- এই মুহূর্তে
- জুন ২৭, ২০২২
১২ জুলাই ডেপুটি স্পিকারের নোটিসের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট । আপাতত স্বস্তি নিয়েও হালে জল নেই একনাথের ।

প্রবল জনসমর্থন থাকা সত্বেও উদ্ধব ঠাকরের ‘মহা বিকাশ অঘাড়ি (এমভিএ) সরকার থমকে গেল । সমর্থন তুলে নিলেন ৩৮ বিধায়ক । উদ্ভব আগেই বলেছেন, তিনি গদি ছাড়তে প্রস্তুত। কিন্তু তাঁর মুখের কথা আর কাজের মধ্যে বিস্তর ফারাক । মারাঠি ভাবাবেগ তাঁর পেছনে। সরকার ভেঙে আবার নির্বাচণ হলে একনাথ গোষ্ঠি ও বিজেপি পেরে উঠবে না। বালাসাহেব ঠাকরের স্মূতি জেগে উঠবে। একনাথ সিন্ডে কার্যত একা হয়ে পড়বেন। আজ যাঁরা তাঁকে প্ররোচিত করছে তারাই সুযোগ বুঝে সরে পড়বে। শিবসেনার ঐক্যের প্রতীক অবশ্যই বালা সাহেব। বিধায়কদের বাড়ি বাড়িতে ছুটছে উদ্ভব গূহিনীর ফোন। ফোনের ব্যাকালাপ সংশয়াচ্ছন্ন করে তুলছে দলছুট বিধায়কদের পরিবারকে। গুয়াহাটি থেকে মহারাষ্ট্রে নিজের সমর্থকদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন একনাথ । গুয়াহাটির হোটেল থেকেই বিবূতিতে জানিয়েছেন, ওখানে আরও সপ্তাখানেক কাটাবেন। দাবার গুটি এদিক-ওদিক ঘুরছে হোটেলের ভেতরে, শেষ চালে বাজিমাত কে করবে বলা মুশকিল।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন বেচারা একনাথ। এছাড়া তাঁর দ্বিতীয় রাস্তা নেই। আবেদনে বলা হয়েছে, জোট সরকার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। ৩৮ বিধায়ক মহাবিকাশ অঘাড়ি সরকারের সঙ্গে নেই । বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডে গোষ্ঠীর আবেদনে তিনটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে—এক, অজয় চৌধুরীকে বিধানসভার দলনেতা মনোনিত করা আইনসঙ্গত নয় । দুই, বিদ্রোহীদের বরখাস্ত করার অধিকার অধিকার ডেপুটি স্পিকারের থাকতে পারে না । তিন, বিধায়কদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে যে নোটিশ জারি হয়েছে, সেটিও আইন বিরুদ্ধ ।
আজ সুপ্রিম কোর্ট তার শুনানিতে বলেছে ১২ জুলাই ডেপুটি স্পিকারের নোটিসের জবাব দেওয়া হবে। মহারাষ্ট্রের সরকার আর বিরোধীদের প্রবল টানাপোড়নের মাঝখানে আজ দুপুরে বৈঠক ডাকেন একনাথ । এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে খানিকটা প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেয়েছেন । দুপুরে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন একনাথ । কী এমন কথা, যা কেউ জানে না । মুখ খোলেন নি রাজ কিংবা একনাথ । কুর্সির উত্তরাধিকার নিয়ে রাজ-উদ্ধবের মনোমানিল্য দীর্ঘদিনের । রাজ বালা সাহেবের ফাইপো। প্রবল ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতেন একসময় । কট্টর হিন্দুত্ববাদী আর ক্ষমতামত্ত বলে সুপরিচিত । একনাথ, রাজ সমর্থন পেলে শিবসেনার হিন্দুত্ববাদী অংশ কী, নতুন পথে বিজেপির সহযোগী হতে আগ্রহী হয়ে উঠবে । বলা মুশকিল, পরিসস্থিতি ধোঁয়াটে । প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস আসনের মোহ কি ছাড়তে পারবেন? দাবার গুটি ঘুরছে । বিজেপির খেলারামরা সরকার ভেঙে সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছে ।তাঁদের স্বপ্নে মারাঠি জাতি সত্ত্বার সায় নেই হয়তো কিন্তু পরিস্থিতির চাপে রাজনীতির বাধ্যবাধকতা তাঁদের সংশয় বাড়িয়ে তুলছে ।
শারদ পাওয়ার চুপচাপ বসে নেই। কংগ্রেস একইভাবে কলকাঠি নাড়ছে। সংখ্যার দিক থেকে তাঁদের শক্তি নেহাত নগন্য নয় । অন্যান্য ছোটো ছোটো দলও নিজেদের নিশান উঁচিয়ে ধরছে । মহা বিকাশ অঘাড়ি সরকারের অকাল মূত্যু কায়েমি স্বর্থেই তারা মানবে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বালা সাহেব ঠাকরে কে, জাতীয় ভাবাবেগের প্রতীক সাজিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। তবু একথা নিশ্চিত যে, মহা আঘাড়ি আয়ুষ্মান নয়। বার বার বিদ্রোহ উঁকি দেবে । সমুদ্রে তীরে লেগেই থাকবে ক্ষোভ-বিক্ষোভের আগুন প্রবণতা।
❤ Support Us