- খাস-কলম প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ১০, ২০২২
জল্পনা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী নাজমা ! হাওয়ায় ভাসছে দ্রৌপদী ও তামিলসাই-এর নামও ।

১৮ জুলাই ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচণ । শাসক দল বিজেপি বিরোধী কংগ্রেস সহ সবাই তৎপর হয়ে উঠছে। প্রার্থী কে ? এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছে না। বিজেপিও নীরব। জোর জল্পনা, হজরত মহম্মদের বিরুদ্ধে শাসক দলের দুই নেতানেত্রীর কুৎসার পর বিশ্ব জুড়ে, বিশেষ করে আরব দুনিয়ায় যে আলোড়ন চলছে, সেটিকে প্রশমিত করতে বিজেপি ঘনিষ্ঠ নাজমা হেপতুল্লার-কে রাষ্ট্রপতি পদপার্থী করা হতে পারে। পারিবারিক ঘরানায় নাজমা সমৃদ্ধ । মৌলানা আবুল কালাম আজাদের দূর সম্পর্কের নাতনি। সংসদের কাজ কর্মের সঙ্গে সুপরিচিত। তাঁকে রাষ্ট্রপতি করা হলে মুসলিমদের ক্ষোভ থমকে যাবার সম্ভাবনা বিস্তর । বিজেপিও বলতে পারবে, আমাদের ভাবনা আর আদর্শে জাতপাত বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের জায়গা নেই। বৈষম্যহীন ভারত গড়ে তুলতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সম্প্রতি ঘরে-বাইরে নিন্দিত নুপূর শর্মা, নবীন জিন্দালের ইসলামবিরোধী মন্তব্যের পর বিবৃত শাসক দল, তাদের বিবৃতিতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার নীতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দল থেকে দুজনকে বহিষ্কারও করেছে। নাজমাকে রাষ্ট্রপতি পদে বসালে, বিজেপি বিশ্বের দরবারে বলতে পারবে, এই দেখ সব জাতি, সব সম্প্রদায়কে আমরা সমান গুরুত্ব দিই।
রাষ্ট্রপতি ভবন।
১৯৬৪ সালে হজরতের চুল অপহরণকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তখন ডক্টর জাকির হোসেনকে উপরাষ্ট্রপতির পদে বসিয়ে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করেছিল কংগ্রেস। এবার কি বিজেপিও ওই পথে হাঁটবে? ওয়াকিবহাল মহলের জল্পনা আর প্রশ্ন এখানেই শেষ নয় । ওড়িশার জনজাতি সমাজের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মু কিংবা দাক্ষিণাত্যের তামিলসাই সৌন্দরাজনের নামও হাওয়ায় ভাসছে।
ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদীর নাম উঠে আসছিল। কার্যত দেখা গেল, রামনাথ কোবিন্দকেই প্রার্থী করেছে শাসকদল। একার শক্তিতে বিজেপি তার প্রার্থীকে জয়ী করতে পারবে না। ভোটের ঘাটতি ১.২ শতাংশ । সে কারণে বিজেডি, অন্ধপ্রদেশের ওয়াই এস আর এবং তেলেঙ্গানার শাসক দলের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় নেতূত্ব ভাবছে, যে সব রাজ্য থেকে এ পর্যন্ত কেউ রাষ্ট্রপতি হননি, সেসব রাজ্যের অনগ্রসর সমাজের প্রতিনিধিকে প্রার্থী করা যায় কি না, ভেবে দেখা দরকার । বিজেপির মূল ভোটব্যাঙ্ক উচ্চবর্ণের বণিক সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিনিধিও প্রার্থী হতে পারেন। উত্তরপ্রদেশের ওবিসি নেতা ফাগু চৌহান, তামিলনাড়ুর এল গনেষণ, ছত্রিশগড়ের রাজ্যপাল অনুসুয়া উইকে প্রার্থী পদের দৌঁড়ে জড়িয়ে রাখা হয়েছে । তবে শেষ কথা বলবে মোদি-অমিতের সিদ্ধান্ত। তাঁরা যাকে চাইবেন, তিনিই হবেন রাইসিনা হিলের সর্বোচ্চ কুর্সির অধিকারী।
সোনিয়া গান্ধী শরদ পাওয়ার
বিরোধী দলগুলোও চুপচাপ বসে নেই। বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনি, এটাই এ পর্যন্ত কংগ্রেসের অঘোষিত অভিপ্রায়। ছন্নছাড়া বিরোধীরা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বূহত্তর বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার নীতিকে সামনে রেখে সর্বসম্মত প্রার্থী মনোনয়নের প্রয়াস শুরু করেছে। মমতার নীতি যেমন স্পষ্ট, তেমনি সুদূঢ়—এসো মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ। ময়দানে নেমেছেন শারদ পাওয়ার। কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধীও হাত গুটিয়ে বসে নেই । এভাবেই প্রার্থী মনোনয়নের অনুষ্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিন কয়েকের মধ্যে উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে উঠবে।
❤ Support Us