Advertisement
  • ক | বি | তা রোব-e-বর্ণ
  • মার্চ ৩, ২০২৪

কবিতার মনোবাসীর খোঁজে। পর্ব ১২

সোমা দত্ত
কবিতার মনোবাসীর খোঁজে। পর্ব ১২

এইতো সামান্য কথা

কবিতায়, ব্যক্তিগত গদ্যে, কখনো কখনো উপন্যাসে, দিনলিপিতে, চিত্রপঞ্জিতেও কবি, লেখক ও চিত্রকরকে খুঁজে পেয়ে যাই আমরা; তাঁদের বসবাস আর সময়ের ঠিকানা ধরা পড়ে যায় আমাদের তথ্য আর তল্লাশিতে। এ এক নৈর্ব্যক্তিক অনুসন্ধান, বিশেষত নগরবাসী মননের, যেখানে যে-কোনো মাধ্যমের শিল্পসত্তা নিঃসময়ের, নির্বিশেষের প্রতিনিধিত্ব দাবি করে এবং তাঁর দৃশ্যগত সৌন্দর্য কিংবা বর্নিত অক্ষর আর স্পর্শাতীত অনুভূতি নিজের রচিত পরিসর দিয়ে, আবহ দিয়ে, তার চর্চিত প্রেক্ষাপট সাজিয়ে বুঝিয়ে দেয় যে, সে ওই শিল্পিত স্বভাব কোন্ সময়ে, কোনখাদে, কোন অববাহিকায় বইছে, ছুটবে কোন্ দিকে; এ এক অনিঃশেষ পরিক্রমার চিহ্ন, বলতে ভালো লাগছে, সোমা দত্ত এরকমই একজন কবি, নিঃসঙ্গ নয় তাঁর প্রেম, তাঁর ব্যক্তিত্বের সংলাপ; সময়ে, সময়ের চারপাশে কিংবা দূরবর্তী অবচেতনে তাঁর অবগাহন ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে ব্যক্তিত্বকে ছুঁয়ে থাকে, সব অর্থেই ভবিষ্যতে সোমার নাগরিকতাবোধ বিস্তৃত করবে কবিতার পাঠককে, ভারী কন্ঠের কৃতদারদের চোখ তাঁকে কীভাবে দেখবে, কোন ভাষায় তাঁর কবিতাযাপনকে সম্বোধন করবে, এ আমাদের ভাবনা কিংবা উদ্বেগের বিষয় হবে না সম্ভবত, আমরা স্পষ্ট উচ্চারণে, মুষ্ঠিবদ্ধ প্রত্যয় নিয়ে বলার চেষ্টা করছি, যে আগুন একান্তে, গোপনে জ্বলছে, নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের চেয়েও রহস্যময়, তীক্ষ্ণ হয়ে উঠুক তা, নষ্ট করুক পাঠকের নৈরাজ্যে, সংশয় আর অন্ধকারকে। স্বগত সংযতভাষী হে কবি!

বাহার উদ্দিন। ৩/০৩/২০২৪

চিত্রকর্ম : দেব সরকার

 

পিঠ ফিরিয়ে লিখতে জানিনা ‘

♦   কবিতার মুহূর্তে কি খুব অস্থির হয়ে ওঠেন ?

অস্থিরতা আর মুহূর্ত এই দুটি অনুঘটক আসলে একটি সাময়িক উত্তেজনার মতো। কবিতার দীর্ঘজীবনে, ওই আপেক্ষিক উত্তেজক মুহূর্ত এবং অস্থিরতা অধঃক্ষেপের মতো পড়ে থাকে। কবিতা অস্থিরতা শুষে নেয়, তাকে ধীর হতে শেখায়। সে অস্থির মুহূর্তের এক রিলিফ।

♦   ভেবেচিন্তে লেখেন, না স্বতঃস্ফূর্তভাবে ?

স্বতঃস্ফূর্তভাবেই। কিন্তু পরে সেই স্বতঃস্ফূর্ত পঙক্তি মনে ফিরে গিয়ে তুর্কী নাচন নাচায়। তখন ভাবি।

♦   কখনো কি মনে হয়, কেউ আপনাকে ভেতর থেকে লিখিয়ে নেয়, এমন কোনো মনোবাসী ?

জীবন বাস্তবমুখী। বাস্তবের দিকে পিঠ ফিরিয়ে লিখতে জানি না। মন কথা বলে মাত্র, লিখিয়ে নিতে পারে না। তবে মনের তাগিদই কবিতার রূপকার। এটুকুই…

♦   একটানা লেখেন, না থেকে থেকে লিখতে হয় ?

যখন লিখি একটানা লিখতে পারলেই কথোপকথন সম্পূর্ণ হয়। রাত না হলে, লিখতে পারিনা। কখনো মনে হয়, পুরো রাত জেগে থাকে যদি কবিতায়, ক্ষতি কী!

♦   লেখার আগে কি মনে মনে পংক্তি আওড়ান ?

হ্যাঁ। হঠাৎ একটা লাইন মনে এসে গেল। সেটা আওড়াতে আওড়াতেই পুরো পথ রুবী রায়…

♦   অন্তমিল, মধ্যমিল কি কবিতায় ফেরাতে চান ?

না। কবিতার চলন মানুষের গড়নে হোক। এটুকু স্বাচ্ছন্দ্য না হয় থাকল। মিল যদি আসে আসুক, না এলে নাই বা এল। কোনো বিশেষ রীতির প্রতি কোনো দুর্বলতা তো দুর্বাশার অভিশাপকে ভ্যালিডিটি দেয়।

♦   ছন্দের ওলট পালট বা ভাঙচুর কতটা পছন্দ ?

দীর্ঘ একঘেয়েমির সভ্যতা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাপোক্যালিপ্স চাই। ভাঙচুর এক নতুন গঠনপ্রণালীকে নিশ্চিত করে। তাকে পছন্দ করি।

চিত্রকর্ম : মেহতাব মোল্লা

তিনটি বিক্ষিপ্ত আলোকচিত্র

       তীক্ষ্ণ কণার ঝিলিক
       বসন্তের ধারালো বৃষ্টিপাত
       মেঘ থেকে জল পর্যন্ত পৌঁছনোর
       দীর্ঘ পথশ্রমে, ছড়িয়ে পড়েছ
       শতটুকরোতে
        কমলালেবুর খোসার মতো তোমার পোশাক
        দৃশ্য থেকে চুঁইয়ে
               গোপনে জ্বেলেছ আগুন
                সে আগুন তবে
                            নষ্ট করুক
                                    তোমাকে…
               এই তো সামান্য কথা
               শরীরে মেঘ নেই
পোশাকের দুর্ভেদ্য লাঞ্ছনা অশ্লীল মনে হয়–
                উত্তরে হু হু বাতাস–
                রাত্রি নামছে
                 চলো পরস্পরের রক্ষাকবচ খুলে রাখি
একদিন তোমার আঙুলের স্পর্শ অনুকরণ করব
                      ছুঁয়ে ছেনে
                      চেয়ে নেব…
        আমি এখনো বিশ্বাস করি, চাইলে–
              দস্যুকেও ভালোবাসা যায়
                   না চাইলে মনে মনে
                        হিংস্রতা চলে…
                     সেইসব অনুবাদ
                                    অকথ্য…
                                         অভিনয়।
♦—♦—♦♦—♦—♦♦—♦—♦

  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!