- পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
- ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
এই তাঁর প্রতিভার সত্য

আলোকচিত্র: সন্দীপ কুমার
নিজের বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের সত্য, কখনো সরাসরি, কখনো পরোক্ষ ইঙ্গিতে, প্রায় আমৃত্যু আমাদের জানিয়ে গেছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। তাঁর নির্মাণে, তাঁর সৃষ্টিতে এ সত্যের উদযাপন এতটাই প্রগাঢ় যে, সমসাময়িক গুণমুগ্ধদের অনেকেই তাঁর চিন্তা বলয়ের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি, হয়তো বা তাঁরা তা চাইতেন না। সমসাময়িক বন্ধুমহল আর প্রজন্মের একান্ত আশ্রয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কলকাতা শঙ্খ ঘোষহীন, একথা ভাবতে কষ্ট হয়। ব্যক্তিগত সঙ্কট হোক কিংবা সামাজিক সমস্যা, যে কোনো বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে নিঃসংশয়ে আলাপ করা যেত। কেউ বিমুখ বা আশাহত হয়েছেন, এরকম দৃষ্টান্ত বিরল। মতান্তরকে কখনো মনান্তরের চেহারা দিতে চাইতেন না। আচরণে, কথাবার্তায় সবসময় গুরুত্ব পেত স্বাস্থ্যময় মতভেদ। স্নেহময়তা আর সবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ছিল তাঁর যাপনের বিশেষ আধেয় । কবিতায়, গদ্যে, নিবিড় আলোচনায় নিজের বিশ্বাসের শক্তিকে শঙ্খ ঘোষ যেভাবে বড়ো করে দেখেছেন, দেখতে শিখিয়েছেন, চিন্তাভাবনার পরিসরে সম্ভবত তা আপসহীন মাইলফলক হয়ে থাকবে।
প্রাজ্ঞ কবির, এই পরম আত্মীয়ের অনুপস্থিতি বড়ো বেশি বুকে বাজে। কবিকে, রবিবার সন্ধ্যা ৬টায়, তাঁর ৯১ পূর্তিতে নিউটাউনের রবীন্দ্রতীর্থে সজল উচ্চারণে স্মরণ করলেন তাঁর বন্ধু আর অনুরাগীরা। গানে, কবিতাপাঠে, আলোচনার ভেতরে ও বাইরে। শঙ্খ ঘোষের কবিতা পড়লেন, তাঁর অনুজ, গুণমুগ্ধ সৌরীণ ভট্টাচার্য, অমিয় দেব, রত্না মিত্র, কল্যাণ রায় আর অপর্ণা সেন। কবির প্রিয় গায়িকা লাইসা আহমেদ লিসা প্রায় একঘণ্টা জুড়ে শোনালেন রবীন্দ্র সঙ্গীত। লাইসার অসাধারণ আত্মনিবেদন জানিয়ে দিল তাঁর রবীন্দ্রময়তা আর শঙ্খময়তা একাকার হয়ে আছে।
এভাবে বিশেষ দিনে, রীতি বিরুদ্ধ অনুষ্ঠানসূচি সাজিয়ে, শঙ্খ ঘোষের অনুপস্থিতির বেদনা ৫ ফেব্রুয়ারি যেরকম অনুভব করা হল, ঠিক সেভাবেই আশা করি, আমাদের ভাবনা-চিন্তাকে ছুঁয়ে থাকবে তাঁর অদৃশ্য উপস্থিতির প্রবাহ। এ প্রবাহকে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য দরকার বৃহত্তর সমাজের সমবেত প্রচেষ্টা।
❤ Support Us