Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ১৭, ২০২২

কাদা জলের তোড়ে রেললাইনে কাত আস্ত ট্রেন! আতঙ্কের ৪৮ ঘণ্টার পর বরাতজোরে প্রাণে বাঁচলেন ২৮০০ যাত্রী

কাদা জলের তোড়ে রেললাইনে কাত আস্ত ট্রেন! আতঙ্কের ৪৮ ঘণ্টার পর বরাতজোরে প্রাণে বাঁচলেন ২৮০০ যাত্রী

অসমে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ । টানা বর্ষণে নিউ হাফলং রেললাইনে ধসের জেরে ট্রেনের মধ্যেই আটকে পড়েছিলেন প্রায় ২৮০০ যাত্রী। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। চারদিকে জল আর জল। মাঝে মাঝেই ধস নামছে। হুড়মুড়িয়ে নামছে কাঁদা জল। প্রতি মুহূর্তে প্রাণের ঝুঁকি । ট্রেনের মধ্যেই আটকে ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। এরই মধ্যে অসমের হাফলং-এ রেললাইনে কাত হয়ে পড়ে আস্ত ট্রেন! ট্র্যাকের ওপর দিয়ে এখনও বইছে কাদার স্রোত। এভাবে ৪৮ ঘণ্টা আটকে থাকার পরে ভয়ঙ্কর বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন ২টি ট্রেনের ২ হাজার ৮০০ জন যাত্রী। কোনওরকমে তাঁদের উদ্ধার করা হল। ট্রেনে আটকে পড়া অধিকাংশ যাত্রীকে এয়ার লিফট করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি এবং ধসের জেরে গত শনিবার থেকে লামডিং-বদরপুর রুটে ১৮টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে রেললাইন মেরামতির কাজ ।

অন্যদিকে, হোজাইতে জলের তোড়ে ভেসে গেল হাতিও। সমস্ত নদীতেই জলোচ্ছ্বাস। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস। উত্তর-পূর্ব ভারতে একের পর এক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ২৫ জোড়া ট্রেন বাতিল করল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। অসমের ডিমা হাসাও  এলাকায় ভূমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মিজোরাম ও দক্ষিণ অসমের এলাকায় চলাচলকারী ওই ট্রেনগুলিকে বাতিল করেছে নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ের রেলওয়ে। যে সমস্ত ট্রেন বাতিল ও আংশিক বাতিল করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে আগরতলা–আনন্দ বিহার টার্মিনাল রাজধানী এক্সপ্রেস, ব্যাঙ্গালোর কান্ড-আগরতলা এক্সপ্রেস, আগরতলা-সেকেন্দ্রাবাদ এক্সপ্রেস, শিয়ালদা-আগরতলা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।

বন্যা পরিস্থিতিতে অসমে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কয়েকজন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৩৯৯টি গ্রাম বিপর্যস্ত হয়েছে। অসমের কাছার জেলার পরিস্থিতিও ভয়ানক।মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। যে দিকে চোখ যায়, শুধুই জল। কাদা জলের স্রোতে বোঝা দায়, এটা রেলপথ না কি আস্ত নদী! পেল্লায় চেহারার ট্রেনগুলি দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন খেলনা গাড়ি জলে ভাসছে। বায়ুসেনার কপ্টারে করে অধিকাংশ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। দিমা হাসাও জেলায় লুমডিং শাখায় দুটি ট্রেন আটকে পড়েছিল। ওই দুটি ট্রেনের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। বন্যা পরিস্থিতি ও ধসের জেরে প্রাণ হাতে নিয়ে কার্যত আতঙ্কের প্রহর গুনছিলেন তাঁরা। শেষমেশ তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।

কয়েকজন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৩৯৯টি গ্রাম বিপর্যস্ত হয়েছে। অসমের কাছার জেলার পরিস্থিতিও ভয়ানক। সেখানে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০৯৯.৬ হেক্টর জমি জলে ডুবে গিয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে চলতি বছরে প্রথমবার বন্যা প্লাবন পরিস্থিতির মুখোমুখি হল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। নগাঁওয়ে বাড়িতে আটকে পড়া ৭০-৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নগাঁওয়ের এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘বন্যা পরিস্থিতিতে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেল। আমরা সকলে বিপর্যস্ত। বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।’ জলের তোড়ে তমালপুর জেলায় বোরোলিয়া নদীতে ভেসে গিয়েছে বাঁশের সেতু।

মাটি ধসে তিনজন নিহতঅসম সরকারের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, আসামে ৬ মে থেকে ৫৪৫.৬৬ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। অবিরাম বর্ষণে ১৪ টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ভাসছে বিশ্বনাথ, বোঙ্গাইগাঁও, কাছাড়, ধেমাজি, ধুবরি, ডিব্রুগড়, হোহাই, কার্বি আংলং, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, নাবালগাঁও, জোড়হাট ও কামরুপ । ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে ডিমা হাসাও, হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ।

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জাতীয়সড়ক এবং পাঁচটি রাজ্যসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত । বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ নেই।

 


  • Tags:
❤ Support Us
Advertisement
2024 Lakshman Seth
Advertisement
2024 Lakshman Seth
Advertisement
error: Content is protected !!