Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ২৭, ২০২৩

৭৬ হাজার প্রার্থীর মনোনয়ন ৮ ঘণ্টায় কী করে সম্ভব? পঞ্চায়েত নিয়ে আবার হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা । ফের শুনানি, বুধবার

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
৭৬ হাজার প্রার্থীর মনোনয়ন ৮ ঘণ্টায় কী করে সম্ভব? পঞ্চায়েত নিয়ে আবার হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা । ফের শুনানি, বুধবার

পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মামলার জট যেন কাটছেই না। বুধবার রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আরও একটি নতুন জনস্বার্থ মামলা হল হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার এই মামলার শুনানি হয়। এইনজনস্বার্থ মামলা করেন উজ্জ্বল ত্রিবেদী এবং গণতন্ত্র বাঁচাও নামে একটি নাগরিক সংগঠন। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য হয়েছে।

হাইকোর্টে মামলাকারীরা তাঁদের আবেদনে জানিয়েছেন, যাঁরা মনোনয়ন দিতে পারেননি, তাঁদের নতুন করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এত কম সময়ে কী করে ৭৬ হাজার মনোনয়ন দাখিল হল তা নিয়ে তদন্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি, মিথ্যা মামলা থেকে বিরোধী প্রার্থীদের মুক্তির দাবিও মামলাকারীরা করেছেন এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপেরও দাবি জানিয়ে তদন্ত চাওয়া হয়েছে।

মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং শামিম আহমেদ সওয়ালে বলেন, রাজ্যের নানা জায়গায় মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। দাসপুরে পুলিশ এক মহিলাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করেছে। হাই কোর্টের নির্দেশে এসকর্ট করে নিয়ে গিয়েও সময়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়নি। একটি মামলায় প্রার্থীর নথিবিকৃতির অভিযোগও রয়েছে। আইজীবীদের সওয়াল, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, এই ভোটে রাজ্য প্রশাসনের হাতে অনেক ক্ষমতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা যথাযথ নয়। যাঁরা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হোক। ওই সব এলাকায় নতুন করে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। আবার সুযোগ দেওয়া হোক যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাঁদের। আট ঘণ্টায় ৭৬ হাজার মনোনয়ন দাখিল করা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল প্রশাসনিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এই কাজ করেছে।

এই প্রসঙ্গে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় কমিশনের আইনজীবী তাঁর সওয়ালে বলোন, ‘‘এই মামলায় বলা হয়েছে, শেষ দিনে বিশাল সংখ্যক মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই বিষয়গুলি সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা। পুরো মামলাটি করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের খবরের উপর ভিত্তি করে। শাসকদল যদি স্বল্প সময়ে বেশি মনোনয়ন জমা দেয় সেখানে কমিশনের কী করার আছে? এই বিষয়টি কমিশনের বোধগম্য নয়। এখানে কী ভাবে নির্বাচন বাতিলের প্রসঙ্গ উঠতে পারে!’’

প্রধান বিচারপতি জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের হার ৯.১ শতাংশ কম। তার পরেই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁর সওয়ালে বলেন, কেন ১০ শতাংশ আসনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবে একটি দল? কেন ১০০ শতাংশ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা যাবে না? বিদেশ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটাও কি ঠিক ? প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কোথায় এটা হয়েছে? বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জবাবে  বলেন, ‘‘মিনাখাঁ।’’

এর পরেই বলতে ওঠেন কমিশনের আইনজীবী জিষ্ণু সাহা। তিনি জানান, কিছু পরিস্থিতি বা ঘটনার জন্য আদালত কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছে। কমিশন অনেকাংশে ওই পরিস্থিতির প্রতিকার করেছে। মনোনয়নের শেষ দিনে আদালতের হস্তক্ষেপের জন্য অনেককে সময় দেওয়া হয়েছে। চোপড়ার বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে খানিকটা দূরে হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এমন কোনও ঘটনা নেই যেখানে কমিশন জেনেও চুপ করে রয়েছে।’’

এর পাশাপাশি কমিশনের আইনজীবী জানান, মামলায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনার দায়িত্ব নিয়েই তড়িঘড়ি ভোট ঘোষণা করেছেন। এটি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ অগস্টের মধ্যে নির্বাচন করা দরকার ছিল। সামগ্রিক ভাবে সমস্ত অভিযোগ নিয়ে কমিশনের আইনজীবী জানান, যা যা অভিযোগ করা হয়েছে সবই পুরনো। খুনের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছেন। নির্দিষ্ট করে কোনও ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়নি যে মনোনয়ন দাখিল করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কে, কারা, কোথায়, কেন বাধা দিয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে চলেছি। অশান্তির কারণে তৃণমূলের সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পরেও কোর্ট যদি তদন্তের নির্দেশ দেয়, আপত্তি নেই। শেষে আদালত আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য  করেছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!