Advertisement
  • এই মুহূর্তে স | হ | জ | পা | ঠ
  • জুন ৯, ২০২৫

মহাকাশ অভিযানে ভারতের ঐতিহাসিক মুহূর্ত: আগামীকাল মহাশূন্যে পাড়ি দেবেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মহাকাশ অভিযানে ভারতের ঐতিহাসিক মুহূর্ত: আগামীকাল মহাশূন্যে পাড়ি দেবেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা

ভারতের মহাকাশ অনুসন্ধানের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে। সজীব প্রস্তুতি চলছে । আগামীকাল, ১০ জুন, গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা যুক্ত হবেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর জন্য আক্সিয়ম স্পেসের চতুর্থ বাণিজ্যিক মহাকাশ মিশনে। এ বছর ভারতের মহাকাশ অভিযানে যে নতুন ইতিহাস লেখা হতে চলেছে, তার অন্যতম অঙ্গ হতে চলেছে এই মিশন। ৪০ বছর পর ভারত আবার মহাশূন্য জয়ের দিকে।

লখনউ, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির শহর। এখন মহাকাশ অভিযানের জন্যও পরিচিত হয়ে উঠেছে। শহরের নানা প্রান্তে শোভা পাচ্ছে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার পোস্টার। তাঁর মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উল্লাসের পাশাপাশি, শহরবাসীও ঘরের ছেলের এমন দুঃসাহসিক অভিযানে গর্বিত, উত্তেজিত। শুভাংশু শুক্লার বাবা শম্ভু দয়াল শুক্লা জানিয়েছেন, ‘শুধু পরিবার নয়, পুরো দেশ গর্বিত। ৪০ বছর পর ভারতের মহাকাশ অভিযানে ভারতের একজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন—এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’

আগামীকাল ভারতীয় সময় সকাল ৮:২২ মিনিটে, নাসা’র কেনেডি স্পেস সেন্টার, ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপিত হবে শুভাংশু শুক্লাদের মহাকাশযান। শুভাংশুর সাথে যাত্রা করবেন আইএসএস মিশনের কমান্ডার পেগি হুইটসন, হাঙ্গেরির তিবর কাপু আর পোল্যান্ডের স্লাওসজ উজনানস্কি-উইসনিয়েভস্কি। সবার লক্ষ্য একটাই—আইএসএস বা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সফলভাবে ‘ডকিং’ করা। এই মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে একে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, এই অভিযানেই প্রথম বার উড়তে চলেছে ‘ড্রাগন’। চার সদস্যকে নিয়ে এই অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন শুভাংশু। তিনিই মহাকাশযানটি পরিচালনা করবেন। পূর্বে এএন-৩২, জাগুয়ার, হক, মিগ-২১, সু-৩০-সহ নানা ধরনের যুদ্ধবিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে শুভাংশুর। কিন্তু মহাকাশযান এই প্রথম। এ জন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে তাঁকে। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার ঐতিহাসিক মহাকাশ অভিযানের পর, ভারতের মহাকাশ অভিযান ছিল দীর্ঘ বিরতির ছায়ায় আছন্ন ছিল। তবে, শুভাংশু শুক্লার এই মিশন ভারতকে আবার মহাকাশে ফিরিয়ে আনছে, দেশের জন্য এক অনন্য, বিশেষ অর্জন।

এই মিশনে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শুভাংশু শুক্লা আইএসআরও-ডিবিটি উদ্যোগের আওতায় সাতটি ভারতনেতৃত্বাধীন পরীক্ষা চালাবেন, যার মধ্যে মাইক্রোগ্রাভিটিতে মেথি ও মুগ ডাল চারা উৎপন্ন করা অন্যতম। এ ছাড়া, তাঁরা ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা তৈরি করার লক্ষ্যে গবেষণা চালাবেন। ভারতীয় মহাকাশচারী তাঁর ব্যোমযাত্রার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আইএসএসে এক উচ্চপ্রোফাইল ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে এই বৈঠক ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার জন্য একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। ছাত্রদের সঙ্গে শুভাংশু শুক্লার কথপোকথনও এই মিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অংশ।

জানা যাচ্ছে, আক্সিয়ম-৪ মিশনে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো’র তরফে ৫৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি ভারতের ‘গগনযান’ মিশনের প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, ২০২৭ সালে ভারতীয় মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা হল ‘গগনযান’ প্রকল্প। তার প্রস্তুতির জন্য শুভাংশু শুক্লার অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানাচ্ছেন ইসরোর কর্মকর্তারা। তাই এই মিশন শুধু একটি মহাকাশ অভিযানে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি ভারতের মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যতের নতুন সূচনা।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!