Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • অক্টোবর ৬, ২০২৩

সিকিমের আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত ১৯, আটকে রয়েছে ৩ হাজার মানুষ, নতুন করে সতর্কতা জারি প্রশাসনের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সিকিমের আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত ১৯, আটকে রয়েছে ৩ হাজার মানুষ, নতুন করে সতর্কতা জারি প্রশাসনের

সিকিমের আকস্মিক বন্যায় এ পর্যন্ত ৬ সেনাসহ অন্তত ১৯ জন মারা গেছে এবং ১৬ জন সেনাসহ ১০৩ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছে, ২৫০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ৬ হাজার জনকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করেছে প্রশাসন।

এরই মধ্যে সিকিম সরকার আরেকটি হিমবাহী হ্রদ বিস্ফোরণের সতর্কতা জারি করেছে এবং সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যায় একটি সেনা শিবির থেকে বিস্ফোরক ও গোলাবারুদ ভেসে যাওয়ার ঝুঁকির কারণে পর্যটকদের তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করার জন্য আবেদন  জানিয়েছে। লাচেনের কাছে শাকো চো হ্রদটি ফেটে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, তাই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ আশেপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।

সিকিমের মুখ্য সচিব বিজয় ভূষণ পাঠক জানিয়েছেন, “লাচেন এবং লাচুং-এ প্রায় ৩ হাজার মানুষ আটকা পড়েছে। মোটরসাইকেলে করে সেখানে যাওয়া ৩,১৫০ জন মানুষও বন্যার কারণে সেখানে আটকা পড়েছে। আমরা সেনা ও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেব।”

সিকিমের উপরের অংশে একটি হিমবাহী হ্রদ ফেটে যাওয়ার ফলে আকস্মিক বন্যা এবং একটি হিমবাহী হ্রদ বিস্ফোরণ ঘটায়, চুংথাং বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দিতে হয়েছিল, এর ফলে বুধবার সকালে তিস্তা নদীর জলস্তর মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়, যা হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয় দাঁড়ায়।

মাঙ্গান জেলায় চারজন মারা গেছে এবং ১৭ জন নিখোঁজ, গ্যাংটকে পাঁচজন মারা গেছে এবং ২২ জন নিখোঁজ রয়েছে। পাকিয়ং জেলায় ছয় সেনাসহ ১০ জন মারা গেছে এবং ৫৯ জন নিখোঁজ রয়েছে।

সেনাবাহিনী বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজ ১৬ জন সৈন্যের জন্য ব্যাপকভাবে অনুসন্ধান কাজ চালাচ্ছে, পাশাপাশি ত্রিশক্তি কর্পসের সৈন্যরা উত্তর সিকিমের চুংথাং, লাচুং এবং লাচেনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আটকে থাকা সাধারণ নাগরিক এবং পর্যটকদের চিকিৎসা সহায়তা এবং টেলিফোন সংযোগ প্রদান করছে।

সরকারী মালিকানাধীন জলবিদ্যুৎ কোম্পানি এনএইচপিসি তার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি দ্রুত আবার চালু করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, কারণ  আকস্মিক বন্যার পরে তিস্তা অববাহিকায় কী ঘটছে তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। বিদ্যুৎ মন্ত্রক বলেছে যে বন্যার জল কমলে সিকিমে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির ক্ষতির পরিমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

৩ ও ৪ অক্টোবর রাতে আকস্মিক বন্যায় তিস্তা-ভি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তরখোলা ও পামফোক পর্যন্ত সমস্ত সেতু তলিয়ে গেছে বা ভেসে গেছে। তিস্তা-ভি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে পরিষেবার বাইরে রয়েছে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না। এনএইচপিসি তার প্রকল্পগুলি থেকে সমস্ত কর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে, তাদের নিরাপদ এলাকায় স্থানান্তরিত করেছে।

উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদের উপর একটি হিমবাহী হ্রদ ফেটে যাওয়ার ফলে তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়, চুংথাং বাঁধের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ভেসে যায় এবং জলের প্রবল ঢেউয়ের প্রবাহে নিচের দিকের শহর ও গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।

আকস্মিক বন্যায় সিকিমের ১১টি সেতু ধ্বংস হয়েছে, যার মধ্যে মাঙ্গান জেলার আটটি, নামচিতে দুটি এবং গ্যাংটকের একটি সেতু রয়েছে। বন্যায় চারটি জেলার জলের পাইপলাইন, স্যুয়ারেজ লাইন এবং ২৭৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তর সিকিমে এনডিআরএফ-এর উদ্ধারকারী দল স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৷

সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং বলেছেন, “আমাদের উদ্ধারকারী দলগুলি এই বিপর্যয়ের ফলে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে এই বিপর্যয়ের  চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার জন্য দিনরাত কাজ করছে। আমি প্রশাসন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমস্ত সংস্থা এবং ব্যক্তিদের এই বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এবং সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে অনুরোধ করছি।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!