- মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২
শেষ ওভারে চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্স! নাটকীয় ম্যাচের সাক্ষী থাকল ক্রিকেট বিশ্ব।
ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তেজনা। চূড়ান্ত নাটক। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের লড়াইয়ে তেমনই একটা ম্যাচের সাক্ষী থাকল ক্রিকেট বিশ্ব।

চিত্র সংগৃহীত
ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তেজনা। চূড়ান্ত নাটক। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের লড়াইয়ে তেমনই একটা ম্যাচের সাক্ষী থাকল ক্রিকেট বিশ্ব। শুরু থেকেই পেন্ডুলামের মতো দোদুল্যমান ম্যাচের ভাগ্য। একবার ভারতের দিকে, আবার কখনও পাকিস্তানের দিকে। পাকিস্তান যখন নিশ্চিত জয়ের দিকে এগোচ্ছিল, সতেরতম ওভারের পঞ্চম বলে রিজওয়ানকে তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন হার্দিক। পরের ওভারেই আসিফ আলির ক্যাচ ফেলে পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান অর্শদীপ। তিনিই আবার শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আসিফ আলিকে এলবিডব্লু আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেননি। ১ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। একইসঙ্গে গ্রুপ লিগে হারের মধুর প্রতিশোধ।
টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। এই দুই ব্যাটসম্যানের দাপটেই ৪.২ ওভারেই ৫০ রানে পৌঁছে যায় ভারত। দারুণ শুরু করেও বড় ইনিংস গড়তে পারেননি রোহিত (১৬ বলে ২৮)। ষষ্ঠ ওভারে হ্যারিস রউফের বলে খুশদিল শাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। পাওয়ার প্লে–র ৬ ওভারে ভারত তোলে ৬২/১। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে আউট হন লোকেশ রাহুল। ২০ বলে তিনি করেন ২৮।
রোহিত ও রাহুল আউট হওয়ার পর কোহলি ও সূর্যকুমারের ওপর দায়িত্ব ছিল ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার। এদিন বড় রান পাননি সূর্য (১০ বলে ১৩)। ঋষভ পন্থও কোহলিকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন। হার্দিক পান্ডিয়াও (০) নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ। মাত্র ২ বল ক্রিজে স্থায়ী ছিলেন। দীপক হুডা ১৪ বলে ১৬ রান করে আউট হন। কোহলিই দলকে টেনে নিয়ে যান। হাসনাইনকে ৬ মেরে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৬০ করে রান আউট হন কোহলি। মারেন ৪টি ৪ ও ১টি ৬। ২০ ওভারে ভারত তোলে ১৮১/৭। পাকিস্তানে হয়ে ভাল বোলিং করেন সাদাব খান (২/৩১) ও মহম্মদ নওয়াজ (১/২৫)।
জয়ের জন্য ১৮২ রানের লক্ষ্য একেবারেই সহজ ছিল না পাকিস্তানের সামনে। ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেছিলেন মহম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু ভারতীয় বোলারদের ওপর দাপট দেখাতে পারেননি পাকিস্তানের দুই ওপেনার। চতুর্থ ওভারেই রবি বিষ্ণোইকে আক্রমণে নিয়ে এসে চমক দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে বাবর আজমকে তুলে নেন বিষ্ণোই। ১০ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। হার্দিক পান্ডিয়া, যুজবেন্দ্র চাহালের মতো অভিজ্ঞ বোলার থাকা সত্ত্বেও বিষ্ণোইকে পাওয়ার প্লে–র মধ্যে আক্রমণে নিয়ে আসাটা রোহিতের মাস্টার স্ট্রোক।
বাবর আউট হওয়ার পর দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মহম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামান। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে লং অন বাউন্ডারির ধারে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ফকর (১৮ বলে ১৫)। ডানহাতি–বাঁহাতি কম্বিনেশন বজায় রাখার জন্য এদিন ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল মহম্মদ নওয়াজকে। টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার মর্যাদা দেন এই স্পিনার অলরাউন্ডার। দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতে বাইশ গজে রীতিমতো তান্ডব চালান। নওয়াজের তান্ডবের সামনে দিশা খুঁজে পাননি যুজবেন্দ্র চাহাল (১/৪৩), হার্দিক পান্ডিয়ারা (১/৪৪)। রিজওয়ান ও নওয়াজের জুটিতে ৪১ বলে ওঠে ৭৩। ১৬ তম ওভারে জুটি ভাঙেন ভুবনেশ্বর কুমার। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফ বাউন্ডারির ধারে দীপক হুডার হাতে ক্যাচ দেন নওয়াজ। ২০ বলে তিনি করেন ৪২।
পাকিস্তান ওপেনার মহম্মদ রিজওয়ানেরর কথাও আলাদা করে বলতে হবে। বাবর আজম শুরুতে ফিরে যাওয়ার পর অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। উইকেটকিপিং করার সময় পায়ের পেশিতে টান লেগেছিল রিজওয়ানের। চোট নিয়েই দুর্দান্ত লড়াই করেন। শেষ পর্যন্ত ৫১ বলে ৭১ রান করে হার্দিকের বলে সূর্যকুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। জয় থেকে পাকিস্তান তখন ৩৫ রান দূরে। জঘন্য বোলিং করলেও রিজওয়ানকে তুলে নিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন হার্দিক।
রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আসিফ আলির সহজ ক্যাচ ফেলে আবার পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান অর্শদীপ। উনিশতম ওভারে ভুবনেশ্বরের বলে ১৯ রান নিয়ে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন খুশদিল শাহ (অপরাজিত ১৪) ও আসিফ আলি (১৬)। শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ৭। চতুর্থ বলে আসিফকে তুলে নিয়ে নাটক জমিয়ে দেন অর্শদীপ। শেষপর্যন্ত ইফতিকার আমেদ পঞ্চম বলে ২ রান নিয়ে পাকিস্তানকে জয় এনে দেন। ১ বল বাকি থাকতে ১৮২/৪ তুলে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান।
❤ Support Us