Advertisement
  • এই মুহূর্তে স | হ | জ | পা | ঠ
  • ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫

৩০ ঘন্টায় এখানে পূর্ণ হয় বছর । কী আছে ব্রক্ষ্মান্ডের এই মহাবিস্ময়ে ?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
৩০ ঘন্টায় এখানে পূর্ণ হয় বছর । কী আছে ব্রক্ষ্মান্ডের এই মহাবিস্ময়ে ?

ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির ৪ উন্নত টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে হতবাক করে দেওয়ার মতো মহাজাগতিক দৃশ্য।   ‘ডব্লিউএএসপি-১২১বি’ নামের বিশাল আকৃতির গ্রহ যা  ‘হট জুপিটার’ নামে পরিচিতি, তার বাতাসে লোহা, টাইটেনিয়ামের মতো রায়ায়নিক উপদানের খোঁজ মিলেছে। এই গ্রহ পৃথিবী থেকে  ৯০০ আলোকবর্ষ দূরে।  যেখানে বছর ঘোরে ৩০ ঘন্টায়।

অনন্ত মহাজগতের বিপুল রহস্যের খোঁজে মানুষের আগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা অন্তহীন।নিজেদের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর খোঁজে রয়েছে শত শত বছর ধরে, তেমনি খোঁজ চলছে ‘অন্য পৃথিবীর’ও। মহাকাশ গবেষণায় উন্নত প্রযুক্তি ও ধারাবাহিক পরিশ্রমে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের মহাসমুদ্র থেকে আমাদের সামনে হাজির করেন, রোমাঞ্চকর, কৌতূহল জাগানো সব দৃশ্য ও তথ্য। আমাদের সৌরজগত যে মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথে অবস্থিত, সেখানে ১০ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র থাকতে পারে।  নক্ষত্র প্রতি এক বা একাধিক এক্সোপ্ল্যানেট বা পৃথিবীসদৃশ গ্রহ থাকতে পারে। তেমনি এক গ্রহ ডব্লিউএএসপি-১২১বি’। যা  ‘হট জুপিটার’ নামে পরিচিতি, তার বাতাসে লোহা, টাইটেনিয়ামের মতো রায়ায়নিক উপদানের খোঁজ মিলেছে। এই গ্রহ তার নক্ষত্রকে এত ঘনিষ্ঠভাবে প্রদক্ষিণ করে যে এক বছর হতে সেখানে সময় লাগে পৃথিবীর সময়ের মাত্র ৩০ ঘন্টা। এই গ্রহ পৃথিবী থেকে  ৯০০ আলোকবর্ষ দূরে। ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির ৪ টি উন্নত টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে হতবাক করে দেওয়ার মতো মহাজাগতিক দৃশ্য।

বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার জার্নাল’ -এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে,  সাম্প্রতিক গবেষণায়, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন ডব্লিউএএসপি-১২১বি গ্রহের বাতাসে লোহা, টাইটেনিয়ামের মতো রায়ায়নিক উপদানের খোঁজ মিলেছে।  যা জোর্তিবিজ্ঞানের ভিনগ্রহের আবহাওয়ায়  রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কিত গবেষণায় অন্য এক দিগন্ত উন্মোচন করেছে।  ইউরোপের গবেষণা কেন্দ্র,  সাউদার্ন অবজারভেটরির গবেষক জুলিয়া ভিক্টোরিয়া সিডেল বলেছেন, ‘এই গ্রহের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর মতো নয়, বরং অদ্ভূত রকমের। সেখানে কীভাবে আবহাওয়া কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে আমাদের এটিকে কয়েকবছর ধরে নিবিড় অধ্যয়ন করতে হবে।’

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন,  এ গ্রহের একটি দিক সবসময় জ্বলছে, কারণ সে দিকটি সর্বদা তারার  মুখোমুখি থাকে, অন্যদিকটি ভয়ঙ্কর শীতল। বিজ্ঞানীরা বায়ুমণ্ডলের ৩-ডি কাঠামোর একটি মানচিত্র তৈরি করে প্রথমবারের জন্য পৃথক পৃথক স্তরে স্বতন্ত্র বায়ুমণ্ডল চিহ্নিত করেছেন। পরীক্ষায় আশ্চর্য জনক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে, এই গ্রহের বিষুবরেখার চারপাশে রাসায়নিক উপাদান ঘোরায়, বায়ুমণ্ডলের নিম্ন স্তরে একটি পৃথক প্রবাহ গ্যাসকে উত্তপ্ত দিক থেকে শীতল দিকে নিয়ে যায়। ‘এই ধরনের জলবায়ু আগে কোনো গ্রহে দেখা যায়নি।’ বলেছেন সিডেল, যিনি ল্যাগ্রাঞ্জ ল্যাবরেটরির একজন গবেষকও বটে।

পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহের বায়ুমণ্ডলে স্ট্রাটোস্ফিয়ার স্তরের অস্তিত্ব এই গ্রহেই প্রথম পাওয়া গেছিল। বিজ্ঞানীদের দলটি গ্রহের আবহাওয়ায় আয়রন, সোডিয়াম এবং হাইড্রোজেনের গতিবিধির উপর নজর রেখেছিলেন। ওই গ্রহের বায়ুমণ্ডলের গভীর, মধ্য এবং অগভীর স্তরগুলিতে বাতাসের সন্ধান করছিলেন তাঁরা। দেয়। পর্যবেক্ষণে ‘জেট স্ট্রিম’ -এর ঠিক নীচে টাইটানিয়ামের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ছাত্রী বিবিয়ানা প্রিনোথ বলেন, ‘ এ ঘটনাটা সত্যিই মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো বিষয়।  আমরা এত বিশাল দূরত্বে একটি গ্রহের রাসায়নিক উপাদান ও আবহাওয়ার ধারণা  করতে পেরেছি।’ বিগত দশকগুলোর গবেষণায় এরকম গ্রহের সন্ধান মিলতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল।

স্ট্রাটোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষণা করতে বিজ্ঞানীরা স্পেকট্রোস্কোপির সহায়তা নিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিভিন্ন আলোক তরঙ্গমালায় কিভাবে গ্রহগুলোর উজ্জ্বলতা পরিবর্তিত হয় তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।  তাপমাত্রা শীতল থাকলে জলীয়বাষ্প আলোকে গ্রহের গভীরে প্রবেশ করতে দেয় না। অন্যদিকে উচ্চ তাপমাত্রায় জলের অণুগুলো উত্তপ্ত হতে থাকে। এই ‘ডব্লিউএএসপি-১২১বি’ গ্রহটি শক্তি হারানোর সময় বায়ুমণ্ডলে আর কোনো বিকিরণ ঘটায় না। কিন্তু এটা থেকে চুম্বকীয় আলোক বিকিরণ হয়, যা খালি চোখে মানুষ দেখতে পারে না।   জার্নাল নেচারের প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক ইভানস আরো বলেছেন, যখন আমরা হাবল টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহটির সন্ধান পাই,  তখন উত্তপ্ত জলবায়ু কণার উপস্থিতি ধরা পড়েছিল। এটিই সংকেত দেয় যে গ্রহটিতে স্ট্রাটোস্ফিয়ারের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। পৃথিবীর থেকে বহু দূরের এ গ্রহটি নিজের কক্ষপথে প্রতি ১.৩ দিন পরই নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে।  দুটি বস্তু তখন এতো কাছাকাছি আসে যে মধ্যাকর্ষণ শক্তি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ২ হাজার ৫’শ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। যে পরিমাণ তাপে লোহা গলে গিয়ে বাতাসে মিশতে পারে।


  • Tags:
❤ Support Us
গুম গ | ল্প রোব-e-বর্ণ
ধারাবাহিক: একদিন প্রতিদিন । পর্ব ৫ পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
পথ ভুবনের দিনলিপি । পর্ব এক ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
error: Content is protected !!