Advertisement
  • দে । শ
  • জুন ২০, ২০২৪

উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল, মেধাবী থ্যালাসেমিকের চিকিৎসা ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন মন্ত্রী স্বপন

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল, মেধাবী থ্যালাসেমিকের চিকিৎসা ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন মন্ত্রী স্বপন

একদিকে শারীরিক কষ্ট। আরেক দিকে অর্থকষ্ট। জোড়া বাধা জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করেছে কালনার রানিবন্ধ গ্রামের রূপম মণ্ডল। স্থানীয় কাঁকুড়িয়া দেশবন্ধু উচ্চবিদ্যালয় থেকে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করা হতদরিদ্র রূপমের চিকিৎসা ও উচ্চশিক্ষার খরচ চলবে কীভাবে ভেবে দিশেহারা তার পরিবার। এই খবর পেয়ে রূপমের চিকিৎসা ও লেখাপড়ার যাবতীয় ব্যয়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। স্বপনবাবু বললেন, ‘রূপম আমার বিধানসভার গর্ব। তাকে নিয়মিত রক্ত নিতে হয়। সেইসঙ্গে অনেক ওষুধপত্র লাগে। লেখাপড়ার ইচ্ছেও প্রবল। বাধা একটাই, অর্থ। এসব জেনে আমি ওকে বলেছি, লেখাপড়া আর চিকিৎসার জন্য তোমার মা-বাবার আর একটা কানাকড়িও লাগবে না। সব দায়িত্ব আমার।’ রূপমের বাড়িতে গিয়ে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই সংশ্লিষ্ট বর্ধমান পূর্ব লোকসভার তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শর্মিলা সরকারকে ফোন করেন স্বপনবাবু। বলেন, ‘রূপমকে একজন ভালো হেমাটোলজিস্টের কাছে দেখানোর’ ব্যবস্থা করতে।

ছেলের পাশে এভাবে সব ধরনের সাহায্য নিয়ে মন্ত্রী স্বপনবাবু দাঁড়ানোয় অভিভূত রূপমের পরিবার। রূপমের বাবা তাপস মণ্ডল বললেন, ‘ছেলেটাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছি। যেটুকু রোজগার হয়, তাতে দু’বেলা দু’মুঠো খাবারটাই ঠিকঠাক জোটে না। অথচ পড়ার সাধ ষোল আনা।’ মন্ত্রীর আশ্বাসে চোখে জল রূপমের মা রিঙ্কু দেবীর। তিনি বললেন, ‘মন্ত্রীমশাই পাশে দাঁড়ানোয় ছেলের চিকিৎসা আর লেখাপড়া দুটোই হবে। মন্ত্রীকে যে কী বলে কৃতজ্ঞতা জানাব, ভাষা হারিয়ে ফেলছি।’

উচ্চমাধ্যমিকের কলা বিভাগের ছাত্র রূপম ৪৫৮ পেয়েছে। রূপমরা খুবই গরিব। কোনোরকমে মাথা গোঁজার জন্য একটি বাড়ি আর ২৫ কাঠা জমি সম্বল। বাবা প্রান্তিক চাষি আর মা অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষিকা। ২০০৮ সালে রূপমের থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে। সেই থেকে কলকাতায় গিয়ে কখনও বিনামূল্যে, কখনও অর্থের বিনিময়ে ২১ দিন অন্তর রক্তরপরিবর্তন করা শুরু হয় রূপমের। এর ফলে রূপমদের সংসারে অর্থকষ্ট বাড়তেই থাকে। অসুখ আর অর্থকষ্ট, জোড়া বিপদের মধ্যেও রূপম দাঁতে দাঁত চেপে লেখাপড়াটা চালিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কয়েকজন আত্মীয় রূপমের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রূপমের উচ্চশিক্ষার ইচ্ছে পূরণের জন্য মন্ত্রী স্বপনবাবু পাশে দাঁড়ানোয় অভিভূত রূপমের কথায়, ‘মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে দুশ্চিন্তা কমল।’ রূপমের স্কুলের শিক্ষক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘রূপম শারীরিক সমস্যার কারণে রোজ স্কুলে আসতে পারত না। অনেক সময় শারীরিক সমস্যার কারণে স্কুল চলাকালীন বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে। এত বাধার মধ্যেও যেভাবে পড়াশোনাটা চালিয়েছে, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।’


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!