- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ১, ২০২৪
ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইজরায়েলি হানায় নিহত শতাধিক, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
বৃহস্পতিবার গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইজরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১০০ জনেরও বেশি সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে সাতশ জন। এমনই দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর এই গুলি চালানোর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গাজার দক্ষিণে আল–রাশিদ স্ট্রিটে ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন হাজার হাজার ক্ষুধার্ত সাধারণ মানুষ। এদের মধ্যে শিশু ও মহিলারাও ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ত্রাণ নিয়ে ট্রাক আসা মাত্রই সকলে ট্রাকের দিকে ছুটে যান। সেই সময় বিমান ও ট্যাঙ্ক থেকে ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর ত্রাণ নিয়ে আসা ট্রাকগুলিতে করে নিহত ও আহতদের কামাল আদওয়ান ও আল–শিফা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজার হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সঙ্কট। ফলে প্রায় হাজার খানেক মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সমস্যায় পড়ে হাসপাতাল দুটি।
গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ইজরায়েলি হানায় ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। এত বেশি সংখ্যক মানুষ আহত হওয়ায় তাঁদের শুশ্রুষা করতে সমস্যা হচ্ছে। যদিও ইজরায়েল হামলা চালানোর ঘটনা অস্বীকার করেছে। ইজরায়েলের দাবি, ত্রান সংগ্রহ করতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়িতে পদপিস্ট হয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষের ওপর ইজরায়েলি সেনার গুলি চালানোর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জাতিসঙ্ঘ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইতালি, কলম্বিয়া, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ ইজরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছে। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনীয় গুতেরেস ইজরায়েলের নিন্দা করে বলেছেন, ‘গাজার অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জাতিসঙ্ঘ ত্রাণ সরবরাহ করতে পারছে না। সেখানকার মানুষসহ পুরো গাজার অসহায় নাগরিকদের জন্য জরুরি সাহায্য প্রয়োজন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। এই ঘটনা হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা আরও জটিল হল।’ ইজরায়েলি বাহিনীর হামলাকে ‘ঠান্ডা মাথার হত্যাযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামাস ইজরায়েলের এই হামলাকে ‘জঘন্য হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধাপরাধের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘জঘন্য’ কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও হামলার নিন্দা জানিয়েছে। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বলেছেন, ‘গাজায় যা ঘটেছে, মেনে নেওয়া যায় না।’ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি গাজার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ হত্যাকাণ্ডের কঠোর নিন্দা করে বলেছেন, ‘ইজরায়েলি সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।’ তুরস্ক জানিয়েছে, এই হত্যাকান্ডের মধ্যে দিয়ে ইজরায়েল আর একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করল।
❤ Support Us