- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
দুর্গাপুজোয় শহরজুড়ে যথেচ্ছ আলোর রোশনাই নয়, কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন পাবে !

২০২৩-এর দুর্গাপুজোয় কলকাতার বিদ্যুৎ খরচ কমাতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভা চাইছে, কলকাতার দুর্গাপুজোয় ৫০ % বিদ্যুৎ খরচ কমাতে। তাহলে কি এবার কলকাতার দুর্গাপুজোর সময় রাজপথে আলোর রোশনাই কমে যাবে? এই চিন্তায় এখন পুজো উদ্যোক্তারা। এদিকে আজ সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখ। অক্টোবর মাস পড়তে আর ১০ দিন বাকি। ১৪ অক্টোবর মহালয়া, ওই দিন থেকেই কলকাতা সহ গোটা রাজ্য মেতে উঠবে উৎসবের আনন্দে। এই উৎসবে প্রত্যেক বছর গোটা মহানগরী সেজে ওঠে আলোর রোশনাইয়ে। রঙিন আলোয় ঢেকে যায় কলকাতার চার দিক। তাহইলে কী কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে কলকাতায় পুজোয় আলোর ঝলক বিগত বছরের মতো থাকবে না? কলকাতা পুরসভা চাইছে যতটা প্রয়োজন ততটাই এল থাকুক পুজো মণ্ডপে, বাড়তি আলো নয়। তবে কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন পাবে তো? না কী কলকাতার রাজপথে পার্কিং ফি বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পরে তা প্রত্যাহার করার মতো দুর্গাপুজোয় আলোর রোশনাই কমাবার সিদ্ধান্ত থেকে কলকাতা পুরসভা আবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন না পেয়ে পিছনে শর্তে বাধ্য হবে, কারণ কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়া!
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রত্যেক বছর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা থেকে শুরু করে বিখ্যাত দুর্গাপুজো ও সংলগ্ন এলাকায় বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া শহরের নানা ওয়ার্ডের একাধিক জায়গায় আলোর মালয় ঢেকে দেওয়া হয়। আবার পুলিশও কিছু জায়গায় বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করে থাকে। দইঘাট থেকে রতনবাবুর ঘাট পর্যন্ত নানা ঘাটে বাড়তি আলোর ব্যবস্থা থাকে। তার জেরে প্রত্যেক বছর অন্তত দেড় কোটি টাকা বাড়তি খরচ হয় কলকাতা পুরসভার। এবার এই বিপুল অর্থ খরচ থেকে নিজেদের সরিয়ে আন্তে চাইছে কলকাতা পুরসভা। অন্তত ৫০ শতাংশ খরচ কমানোর চেষ্টা করছে কলকাতা পুরসভা।
প্রশ্ন হচ্ছে, কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত কী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন পাবে? কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হৃত্যাগে তকমা পেয়েছে। রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুৎ খরচের একটা বড় অংশ ছাড় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রাণের অনুষ্ঠান দুর্গাপুজো। তিনি নিজে কলকাতার বেশিরভাগ পুজো উদ্বোধন করেন। মহালয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার পুজো উদ্বোধন করে দেন। তাই কলকাতা পুরসভার এই ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন পায় কী না সেটাই দেখার।
এদিকে কলকাতা পুরসভা শহরজুড়ে দেদার আলোর রোশনাই থেকে সরে আসতে চাওয়ায় কাউন্সিলরদের একাংশ অসন্তুষ্ট। তবে এই সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার শীর্ষ কর্তৃপক্ষের বলে সবাই এখন চুপ আছেন। এটা সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অত্যন্ত দরকার ছিল বলে মনে করছেন পুরসভার অফিসাররা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অফিসার বলেন, “এই বছর রাজ্য সরকার চাঁদার অঙ্ক বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করেছে। দুর্গাপুজো কমিটিগুলির বিজ্ঞাপন খরচে ছাড় এবং বিদ্যুৎ খরচের ছাড় বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই দুর্গাপুজো কমিটিগুলি নিজেরা নিজেদের এলাকায় বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করুক এটাই চায় পুরসভা। তাতে পুরসভার কোষাগারের চাপ কমবে।”
অন্যদিকে এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে। এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সি বলেন, “দুর্গাপুজোয় শহরের বিভিন্ন রাস্তা, গলি পুরসভা আলো দিয়ে সাজাবে ঠিকই। কিন্তু এখন কলকাতা পুরসভার আর্থিক অবস্থা আগের মতো নয়। তাই এই বছর চেষ্টা করছি আলোর খরচ যতটা কমানো যায়। তবে যেখানে সত্যি আলোর প্রয়োজন সেখানে অবশ্যই বাড়তি আলো দেওয়া হবে।” কিন্তু বাংলার, বাঙলির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোয় আলোর ঝলক থাকবে , পুরসভার এই সিদ্ধান্ত কী মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন পাবে? এর আগে পার্কিং ফিস বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন মেয়র । আবারও কী দুর্গাপুজোয় আলোর রোশনাই কমিয়ে তেমন কোনও পরিস্থিতির মুখে পড়তে চলেছে কলকাতা পুরসভা !
❤ Support Us