- মু | খো | মু | খি রোব-e-বর্ণ
- ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
‘ আমি মাঠের ছেলে। মাঠ নিয়েই পড়ে থাকতে ভালবাসি’

ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে বায়োপিক, নাম ‘দীপু’। টলিউডের মিউজিক ডিরেক্টর শ্রী প্রীতম বায়োপিকটি তৈরি করছেন। শুটিং শুরু হয়ে গেছে। দীপেন্দু নিজেও অভিনয় করছেন। ‘দীপু’ নিয়েই খোলামেলা দীপেন্দু বিশ্বাসের সাক্ষাৎকার নিলেন ক্রিড়া সাংবাদিক নজরুল ইসলাম
• বসিরহাটের মতো মফঃস্বল শহর থেকে উঠে আসা সেই ছেলেটাকে নিয়ে গোটা একটা সিনেমা হচ্ছে। বিশ্বাস হচ্ছে ? নাকি, এখনও ঘোরের মধ্যে ?•• এটা নিয়ে তো প্রায় একবছর ধরে কথা চলছে। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত হচ্ছে, ভাল লাগছে। যখন পুরো বায়োপিক তৈরি হয়ে যাবে, তখন বোঝা যাবে কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছি।
• পিকে–চুনী–বলরামদের নিয়ে এরকম কখনও হয়নি। এমনকি, সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্য, সুরজিৎ সেনগুপ্তকে নিয়েও কেউ সিনেমা করেননি। আপনার জীবন নিয়ে হচ্ছে। এটা কি বাড়তি চাপ ?•• কাদের সঙ্গে আমার তুলনা করছেন। আমি পিকে, চুনী, বলরামদের নখের যোগ্য নই। এমনকি সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্যের তুল্য নই। ওঁদের জীবন সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরলে এখনকার প্রজন্ম কিংবদন্তীদের সম্পর্কে জানতে পারত। আপনি চাপের কথা বলছেন? আমি কোনও চাপে নেই। পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাকে যতটুকু দায়িত্ব দেবেন পালন করার চেষ্টা করব।
• আগে কখনও অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল ?
•• না। খেলার সময় একটা বিস্কুট কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেছিলাম। ব্যাস, ওই পর্যন্ত। তখন অভিনয় করার প্রস্তাব এলেও সম্ভব হত না। সময় কোথায় ? আমি মাঠের ছেলে। মাঠ নিয়েই পড়ে থাকতে ভালবাসি। পরিচালক প্রীতম আমার অনুরাগী। ২ বছর আগে যখন আমাকে নিয়ে বায়োপিকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, না করতে পারিনি।
‘মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাবে সই করাটাকে টার্নিং পয়েন্ট বলব না। ফুটবলজীবনের টার্নিং পয়েন্ট টিএফএ–তে সুযোগ পাওয়া। যদি টিএফএ–তে সুযোগ না মিলত, তাহলে ক্রমাগত উত্তরণ হত না, দীপেন্দু বিশ্বাস হতাম না ’
• নিজের লেখা বই লেখক কাউকে না কাউকে উৎসর্গ করেন। সিনেমায় অবশ্য তেমন রেওয়াজ নেই। তবুও এই বায়োপিক যদি কাউকে উৎসর্গ করতে হয়, কাকে করবেন ?
•• অবশ্যই পরিবারকে। বাবা–মা–স্ত্রী–মেয়েকে। বাবা–মা’র জন্যই তো আমি দীপেন্দু বিশ্বাস হয়েছি। ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি, সবাই আমাকে চিনেছে। এখনও বসিরহাট থেকে কলকাতা ময়দানে প্র্যাকটিস করতে আসার দিনগুলির কথা মনে পড়ে।
• জীবনের চিত্রনাট্য নতুন করে লেখার সুযোগ থাকলে, কোন চ্যাপ্টার বাদ দিতেন ?
•• যে বছর মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রায় সই করেছিলাম, সেই সময়টা। আমার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। সবাই বলছিল, আমি আর খেলতে পারব না। সে এক ভয়ানক মানসিক যন্ত্রণা, বোঝাতে পারব না।
• বলা হয়েছিল, হার্টে সমস্যা। মাঠেই মৃত্যু হতে পারে। তবুও লড়াই চালিয়ে গেছেন। ওই সময়টাকে কীভাবে ফিরে পেতে চান ?
•• ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু পরিবার আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করতে থাকে, পাশে দাঁড়ায়। তারপরও তো মোহনবাগানের জার্সি গায়ে চুটিয়ে খেলেছি। পরের বছর সর্বোচ্চ স্কোরার।এরপর আরও ১০ বছর দাপটের সঙ্গে খেললাম।
• টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে সোজা মোহনবাগান। এটাই কি ফুটবল জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ?
•• না, মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাবে সই করাটাকে টার্নিং পয়েন্ট বলব না। ফুটবলজীবনের টার্নিং পয়েন্ট টিএফএ–তে সুযোগ পাওয়া। যদি টিএফএ–তে সুযোগ না মিলত, তাহলে ক্রমাগত উত্তরণ হত না, দীপেন্দু বিশ্বাস হতাম না।
• বায়োপিকের শুটিং নিয়ে কতটা উত্তেজিত?
•• ধোনির বায়োপিক দেখেছি। দাদাকে (সৌরভ গাঙ্গুলি) নিয়েও বায়োপিক হচ্ছে। আমার জীবন সেলুলয়েডের পর্দায় ফুটে উঠবে, আমি রোমাঞ্চিত।
• বায়োপিকে কোন বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ?
•• ছোটবেলা, স্কুল জীবন, খেলোয়াড় জীবন, রাজনীতিতে আসা, সবকিছুই সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরছেন পরিচালক শ্রী প্রীতম। এমনকি, মহমেডান ক্লাবে প্রশাসনিক জীবনও। অনেক অজানা কাহিনী পর্দায় দেখা যাবে। দিনযাপনের ছোট ছোট গল্প আমজনতা জানতে পারবেন, ভেবে আনন্দ হচ্ছে। কলকাতায় প্র্যাকটিসে আসার জন্য বসিরহাটের বাড়ি থেকে রাত আড়াইটেয় সাইকেল নিয়ে বের হতাম। ভোর সাড়ে তিনটেয় বসিরহাট স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতায় আসতাম। আমার ওই সংগ্রামের কাহিনীগুলো সিনেমার মাধ্যমে এবার সবাই জানবে।
♦•–•♦♦•–•♦
❤ Support Us