Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • এপ্রিল ১৬, ২০২৫

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির চার্জশিটে রাহুল-সোনিয়ার নাম।দিল্লিতে হাত শিবিরের বিক্ষোভে পুলিশি অভিযান

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির চার্জশিটে রাহুল-সোনিয়ার নাম।দিল্লিতে হাত শিবিরের বিক্ষোভে পুলিশি অভিযান

১১ এপ্রিল ন্যশনাল হেরাল্ড মামলায় এজিএলের ৬৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এবার এ মামলায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জমি দুর্নীতিকাণ্ডে কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধির স্বামী রবার্ট বঢরা মঙ্গলবার ও বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। ‘এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’– অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি কংগ্রেসের।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেসের শীর্ষ সোনিয়া গান্ধি এবং রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ওরফে ইডি। অর্থ পাচারের তদন্তকে আরো তীব্র করতে এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে ইডি-র কর্মকর্তারা। ১১ এপ্রিল ন্যশনাল হেরাল্ড মামলায় এজিএলের ৬৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। যার মধ্যে দিল্লি, মুম্বাই এবং লখনৌ-এর স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থা, যাতে গান্ধী পরিবারের বড়ো অংশ শেয়ার রয়েছে, তারা এজিএল-এর সপত্তি অত্যন্ত কম দামে আত্মসাৎ করেছে। ২০১৪ সালে এ মামলার প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়। এদিকে, জমি দুর্নীতিকাণ্ডে কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ওয়াধেরাকে মঙ্গলবার ও বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। ‘এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’– অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি কংগ্রেসের। ইডির চার্জশিটে হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া গান্ধীকে ১ নাম্বার ও রাহুল গান্ধীকে ২ নাম্বার অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ আদালত ২৫ এপ্রিল চার্জশিট গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

রাহুল সোনিয়ার পাশাপাশি, ইডির চার্জশিটে কংগ্রেস নেতা সম পিত্রোদা আর সুমন দুবে’কেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা পিএমএলএ-এর ৩ ও ৪ ধারার আওতায় অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে। আদালত জানিয়েছে, ‘আগামী ২৫ এপ্রিল এ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। বিশেষ আইনজীবী আর তদন্ত কর্মকর্তারা কেস সংক্রান্ত তথ্য আদালতে উপস্থাপন করবেন।’ আদালত ইডিকে অভিযোগের ‘সফট কপি’ জমা করতে নির্দেশ দিয়েছে। ইডি জানিয়েছে, তাঁরা মামলাটি সিবিআই-এর থেকে বিচারপতি গোগনের আদালতে স্থানান্তর করবার জন্য আবেদন জানাবে। পিএমএলএ এর বিধি অনুযায়ী, অর্থ পাচারের মামলা যেখানে নেওয়া হয়, সেখানেই অন্য মৌলিক অপরাধের বিচারও হতে হবে। ইডি অভিযোগ করেছে, ‘সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী এমন এক ‘ষড়যন্ত্রমূলক পরিস্থিতি’ তৈরি করেছিল যাতে ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রকাশক, অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড বা এজিএল-এর সম্পত্তি ২০০০ কোটি টাকার পরিবর্তে মাত্র ৫০ লাখ টাকায় পাওয়া যায়। এই সম্পত্তি সোনিয়া ও রাহুলের নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি ইয়ং ইন্ডিয়ার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। বর্তমানে এই সম্পত্তির বাজার মূল্য প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা। এই অপরাধের ফলে রাহুল, সোনিয়া প্রায় ৯৮৮ কোটি টাকা আয় করেছে বলে ইডির দাবি। পিএমএলএ এর ধারা ৪ এর আওতায় শাস্তির আবেদন মঞ্জুর হলে, সা ৭ বছর পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে কংগ্রেস হেভিওয়েটদের। উল্লেখ্য, এজিএল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জওহরলাল নেহেরু।

এদিকে, জমি দুর্নীতিকাণ্ডে কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী তথা রাহুল গান্ধীর জামাইবাবু রবার্ট ওয়াধেরাকে মঙ্গলবার ও বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। ২০০৮ সালের হরিয়ানার ভূমি চুক্তি সম্পর্কিত অর্থ পাচারের মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির কর্মকর্তারা। ওয়াধেরার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। বুধবার সকালেও তিনি ইডি দফতরে পৌঁছেছেন। তিনি এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ বলে দাবি করেছেন। এর আগেও তিনি তদন্তকারী সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা করেছেন, বহু তথ্য জমা করেছেন। এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’– অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কংগ্রেস। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন, ‘ন্যাশনাল হেরাল্ডের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা রাষ্ট্রপ্রণোদিত অপরাধ। আইন শাসনের পরিপন্থী। অথচ তা আইনের ছদ্মবেশেই করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করা, আসলে প্রধানমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়ার কৌশল। হুমকি দেওয়ার চেষ্টা। কিন্তু আমরা জানিয়ে দিতে চাই, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও তার নেতৃত্ব চুপ করে বসে থাকবে না। সত্যের জোয় হবেই !’

প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা ২০১৪ সালে সাবেক মন্ত্রী সুব্রামানিয়াম স্বামীর দায়ের করা একটি ব্যক্তিগত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়। অভিযোগে স্বামী দাবি করেন, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড একযোগে ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে’ জড়িত। তারা অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড বা এজিএল-এর সম্পত্তি বে-আইনিভাবে অধিগ্রহণ করেছে। সে সময় আদালত এই অভিযোগ গ্রহণ করেছিল এবং ইনকাম ট্যাক্স বিভাগকে ন্যাশনাল হেরাল্ডের বিষয়গুলি তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। ২০২১ সালে ইডি এই মামলার তদন্ত শুরু করে। ইডিও মামলার তদন্তে সুব্রামানিয়াম স্বামীর অভিযোগের ‘সত্যতা’ নিশ্চিত করে। ইডি দাবি করে, ইয়ং ইন্ডিয়ান কোম্পানি, যার ৩৮ শতাংশ করে শেয়ার রয়েছে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর হাতে; তারা কয়েক শো কোটি টাকার এজিএল-এর সম্পত্তি মাত্র ৫০ লাখ টাকায় অধিগ্রহণ করেছিল। এই লেনদেন একটি বৃহৎ অর্থ পাচারের পরিকল্পনার অংশ ছিল। এছাড়াও, ইডি অভিযোগ করেছে, এ-সব সম্পত্তি পরবর্তীতে ভুয়ো দান, অগ্রিম ভাড়া আর ভুয়ো বিজ্ঞাপন মাধ্যমে আয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!