন্দ্রযান-৫ মিশনের অনুমোদন পেয়েছি। আমরা এটি জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে সম্পন্ন করব।’ এই সহযোগিতাটি মিশনের বৈজ্ঞানিক দক্ষতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। নারায়ণন আরো জানান, চন্দ্রযান-৫ মিশনটি পূর্ববর্তী মিশনগুলির তুলনায় আরো উন্নত আর বড়ো আকারের হবে। চন্দ্রযান-৩-এর রোভার ‘প্রজ্ঞান’ মাত্র ২৫ কেজি ওজনের ছিল এবং এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে গবেষণা চালিয়েছিল। কিন্তু চন্দ্রযান-৫-এর রোভার ২৫০ কেজি ওজনের হবে, যা চাঁদের পৃষ্ঠের আরও বিস্তারিত এবং গভীর অধ্যয়ন সম্ভব করবে। এই রোভার উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশে সজ্জিত হবে, যা চাঁদের মাটি, শিলা এবং পরিবেশ সম্পর্কে নতুন তথ্য সংগ্রহ করবে। ইসরো প্রধান বলেন, ‘চন্দ্রযান-৫ আমাদের চন্দ্র গবেষণার পরবর্তী ধাপ। আমরা চাঁদ সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে চাই, এবং এই মিশন আমাদের সেই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ তিনি আরও জানান, এই মিশনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে এবং এটি ভারতের মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে।
চন্দ্রযান কর্মসূচির ধারাবাহিকতায়, ২০২৩ সালে চন্দ্রযান-৩ মিশনের ঐতিহাসিক সাফল্যের পর, ভারতকে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফট ল্যান্ডিং করা বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই অভিযানে ‘প্রজ্ঞান’ রোভারটি পাঠানো হয়েছিল, যার ওজন ছিল মাত্র ২৫ কেজি। এবার চন্দ্রযান-৫ মিশনে ২৫০ কেজি ওজনের শক্তিশালী রোভার পাঠানো হবে, যা চাঁদের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও খনিজ উপাদান বিশ্লেষণ করবে। এর আগে, চন্দ্রযান-১ চাঁদের রাসায়নিক, খনিজ ও আলো-ভূতাত্ত্বিক ম্যাপিং সফলভাবে করেছিল। তবে চন্দ্রযান-২ আংশিক ব্যর্থ হয়, যদিও এর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা থেকে গুরুত্বপূর্ণ চিত্র ও তথ্য পেয়ে চলেছে ইসরো। চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণ ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে হয়, যেখানে আগে কোনো দেশ মহাকাশযান নামাতে পারেনি। চন্দ্রযান-৪, যা চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যে পরিচালিত হবে, সেটির জন্য কেন্দ্র সরকার ২০২৪ সালে অনুমোদন দিয়েছে, সম্ভাব্য উৎক্ষেপণের সময় ২০২৭ ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে ২০২৫ সালের জন্য চন্দ্রযান-৫-এরও ছাড়পত্র দিয়ে দিল কেন্দ্র।
ইসরো প্রধান জানিয়েছেন, এই অভিযানে জাপানের সহযোগিতা নেওয়া হবে যাতে এই মিশনকে উন্নত ও লক্ষভেদী করে তোলা যায়। এই অভিযানের পাশাপাশি, ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। তা ছাড়াও ২০৪৫ সালের মধ্যে চাঁদে ভারতীয় নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে। চন্দ্রযান-৫ ও ৬ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে, যাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের মহাকাশ ক্ষেত্র অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করা যায়। চন্দ্রযান কর্মসূচির বাইরে, ভারত ‘গগনযান মিশন’-এ শুক্র গ্রহ অনুসন্ধানে রকেট পাঠাতে চলেছে। মহাকাশ গবেষণায় ক্রমাগত উন্নতির মাধ্যমে, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা, গ্লোবাল স্পেস ইকোনমির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
❤ Support Us