- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
বিশ্বভারতী হেরিটেজ তকমা হারাতে পারে, চিন্তায় এক সপ্তাহে ২ বার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাস্তা ফেরত চাইলেন উপাচার্য

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক সপ্তাহে দু’বার চিঠি লিখলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতীর মধ্যেকার তিন কিলোমিটার রাস্তা ফেরৎ চেয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে এই চিঠি দিয়েছেন উপাচার্য। ওই চিঠিতে তিনি বিশ্বভারতীর সদ্য ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজ তকমা পাওয়া এবং সেই তকমা ধরে রাখা নিয়ে একরাশ চিন্তা উগরে দিয়েছেন। উপাচার্যের চিঠির মূল বিষয় হল, বিশ্বভারতীর ৩ কিলোমিটার রাস্তা রাজ্য রাস্তা ফিরিয়ে না দিলে সেই রাস্তা দিয়ে সারাক্ষণ হর্ণ বাজিয়ে গাড়ি চললে বিশ্বভারতীর হেরিটেজ তকমা বিশ্বভারতী হারাতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়ে ওই রাস্তা বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গেছে, চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে উপাচার্য লিখেছেন, গাড়ি শব্দে বিশ্বভারতীর শান্তিভঙ্গ হচ্ছে। ভারী গাড়ি চলাচল করলে কাঁপছে উপাসনাগৃহ। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ইউনেস্কো বিশ্বভারতীর হেরিটেজ তকমা কেড়ে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির দায় বর্তাবে উপাচার্য এবং বিশ্বভারতীর সহকর্মীদের উপরে। তাই আশ্রমের হেরিটেজ ভবন রক্ষার্থে এবং আনন্দ পাঠশালার শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতার দাবি জানিয়েছেন উপাচার্য।
এই বিষয়ে আশ্রমিকদের নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে উপাচার্য লিখেছেন, “এখানকার কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই আপনাকে রাস্তা না ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের তকমা ধরে রাখতে অনুগ্রহ করে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দিন।”
সম্প্রতি শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব হেরিটেজের তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। সেই তকমা ধরে রাখতে চায় বিশ্বভারতী। এর আগে গত সপ্তাহেই রাস্তা ফেরৎ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন উপাচার্য।
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহের সামনে থেকে কালিসায়র পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা রাজ্য সরকারের পূর্ত বিভাগের অধীনে ছিল। ২০১৭ সালে তৎকালীন উপাচার্য স্বপন দত্তের আবেদনের ভিত্তিতে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই রাস্তাটি প্রায় সময় আশ্রমিক ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে দিতেন না। এই মর্মে আশ্রমিকেরা চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই মত ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে এসে রাস্তাটি বিশ্বভারতীর থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে আশ্রমিকদের কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এখানকার শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখার ক্ষেত্রে যতটা না নজর তার চাইতে বিশ্বভারতীর জমি কে নিয়েছে, কার কাছ থেকে বিশ্বভারতীর জমি ফিরিয়ে নেওয়া উচিত সেসব নিয়ে বেশি ভাবিত। এর আগে অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলা করে এবার তিনি রাজ্যের কাছ থেকে ৩ কিলোমিটার রাস্তা ফেরত চাইছেন। উপাচার্যের এই সব পদক্ষেপ দিনদিন হাস্যকর জায়গায় পৌচচ্ছে।
❤ Support Us