- মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- অক্টোবর ২৮, ২০২২
জিম্বাবোয়ের কাছে হেরে সঙ্কটে পাকিস্তান, দেশে রামিজ–বাবরের মুন্ডুপাত
টুইটারে তরজা জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর

টি ২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচেও নাটকীয়ভাবে ১ রানে হার। পরপর দুটি ম্যাচে হেরে প্রবল চাপে পাকিস্তান। সেমিফাইনালে ওঠার কাজ অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে। দল নির্বাচন, ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় করছেন নেট নাগরিকরাও।
বৃহস্পতিবার জিম্বাবোয়ের কাছে হার কেউই মেনে নিতে পারছেন না। প্রথমে ব্যাট করে জিম্বাবোয়ে তুলেছিল ১৩০। জবাবে ১২৯ রানে থেমে যায় পাকিস্তান। জিম্বাবোয়ের কাছে হারের পরই অনেকেই নিশানা করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রামিজ রাজা, হেড কোচ সাকলিন মুস্তাক, প্রধান নির্বাচক মহম্মদ ওয়াসিমকে। সমালোচনার মুখে পড়েছেন অধিনায়ক বাবর আজমও। পাকিস্তানের প্রাক্তন জোরে বোলার শোয়েব আখতার বলেছেন, ‘এই হার খুব অস্বস্তিদায়ক ও হতাশাজনক। যে রকম কঠোর ক্রিকেট খেলা প্রত্যাশিত ছিল সেটা দেখা যায়নি। দল নির্বাচন অত্যন্ত মাঝারিমানের। দলের ক্রিকেটারদের মানসিকতাও খুবই সাধারণ মানের। সে কারণেই পাকিস্তান ক্রিকেট এই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।’ পাকিস্তানের পরাজয়কে বেদনাদায়ক বলে অভিহিত করেছেন ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, মহম্মদ হাফিজ, ওয়াহাব রিয়াজের মতো প্রাক্তনরা। তবে শাহিদ আফ্রিদি জিম্বাবোয়ের জয়কে অঘটন বলতে নারাজ। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম বল থেকেই জিম্বাবোয়ে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে। কম রানের পুঁজি নিয়েও কীভাবে জেতা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছে।’ কামরান আকমল বলেছেন, ‘যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে জিম্বাবোয়ে।’
এদিকে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। তিনি বলেছেন, ‘যোগ্য ক্রিকেটারদের বাইরে রেখে দল গঠন করলে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শেখার জায়গা নয়। প্রত্যেকবার দল ব্যর্থ হলে তা আড়াল করতে শেখার কথা বলা হয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক। যেভাবে ব্যাটাররা উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছে তা লজ্জাজনক। পেশাদার ক্রিকেটারদের কাছ থেকে এমনটা অপ্রত্যাশিত।’ সলমন বাট দলের সমালোচনার পাশাপাশি নিশানা করেছেন বাবর আজমের নেতৃত্বকে। তিনি বলেন, ‘এই দলের ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়ায় খেলার উপযুক্ত নয়। বাবর আজম নেতৃত্ব দিতে দক্ষ নয়। এমন কাউকেই অধিনায়ক করা উচিত ছিল, যে দক্ষ।’
জিম্বাবোয়ের কাছে হেরে টি২০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠা কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পাকিস্তানের। দেশে প্রবলভাবে সমালোচিত হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। এরই মধ্যে ‘নকল মিঃ বিন’ ইস্যুতে বিদ্ধ পাকিস্তান। টুইটারে তরজা জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর। ঘটনার সূত্রপাত ৬ বছর আগে, ২০১৬ সালে। ৯ সেপ্টেম্বর জিম্বাবোয়ের হারারেতে ‘এগ্রিকালচার শো’তে মিস্টার বিনের (রোয়ান অ্যাটকিনসন) পরিবর্তে তাঁর মতোই দেখতে পাকিস্তানের কৌতুক অভিনেতা আসিফ মহম্মদ অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন। মিস্টার বিনকে দেখার জন্য ১০ ডলার দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন জিম্বাবোয়ের নাগরিকরা। কিন্তু রোয়ান অ্যাটকিনসনের জায়গায় আসিফ মহম্মদকে অনুষ্ঠানে দেখে অনেকেই হতাশ হন। এই ঘটনা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। সেদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এনগুগি চাসুরা। সেই প্রতারণার জবাব দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন।
বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ে–পাকিস্তান ম্যাচের আগের দিন এনগুগি চাসুয়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের টুইটারে গিয়ে লেখেন, নকল মিস্টার বিনকে জিম্বাবোয়েতে পাঠিয়ে যেভাবে দেশের মানু্ষকে প্রতারণা করেছিল, তা কোনও দিন ক্ষমা করবে না। বৃষ্টিই একমাত্র এই ম্যাচে পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারবে। তাঁর এই মন্তব্য দেখে একজন আসল ঘটনা জানতে চান। তখন চাসুয়া ওই নকল বিনের ঘটনার কথা তুলে ধরেন। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া শুরু হয় যুদ্ধ।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিম্বাবোয়ের জয়ের পর সেই দেশের প্রেসিডেন্ট টুইটারে দলকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘পরের বার আসল বিনকে যেন পাঠানো হয়।’ তাঁর সেই টুইটারের জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ লেখেন, ‘পাকিস্তানে আসল বিন নেই। তবে আসল ক্রিকেটীয় স্পিরিট আছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর অভ্যাস আছে।’ জিম্বাবোয়ের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে শেহবাজ শরিফ আরও লেখেন, ‘আপনার দল সত্যিই ভাল খেলেছে। তারজন্য অভিনন্দন।’
❤ Support Us