Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • ডিসেম্বর ১৬, ২০২২

বিজয় দিবসের অর্ধ শতক অতিক্রান্ত।স্মরণে, শ্রদ্ধার উদযাপনে সামিল ভারত বাংলাদেশ

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বিজয় দিবসের অর্ধ শতক অতিক্রান্ত।স্মরণে, শ্রদ্ধার উদযাপনে সামিল ভারত বাংলাদেশ

বিজয় দিবসে শহীদ সেনাদের সম্মান জানাল ভারতীয় সেনা। শুক্রবার তিনি বাহিনীর প্রধান সহ চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান দিল্লীতে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল-এ যান। সেখানেই নিহত সেনাদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়লাভের ৫১ তম বর্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভারতীয় সেনা। সেই যুদ্ধে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের একাধিক ছবিও পোস্ট করা হয়েছে টুইটারে। বিজয় দিবসের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে নিহত জওয়ানদের স্মরণ করেছেন। টুইট করে তিনি লেখেন, ‘১৯৭১-র যুদ্ধ জয়কে ভারত কোনও দিনও ভুলবে না।’ প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ভারতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে বিজয় দিবস পালনের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন । শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘সেনার সাহস, শৌর্য ও আত্মবলিদানকে স্যালুট করে দেশ। ১৯৭১-র যুদ্ধ ছিল অমানবিকতার বিরুদ্ধে মানবিকতার জয়। অন্যায়কে সরিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা। সেনাবাহিনীর জন্য গর্ব করে ভারত।’ দিনটিকে স্মরণ করে টুইটারে পোস্ট করেছেন সাধারণ মানুষও।

 

ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের ৩৬ জন ভারতীয় সেনা। বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশে সফররত ভারতের প্রতিনিধি দলটি সেনা সদরের অনির্বাণ শিখায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে ঢাকায় বনানীর নৌ সদর দফতরে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবালের সঙ্গে তারা সৌজন্য বিনিময় করেন। ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট অনিল কুমার লাম্বার নেতৃত্ব তারা যোগ দিয়েছিলেন। সাগরিকা সভাঘরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুদ্ধের বিভিন্ন ভয়ঙ্কর ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন অনিল। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। শুক্রবার বিজয় দিবস কুচকাওয়াজেও অংশ নেবেন তারা।

কলকাতাতেও বৃহস্পতিবার বিজয় উৎসব উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিন দিন ব্যাপী এক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছে। আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন উপ- হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। এই অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ৫১ বছর; অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যত’ শীর্ষক একটি আলোচনায় যোগ দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মহম্মদ শাহ আজম, স্টেটসম্যানের প্রাক্তন সম্পাদক মানস ঘোষ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় ১৯৭০ সালের মার্চ মাসে। পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে জয় লাভ করেন আওয়ামী লিগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান থেকে একজন বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রী রূপে সেনা শাসনে থাকা পাকিস্তান মেনে নিতে অস্বীকার করে। প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানে গণ আন্দোলন শুরু হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় পাক সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন। যার প্রকাশ পায় অপারেশানসার্চ লাইট অভিযানে। এই অভিযানে নিহত হন প্রায় ৩০ লক্ষ বাংলাদেশি । এরপর ভারতের সাহায্যে মুক্তিবাহিনী গঠন করে বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।

প্রসঙ্গত ১৯৭১ এর ৩ ডিসেম্বর ভারতের ওপর পাকিস্তান সেনা আক্রমণ করলে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী ভারত-পাক যুদ্ধ। জেনারেল শ্যাম মানেক শ-র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় সেনা মাত্র ১৩ দিনের মাথায় পাকিস্তান সেনাকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন। ১৬ ই ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাক জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি। যুদ্ধে বন্দি হয় ৯৩০০০ এর বেশি পাক সেনা। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বাধিক। পূর্ব পাকিস্তান এভাবেই ইসলামাবাদের হাতছাড়া হয়ে জন্ম নেয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!