- ক | বি | তা রোব-e-বর্ণ
- ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
গুচ্ছ কবিতা

চিত্র: নীলপবন বরুয়া
চিন্তামণি
তুমিই শুরু। কল্পতরু । চিরকাঙাল। একা
তোমায় বিনে। ভুবনমাঝে। ভুবন হলো ফাঁকা
স্মৃতির মাঝে চিন্তামণি । জন্মকানা জাগে
আঁধার মানিক কুড়িয়ে পেল। রাতের পুরোভাগে
জন্মান্ধের দুঃখ কিসের ! চোখ যদি না খোলে
অদৃশ্য ফুল। ফুটল কোথায়! পাথর কোথায় গলেে !
মনে পড়ে না। জন্ম কানা। চোখের আলোয় দেখে
একের অধিক। মৃত্যুমাঝে ।একটি জীবন আঁকে
দেখেও তাকে যায় না দেখা। দুঃখ কেমন হয় !
কেউ জানে না। জানলে কি আর ! হাওয়ারা ফিরে যায় !
যেখানে কেউ যায় নি ! অলীক। সেই না ফেরার দেশে
পাথর। যার গোপন স্রোতে ! চিন্তামণি ভাসে!
♠♠♠ ♠♠♠
নদী ও নরকপথে
সূক্ষ্ম তুলিটান। বাসোর হাইকু
ভুসুকু, লুইপাদ। বাতাসে সংকেত
প্রিয় শহর ছেড়ে ওভিড চললেন
স্বর্গরাজ্যে কবির ঠাঁই নেই
হোমার । পথে পথে অন্ধ ভেসে যান
কিঠারা বেজে চলে কত যে যুগ ধরে
তবু তো হেলেনিয় প্রেমে ও অপ্রেমে
গোড়ালি ফুঁড়ে তীর হিসেব পাল্টায়
দান্তে। পথ তিনি কবেই ভুলেছেন
বিয়াত্রিচে মায়া। নরকই সত্য
এ কথা একবার যে কবি জেনে যায়
তাঁকে কি ভার্জিল নরক দেখাবেন !
স্বপ্ন আলেয়ায় এমন যদি হয়
ওভিড হাঁক দেন খামোশ হোরেসিও
সুদূর সিসিলিতে জন্ম নেবে তাই
সনেট ছিল নীল গভীর অচেতনে
সরস্বতী পারে কাল্পনিক রেখা
মৃত সে নদীটিও সুদূরে মিশে গেছে
মানবসভ্যতা এখানে বাঁক নেয়
মৃত্যু মাখা পথে রেখারা ডুবে যায়
ডেকান তল্লাটে জটিল গিরিখাতে
প্রাচীন স্রোতধারা হারিয়ে ফেলে পথ

স্মৃতির বালিস
সিঁড়ি ঈষৎ ছন্দকুশল। মাত্রা মেপে ওঠে নামে। মেঝেটি ঠিক ততটা নয়। একটু কানা। একটু ঘোরেল। মাঝে মধ্যে পা পিছলে যায়।
জানলাটি বেশ খামখেয়ালি। বিপজ্জনক। যখন তখন। প্রেম জাগে তার। এক ফালি মেঘ। টুকরো আকাশ । হলুদ ঘুড়ি। রাত সমুদ্র। একটা কিছু হলেই হলো।
বারান্দা ঠিক আগের মতোই । ঘুম ছাড়া তার। অন্য কিছুই। ভালো লাগে না। ভালো লাগে না। সকাল বিকেল। ঘুমের মধ্যে মাদুর পেতে। একটি সুদূর স্মৃতির বালিস আঁকড়ে থাকে। তুলো ওড়ায়। অসহ্য এক ঘোরের মধ্যে। ডুবতে ডুবতে। আবার ভাসে।
দূরে নীল সমুদ্র ডাকে। ডাকে পাহাড়। ঢেউ ক্রমশ। পারের দিকে যতই এগোয়। ধাপগুলো সব। যতই নামে নীচের দিকে । ছন্দ ভাঙে। ভাঙতে ভাঙতে। আছড়ে পড়ে । শক্ত পাথর কিম্বা নিখিল বালির বুকে। উপত্যকায়। ছন্দ ভাঙে।
♠♠♠ ♠♠♠
চলি
আবার আগের মতোই আমি ছেড়ে যাচ্ছি এক পুরনো শহর। সবাই ঘুমিয়ে আছে। স্বল্পপরিচিত হোটেল , অজানা গলি, চেনা বারান্দা। তাহলে চলি আমি বললাম।
কেউ উত্তর দেয় না। ওই যজ্ঞডুমুর, ফাঁকা রক, পোড়ো দালান , খোলা ছাদের ওপর নুয়ে পড়া গন্ধলেবুগাছ। ওরা সবাই গভীর ঘুমে ডুবে আছে। ডুবে আছে জলের চেয়েও আরামদায়ক। কোনও নরম অসুখে। কি সুখ ওদের।
চলি, আমি বললাম। সাড়া নেই। আমারও দুঃখ নেই কোনও। শহর ঘুমিয়ে থাকো। হে অজানা গলিরা। ঘুমিয়ে থাকো তোমরাও।
♦♦♦♦♦—♦♦♦♦♦
❤ Support Us