Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • নভেম্বর ১৪, ২০২৩

ঘরপোড়াদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে পুলিশি বাঁধার মুখে সিপিএম নেতা সুজন,কান্তি,শমীক, সাজানো সংসার চোখের উপর পুড়তে দেখে এখনও চোখের জল বাঁধ মানছে না দলুয়াখাঁকি গ্রামের মহিলাদের, পুরুষরা এখনও ঘরছাড়া

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ঘরপোড়াদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে পুলিশি বাঁধার মুখে সিপিএম নেতা সুজন,কান্তি,শমীক, সাজানো সংসার চোখের উপর পুড়তে দেখে এখনও চোখের জল বাঁধ মানছে না দলুয়াখাঁকি গ্রামের মহিলাদের, পুরুষরা এখনও ঘরছাড়া

জয়নগরের দলুয়াখাঁকি গ্রামে এখন শ্মশানের নীরবতা। ১৫ থেকে ১৬টি বাড়ি সোমবার তৃণমূল দুষ্কৃতীরা জ্বালিয়ে দিয়েছে সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পর। পিটিয়ে মারা হয়েছে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন-এর খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে। এই গ্রামের ঘরপোড়া ৫০ জন মহিলা ও শিশুকে দক্ষিণ বারাসত সিপিএম পার্টি অফিস আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার  দলুয়াখাঁকি গ্রামে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাঁধা দিয়েছে সিপিআই(এম)’র প্রতিনিধি দলকে। প্রতিনিধি দলে সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গাঙ্গুলি ছিলেন। তাঁরা  যখন গ্রামে ঢুকতে যান তখন রাস্তা আটকায় বারুইপুর জেলা পুলিশের একটি বিশাল বাহিনী।

ওই গ্রামের ঘর ছাড়াদের নিয়ে গ্রামে পৌঁছায় দলীয় নেতৃত্ব। তাদের নিয়ে গ্রামে ঢুকতে গেলে রাস্তা আটকায় পুলিশ। সোমবার সকালে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনের খুনের পর দলুয়াখাঁকি গ্রামের একের পর এক সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে যাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের অভিযোগ। সোমবার সারা রাত খোলা আকাশের নিতে থাকতে হয় গ্রামের মহিলা, শিশুদের। অবশেষে দক্ষিণ বারাসাতের সিপিআই(এম)’র দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয় তাদের। সেখান থেকে এদিন শমীক লাহিড়ী, সুজন চক্রবর্তীরা তাদের গ্রামে নিয়ে যান। গ্রামের কাছে যাওয়া মাত্র লাঠি হাতে রাস্তা আটকায় পুলিশ। অভিযোগ, মহিলা পুলিশ ছাড়াই মহিলা গ্রামবাসীদের সরিয়ে  দেয় পুলিশ। এদিকে পুলিশের দাবি তারা কাউকে আটকায়নি। পুলিশ রাস্তা আটকালে সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গাঙ্গুলির সঙ্গে বচসা শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাক্কাধাক্কিও হয়।

ঘরছাড়াদের অভিযোগ, সোমবার যে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকার সময় তৃণমূলের লোকজন তাদের বাড়ির সব কিছু লুঠ করে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, সেই পুলিশই মঙ্গলবার তাদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না। দলুয়াখাঁকি গ্রামে এখন কোনও পুরুষ মানুষ নেই। মহিলাদের অভিযোগ, তাঁরা সিপিএম করেন, সেই কারণেই বেঁচে বেঁচে তাদের বাড়ি পুড়িয়ে সব জিনিসপত্র লুঠ করে নেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়ির পুরুষরা কোথায় সেটা মহিলারা জানেন না, আমরা বাড়ি যেতে চাই। কাল থেকে পুলিশ গ্রামে আসেনি। আজ যেই পার্টির লোকেরা আমাদের সাথে এসেছে ওমনি রাস্তা আটকাতে পুলিশ দাঁড়িয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বামনগাছির দোলুয়াখাঁকি গ্রামের  কোনও ঘরে মঙ্গলবার উনুন জ্বলেনি। রান্না ঘরে ভাতের হাঁড়ি থেকে গরম ভাতের গন্ধ বার হয়নি,  বদলে পোড়া গন্ধ ছেয়ে রেখেছে রান্নাঘর। বাড়িতে যে কজন মহিলা আছেন  তাঁরা নিজেদের হাতে সাজানো সংসার পুড়ে যেতে দেখেছেন অসহায়ের মতো সোমবার, তাই তাঁদের চোখের জল কোনও বাঁধা মঞ্চে না। একের পর এক বাড়িতে এমনই ছবি দেখা গেছে মঙ্গলবার দুপুরে, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন। সদ্য হাঁটতে শেখা বাচ্চা থেকে কোলের শিশু কারও পেটে কিছু পড়েনি। আতঙ্কে তাদের চোখমুখ শুকিয়ে গেছে। এই গ্রামের পঞ্চায়েত তৃণমূলের, যাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা সিপিএম করে বলে পঞ্চায়েত তাদের বিপদে পাশে দাঁড়ায়নি, এমনই অভিযোগ ঘরপোড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার বামনগাছির দোলুয়াখাঁকির মহিলাদের।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!