- এই মুহূর্তে দে । শ
- মার্চ ২০, ২০২৫
বিধানসভার বাইরে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির, পোড়ানো হল স্পিকারের কুশপুতুল

বুধবার বারুইপুরে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ওপর তৃণমূল কংগ্রেসের হামলার অভিযোগ ওঠে, যার আঁচ এদিন বিধানসভাতেও পড়েছে। বিজেপি-তৃণমূলের স্লোগান পাল্টা স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বিধানসভা কক্ষ। এক পর্যায়ে ওয়াক আঊট করেন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ সহ অন্য বিধায়করা। এই মুহূর্তে বিধানসভার বাইরে গেটের সামনে কালো পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। পোড়ান হয়েছে স্পিকারের কুশপুতুল। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, মাননীয় স্পিকারের বিধানসভা অঞ্চলে এক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য শাসক শিবিরের ‘গুণ্ডা’-দের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁদের অভিযোগ বারুইপুর যাওয়ার পথে তৃণমূলের লোকজন শুভেন্দুর গাড়ির কনভয়ের উপর লাঠি, লোহার রড, বাঁশ, পাথর, ইট ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। গাড়ি এগিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়। সৌভাগ্যক্রমে, গাড়ির কাচ বন্ধ থাকায় শুভেন্দু কোনো বড় আঘাত থেকে রক্ষা পান। গেরুয়া শিবির এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ‘রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই।’ ঘটনার জেরে আজ বিধানসভায় আসেন নি শুভেন্দু অধিকারী।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই বিজেপি বিধায়করা গতকালের ঘটনা নিয়ে সরব হন। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘এটা বিধানসভার বাইরের রাজনৈতিক ঘটনা। এতে হাউজের কিছু করবার নেই।’ তিনি আরো মন্তব্য করেন, ‘বিজেপি সদস্যরা এখন চেয়ার পাওয়ার জন্য অতিশয় অধৈর্য হয়ে গিয়েছেন, গণতন্ত্রে এভাবে চেয়ার পাওয়া যায় না।’ আগুনে ঘি পড়ে, শঙ্কর ঘোষরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন । আধঘন্টার বেশি সময় ধরে বিজেপি বিধায়কেরা ‘চেয়ার ছাড়ো স্পিকার’ সহ তীক্ষ্ণ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কাগজ ছিঁড়ে, ও কালো রুমাল উড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। বিধানসভার বাইরে, বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গতকাল হামলা চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়, নির্বাচনী অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘এই ধরনের হামলা থেকে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রাণ সংশয় হতে পারে। রাজ্যে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের পরিবেশ রক্ষা করা ভীষণ জরুরি।’ বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, ‘তৃণমূলের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছিল। অভিযোগ ওঠে যে, ওই সময় পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ বিজেপির দাবি, ‘তাঁদের কর্মসূচি পুলিশের অনুমতি নিয়েছিল, তারপরও কেন এ ধরনের সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হলো, তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট বিবৃতি দিতে হবে।’
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অপূর্ব সরকার এ ঘটনায় তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেন। চন্দ্রিমা বলেন, ‘বিজেপি নির্বোধের মতো কাজ করছে। তাঁরা নিজেরাই জানে না কি করছে, কী জন্য অভব্য আচরণ করছে।’ জোড়াফুল শিবির থেকে বিধানসভায় দাবি করা হয়, বারুইপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা কোনো পূর্ব পরিকল্পিত হামলা নয়, ২ দলের মধ্যে উত্তেজনার ফলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, বিধানসভার অধিবেশনে বিরোধী বিধায়কদের বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। তাই জন্য স্পিকারের বিরুদ্ধে ‘নালিশ’ জানাতে স্পিকারের বিধানসভা কেন্দ্রতেই রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। এদিনই বারুইপুরে ২টি পথসভা ছিল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের। দুপক্ষের মধ্যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়। বারুইপুরের ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এমন পরিস্থিতিতে, রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ আরো উত্তপ্ত হতে পারে।
❤ Support Us