Advertisement
  • খাস-কলম দে । শ
  • জানুয়ারি ৫, ২০২৪

তরুণরাই এই ভোটের নিয়ামক শক্তি

শাহরিয়ার কবির
তরুণরাই এই ভোটের নিয়ামক শক্তি

দুদিন পরেই বাংলাদেশের সংসদীয় ভোট। ভোটের হিংসা রুখতে ঐক্যবদ্ধ প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী আর ওপার বাংলার জাতিসত্তা। ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছে বিএনপি ও জামাতের যৌথ শক্তি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নানা রকম কৌশলে ভোট বানচাল করার চেষ্টা করবে তারা। বাংলাদেশের মানুষ কোন দলকে ভোট দেবে, কাকে গ্রহন করবে, এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এবিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ অবশ্যই অনাকাঙ্খিত।

বাংলাদেশ নিজের সঙ্কল্প আর অঙ্গীকার রক্ষায় অনড়। তার অভিযাত্রায় বহুত্বের বিন্যাস সুগভীর। এক. সব ধর্মাবলম্বীর সমান অধিকার। দুই. সমূহের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন। তিন. উন্নততর গণতন্ত্র। চার. জাতীয়তাবাদের মানবিক সাধনা আর বিশ্বায়িত বিকাশ। এসব ভাবাদর্শে প্রাণিত, উদ্বুদ্ধ ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিতে চায় নব প্রজন্ম।এই প্রবন্ধের লেখক বাংলাদেশের উত্থান ও দ্বাদশ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বলেছেন— তরুণরাই এই ভোটের নিয়ামক শক্তি

বাংলাদেশ সহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জনসাধারণ নির্বাচনকে এক ধরনের উৎসবের মতো উদযাপন করে । বিপুল ক্ষমতা ও বিত্তের অধিকারী সমাজের উঁচুতলার কাছে নিচুতলার মানুষ হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন । বিত্ত-ক্ষমতা-মর্যাদার গণ্ডি অতিক্রম করে উঁচুতলার মানুষের কয়েক দিনের জন্য হলেও নিচুতলার মানুষকে আলিঙ্গন করে ভোট ভিক্ষা করেন । পশ্চিমি ধাঁচের গণতন্ত্রের অনুসারী ও অভিলাষী প্রায় সব দেশের চিত্র একই রকম ।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ-পীড়ন থেকে মুক্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতি নিরস্ত্র মানুষের প্রবল আকাঙ্খার কারণে ১৯৭০-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছিল । মুষ্ঠিমেয় সশস্ত্র বাহিনীর কদর্য কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নিরস্ত্র মানুষের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানের কলোনিকালের ২৩ বছর শেখ মুজিব এবং তার দলকে সংগ্রাম করতে হয়েছে । মধ্যপন্থী আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বামপন্থী ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টিও পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ লড়াই করেছে । ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওই চেতনাই ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধানে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি— ১. গণতন্ত্র, ২. সমাজতন্ত্র, ৩. ধর্মনিরপেক্ষতা ও ৪. বাঙালি জাতীয়তাবাদ । তখনই সংবিধানে, সরাসরি ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় ।

সপরিবারে মুজিব হত্যা, জেলে রাজনৈতিক হত্যার পর, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়ার নির্দেশে ধর্মের নামে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় । তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরী জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ যুক্ত করেছেন ।

একটানা ষোল বছর স্বৈরসামরিক শাসন থেকে পরিত্রাণের জন্য সবগুলো রাজনৈতিক দল ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করেছিল এবং প্রবল গণআন্দোলনের কারণে জেনারেল এরশাদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন, যাদের একমাত্র দায়িত্ব ছিল ৩ মাসের ভেতর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া ।

১৯৯১-এ বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের ভেতর ১৪০টি আসনে বিএনপি জয়ী হলেও সরকার গঠনের জন্য জামায়াতে ইসলামির সমর্থন নিতে হয়েছিল । ১৯৭৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত দুই পাকিস্তানপ্রেমী জেনারেলের জমানায় রাজনীতির সুযোগ পেয়ে পাকিস্তান ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর রাজনৈতিক ও আর্থিক সমর্থনপুষ্ট জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে বিশাল বিনিয়োগ করে দলের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত নির্মাণ করেছে। ১৯৯১-এর নির্বাচনে জামায়াত জাতীয় সংসদে ১৮টি আসন পেয়েছিল । ১৪০টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলেও বিএনপি ভোটের শতকরা হার ছিল ৩০.৮১, পক্ষান্তরে প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে ৮৮টি আসনে জয়ী হলেও শতকরা ভোটের হার ছিল বিএনপির প্রায় সমান (৩০.০৮)। বিস্ময়কর ছিল জামায়াতের ভোট । জামায়াত পেয়েছিল ১২.১৩% ভোট।

১৯৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে । জামায়াতের আসন সংখ্যা ১৮ থেকে কমে ৩-এ দাঁড়িয়েছিল। এই পরাজয় বিএনপি ও জামায়াতকে আরও কাছাকাছি এনেছে । দুটি দল হিসেব করে দেখেছে যদি তারা জোট বেঁধে নির্বাচন করে, যদি প্রশাসনকে পক্ষে ব্যবহার করা যায় তবে তারা জয়ী হবে ।

’৭৫-এর পর থেকে বাংলাদেশের প্রশাসন তাদের যৌক্তিক কারণেই পাকিস্তানপ্রেমী ও ভারতবিদ্বেষী হয়েছে । প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপি-জামায়াতচক্র এক নজিরবিহীন ষড়যন্ত্র করেছিল ২০০১-এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে । যেহেতু বাংলাদেশের অমুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়, বিশেষভাবে হিন্দুরা আওয়ামী লীগের সমর্থক সেহেতু তাদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে সব ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে । ২০০১ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির জোট দেশের বিভিন্ন অ লে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ও আদিবাসী ভোটারদের মধ্যে অকল্পনীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল । পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে হিন্দুদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে । মহিলাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন হয়েছে । হাজার হাজার বাসগৃহ ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ।

তৃতীয় বিশ্বের কোনও দেশেই ধর্মনিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক নেতা বা দলকে আমেরিকা পছন্দ করে না । আমেরিকা চায় নিরঙ্কুশ তাঁবেদারি । এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে এমনভাবে লম্ফঝম্ফ করেছেন যা কোনও কূটনীতির আচরণের আওতায় পড়ে না । বিএনপি-জামায়াতের পক্ষাবলম্বনের জন্য ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা দিল্লিতেও গিয়েছিলেন । দিল্লি অতীতে যেভাবে বলেছে এবারও সেভাবেই বলেছে, বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে সেটা সে দেশের সংবিধান ও জনগণ নির্ধারণ করবে

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল । প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ’৭১-এর দুজন শীর্ষস্থানীয় গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদকে মন্ত্রী পর্যন্ত বানিয়েছেন । বাংলাদেশে তখন ব্যাঙের ছাতার মতো মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার চাষ হয়েছে । ২০০৪ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ নিয়ে একটি গবেষণা করেছিল । সেখানে ১২৫টি জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, যেগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত। জামাতুল মুজাহিদীন নেতা সিদ্দিকুর রহমান উত্তরবঙ্গে শরিয়া আদালত বসিয়ে ৬৭ জনকে হত্যা করেছেন । বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মুফতি হান্নানের হরকতুল জিহাদকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য । ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে তারা উপর্যুপরি গ্রেণেড-বোমা হামলা করেছিল । শেখ হাসিনা আহত হয়ে প্রাণে বাঁচলেও আইভি রহমান সহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী সে হামলায় নিহত হয়েছিলেন । আহত হয়েছিলেন ৩ শতাধিক । প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এই হামলার জন্য যথারীতি আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করেছেন, যদিও হরকতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান আমার প্রামাণ্যচিত্রে (‘জিহাদের প্রতিকৃতি’) বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন— বিএনপির নেতা তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের অফিসে বসে কীভাবে ক্ষমতাসীন জোটের শীর্ষ নেতারা হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন ।

বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনের জবাব বাংলাদেশের জনগণ দিয়েছে ২০০৮-এ অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে । আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৩০টি আসন, তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৮.০৪%। বিএনপি পেয়েছে ৩০টি আসন, ভোটের হার ৩২.৫০% এবং জামায়াত পেয়েছে ২টি আসন, ভোটের হার ৪.৭০% । নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ জোট গঠন করেছিল জাতীয় পার্টি সহ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল পার্টি, সাম্যবাদী দল, ন্যাপ ও গণতন্ত্রী পার্টির মতো বাম দলের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের জোটের অংশীদাররা জয়ী হয়েছিল ৩৩টি আসনে । এই নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির বিজয়ের অন্যতম কারণ ছিল নাগরিক সমাজের সমর্থন। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিল ক্ষমতায় গেলে তারা ’৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবে।
২০০৮ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনা আবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেন । দেশ পরিচালনায় আসার পর, ওই পাঁচ বছরের শাসনপর্বে ’৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ’৭২-এর সংবিধান থেকে বাতিল করা রাষ্ট্রের চার মূলনীতি পুনঃস্থাপন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও সক্রিয় হয়ে ওঠেন । পনের বছর আগে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭০০ ডলারের নিচে, এখন ২৮০০ ডলারের কাছাকাছি ।

২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে জামায়াতকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, কারণ এই দলের গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থী । জামায়াত জনগণের সার্বভৌমত্ব মানে না, নারী-পুরুষ বা মুসলিম-অমুসলিমদের সমান অধিকারে বিশ্বাস করে না, তারা মানবরচিত সংবিধানের বদলে কোরাণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় । যৌক্তিক কারণেই নির্বাচন কমিশন দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে । যেহেতু জামায়াত নির্বাচন করতে পারবে না তারা সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো বিএনপির কাঁধে ভর করে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে । তাদের একটাই দাবি, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং সংবিধানে বাতিল করা তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে ।

উদ্বেগের বিষয়, আমেরিকা যে কারণে শেখ মুজিবকে যেমন অপছন্দ করত, যে কারণে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নির্বিচারে বাঙালিনিধনে পাকিস্তানকে মদত দিয়েছে, একই কারণে শেখ হাসিনাকেও মার্কিন সরকার পছন্দ করে না । তৃতীয় বিশ্বের কোনও দেশেই ধর্মনিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক নেতা বা দলকে আমেরিকা পছন্দ করে না । আমেরিকা চায় নিরঙ্কুশ তাঁবেদারি । এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে এমনভাবে লম্ফঝম্ফ করেছেন যা কোনও কূটনীতির আচরণের আওতায় পড়ে না । বিএনপি-জামায়াতের পক্ষাবলম্বনের জন্য ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা দিল্লিতেও গিয়েছিলেন । দিল্লি অতীতে যেভাবে বলেছে এবারও সেভাবেই বলেছে, বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে সেটা সে দেশের সংবিধান ও জনগণ নির্ধারণ করবে । এটা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় । ভারত কখনো বাংলাদেশের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না এবং ভারত চায় না অন্য কোনও দেশ তা করুক ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে কীভাবে নতুন সরকার গঠিত হবে সংবিধানে তা বলা আছে । যারা ’৭১-এ বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করেছে, যারা সংবিধান মানে না, তারা এবং তাদের সহযোগীরা বলছে নির্বাচন বর্জন করার ডাক দিয়েছে । নির্বাচন বানচালের জন্য জামায়াত-বিএনপি এবং তাদের সহযোগীরা এক মাসের উপর হরতাল-অবরোধের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তাদের প্রতিহিংসার আগুনে দগ্ধ হয়ে নিরীহ বাসযাত্রী ও ট্রেনযাত্রীরা জ্যান্ত পুড়ে মরেছেন । এসব নৃশংস, অপকান্ডে মানুষ সন্ত্রস্ত ।

বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তাদের সহযোগীরা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও ওয়ার্কার্স পার্টি সহ ২৭টি দল আগামী ৭ জানুয়ারি (২০২৪) অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে । বিএনপির বেশ কিছু ক্ষুব্ধ নেতা নির্বাচনের আগে দল থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছেন এবং নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন । আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলের প্রায় দেড়শ বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন । নির্বাচন বানচাল করতে না পারলেও নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস সৃষ্টির ক্ষমতা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই । আওয়ামী লীগের লক্ষ্য, বিএনপি-জামায়াতের ভোট বর্জনের ডাক মোকাবেলার জন্য অধিক সংখ্যক ভোটারদের নির্বাচনী কেন্দ্রে নিয়ে আসা ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার কোটির বেশি তরুণ ভোটার, যারা এবার প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এরা শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের সুফল ভোগ করলেও বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন সম্পর্কে ততটা অবগত নন । এবারের নির্বাচনে তরুণরাই হবে নিয়ামক শক্তি । এরাই সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশ পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, না শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সফল করে ২০৪১ সালে উন্নত দেশের পঙক্তিতে দাঁড়াবে ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!