Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ২০, ২০২৩

রাজ্য ও কমিশনের এসএলপি খারিজ । হাইকোর্টের নির্দেশে বহাল রাখল শীর্ষ আদালত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতেই

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
রাজ্য ও কমিশনের এসএলপি খারিজ । হাইকোর্টের নির্দেশে বহাল রাখল শীর্ষ আদালত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতেই

পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাহিনী মামলায় শীর্ষ আদালতে জোর ধাক্কা খেলো রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিল। এর ফলে হাইকোর্টের নির্দেশ মতো সারা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করার হাইকোর্টের নির্দেশকেই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে এবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে হবে কমিশনকে।

মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, “নির্বাচন করা মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়।” ২০১৩, ২০১৮- র পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিচারপতি জানতে চান, রাজ্যে পযাপ্ত পুলিশ নেই বলে আধ ডজন রাজ্য থেকে পুলিশ চাইছেন। তার মানে রাজ্যে পর্যাপ্ত পুলিশ একদিনে ভোট করার জন্য নেই। তাহলে কেন হাইকোর্টে সেটা না জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এসেছেন?
বিরোধী দলনেতার পক্ষের আইনজীবি মনিশ সালভে বলেন, মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে রাজ্যে খুন, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। কমিশন কোনও রকম প্রস্তুতি না নিয়েই নির্বাচন ঘোষণা করে।
রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী মীনাক্ষী অরোরা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন।
শেষ পর্যন্ত রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত।

২০১৩ সালে মীরা পাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে লড়াই করে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন করিয়েছিলেন। আর তার ঠিক ১০ বছর পর ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরোধীতা করে শীর্ষ আদালতে গিয়ে মুখ পোড়ালেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।

শীর্ষ আদালত এদিন তাদের পর্যবেক্ষণে বলে, কমিশন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করাবে, মনোনয়ন থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত শান্তিতে কাজটা সমাধান করতে হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে একদিনে পঞ্চায়েত নির্বাচন করার মতো পর্যাপ্ত বাহিনী নেই। তাই কমিশনের উচিত ছিল, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রের খরচে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রাজ্যে শান্তিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন করা, সেটা না করে কমিশন কেন এসএলপি করল শীর্ষ আদালতে?

এদিকে শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পর সিপিএম নেতা, সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে কমিশন ও রাজ্য শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল। জানাই ছিল জনগণের টাকায় করা এই এসএলপি শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়ে যাবে।”

প্রসঙ্গত কলকাতা হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দেয়, কমিশনের চিহ্নিত স্পর্শকাতর ৭টি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে। তার পরে সেই নির্দেশকে মান্যতা না দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায়। গত বৃহস্পতিবার এই মামলা আবার কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রের কাছে কমিশন বাহিনী চাক। রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যায়। শেষ পর্যন্ত আবার আজ সেই মঙ্গলবারই রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এসএলপি কেন করা হয়েছে তা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রকে প্রশ্ন করে শেষ পর্যন্ত রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এসএলপি খারিজ করে হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখে। শীর্ষ আদালত প্রশ্ন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সম্পর্ক কি? কমিশনের তো দায় শান্তিতে নির্বাচন করা। তারা কি ভাবে এসএলপি করে? পাল্টা সুপ্রিম কোর্ট বলে, “নির্বাচন মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়। ২০১৩, ২০১৮ তেও রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংঘর্ষ, হিংসা হয়েছে। এই বছরও মনেনয়ন নিয়ে হিংসা হয়েছে। কমিশন ৬টি রাজ্য থেকে পুলিশ চাইতে পারে অথচ বিনা পয়সায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মানতে চাইছে না কমিশন!
এর পর শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনের কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চাইতে হবে শান্তিতে নির্বাচন করানোর জন্য।
রাজ্যের তরফে এদিন শীর্ষ আদালতে জানানো হয় শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাই রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে না। এটাই ছিল রাজ্য ও কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী না চাওয়ার প্রধান যুক্তি। কমিশন এদিন সওয়ালে জানায়, ৬১ হাজার ৬৩৬টি বুথের মধ্যে ১৮৯টি বুথ স্পর্শকাতর। শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরোধীতায় কোনও যুক্তিই টিকল না।
তবে মীরা পাণ্ডের হাতে পরিচালিত কেন্দ্রীয় বাহিনী যে ভাবে ২০১৩ র পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ করেছিল বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার পরিচালনায় সেই ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগানো হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেন না মীরা পাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন আর রাজীব সিনহা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরোধীতা করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে মুখ পুড়িয়েছেন।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!