- গ | ল্প রোব-e-বর্ণ
- ডিসেম্বর ৮, ২০২৪
বেতো ঘোড়া

শীতের লালচে রোদে হিংস্রতা থাকে না বলে তা বড্ড মিঠে লাগে। কিন্তু আজ ব্যালকনির ফোকর ছুঁয়ে চুইয়ে আসা শীতলা রোদ দিশা হাসপাতালের করিডরকে আদরে ভরিয়ে তোলার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। বরং তা আছমানের ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে চলার মৃদু আওয়াজ মিশে যেন বিষাদময় করে তোলে। তাই শীতের দুপুরটা থমকে থাকে ! তার কলকল করে জল গড়িয়ে পড়া চোখদুটি প্রায় বুঁজিয়ে দেওয়া পুকুরের মধ্যে থেকে রসে পড়া মাটির দু’য়েক ফোটা জলের মতো, উদাস, প্রাণহীন। ডাক্তার শেখ হাফিজ ইতিমধ্যে রেটিনার নানান পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানিয়েছেন; কোন আশা নেই। তবু আছমানের বন্ধু হাছন আলি নাছোড়বান্দা। অনেক করে অনুরোধ করে, ডাক্তারবাবু কিছুই কি করা যাবে ন্যা ! হাজারহোক চোখ জিনিস তো ! যার চোক নাই তার কী আছে বুলেন ! ডাক্তার শেষবারের মতো রেটিনা, ম্যাকুলা, কর্নিয়া চেক আপ করে জানান; আছমানের গ্লুকোমা জনিত সমস্যা । শেষপর্যায়ে, চোখের দৃষ্টিশক্তি আর ফিরে পাওয়া যাবে না । কিছুই করার নেই মশাই। কী আর করার হাঁটুর বাঁধনে মাথাগুঁজে ফুপিয়ে চলা আছমানকে পিঠে হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেয় হাছন; কান্দ্যা কী হবে বুলধিনি ভাই ? যখুন সুমায় ছিল তখুন কিছু কল্লি ন্যা ! হাছনও কাঁদে, বন্ধুর জন্য, নিজের জন্যেও বোধকরি । বন্ধুর মুদে আসা দুই চোখের মধ্যে বুঝি নিজের ভবিষ্যত দেখতে পায়।
সেসব দিনের কথা আছমানের খুব মনে পড়ে ! সারা পাড়ায় সে ছিল মানুষের ত্রাশ । ভয়ে এলাকার মানুষ তার চোখে দেখেছে, তার মুখে খেয়েছে । মানুষ যে ক্যাবল তাকে ভয় করেছে, তেমনটা কিন্তু নয়, ভালোও বেসেছে ! সেও তো মানুষকে কম ভালোবাসেনি । গ্রামবাসির মাথার ওপর আছমান যেন আসমান হয়ে ছায়া দিয়েছে চিরকাল ! তা না হলে সারা মুলুকে একজন মানুষের এতো গ্রহণযোগ্যতা হতে যাবে কোন্ দুঃখে ! রাজনৈতিক নেতারা চেয়েছে আছমানকে কাছে টেনে ক্ষমতার রাশ নিজেদের হাতে বাঁধতে । আর জনগণ চেয়েছে আছমানকে ভালোবেসে নিজেদের আখের গোছাতে । সেই তো ঠিক করে দেয়, এলাকায় কে বাড়ি পাবে, কার নামে পায়খানা আসবে, কে একশো দিনের কাজের কার্ড পাবে, কে পাবে না ! একজন কুখ্যাত লোক শক্তি দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে মানুষকে বশে আনে কিন্তু মন জয় করতে পারে ক’জন ! এ কথা যেমন ঠিক তেমনি দলের হয়ে তাকে কী না করতে হয়েছে ! কম খারাপ কাজ করতে হয়নি ! রাজনীতি তার বাপ দাদোর সম্পত্তি নয় ঠিকই, তবু রাজনীতির ছত্রছায়ায় তার পুরোজীবন হাওয়া বাতাস খেয়েছে । সেই যৌবন থেকে এলাকার যত বুথ তার দখলে । প্রথমদিকে অবশ্য অন্যের অধিনে কাজ করত, বোমা বাঁধত, পিস্তল কোমরে গুঁজে ভোট করত । পরে কাজের গুনে এলাকার নিয়ন্ত্রণ তার হাতের মুঠোয় আসে । তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি । এলাকার যত মাস্তান তার কথায় ওঠবস করে । কোন বুথে কত বোমা বাঁধানো হবে, কোন গ্রামের বুথ কে রিগিং করবে , ভোটের আগেররাতে কার কার বাড়ি লুঙ্গি,কাপড় পৌছে দিতে হবে, কার বাড়ি চালডাল নাই সব আছমানের নখদর্পণে ।
সময়কে নিজের আলিঙ্গনে কেউ চেপে রাখতে পারে না । পারেনি আছমানও । সময়ের কাছে নতিস্বীকার করতে হয়েছে একসময়। এবার পঞ্চায়েত ভোট নাকের ডগায় চেপে বসে । অন্যবারের মতো আলগোছে নিতে পারে না তারা । তাই আছমানের দলের লোকের শিরেসংক্রান্তি। জরুরি আলোচনা ডাকা হয়; কিন্তু আছমান আত্মবিশ্বাসী, তারাই জিতবে । বিরোধী দলের কাছে সে খুন,যখম, লুটপাট আর রাহাজানির পাণ্ডা হলেও তার সব কাজ তো আসলে মানুষের জন্যই । তাই জনগণ তাদের দিকেই আছে । নিজে মনে করে, একশো মানুষের ভালো করতে গেলে দশজুনার খারাপ হবে, অতো ভাবতে গেলে রাজনীতি হবে ন্যা ! আমাহের ক্ষমতায় থাকা হবে ন্যা ! মানুষ কুণ্ডা ভালো , কুণ্ডা খারাপ বুঝতে হবে ন্যা ? মানুষকে বুঝাতে য্যায়ে না বুঝলে দু’চার থাপ্পড় দিতেই হয়, নাহালে হারামখোররা সংশোধন হয় ন্যা যে । আরে যে পাটি বস্তা বস্তা চাল-ডাল দিছে, ইজ্জত ঢাকতে কাপুড় দিচ্ছে তার হয়ে কাজ করবি ন্যা, তাকে ভোট দিতে হবে ন্যা ! মানুষ বড্ড নিমুকহারাম, ভোটের আগের রাতে যে হাতে গরম মাল দিব্যে, ভোট তার ! কথাগুলো একদমে বলেই ফ্যাসফ্যাস করে হেসে ওঠে আছমান। মেম্বার রুব্বান কানের কাছে মুখ ফিসফিসিয়ে বলে, আছমান ভাই এবের দলের পরিস্থিতি খুব খারাপ, আর মুনে হয় ফিরতে পারবে ন্যা ! আছমান চোখ টিপে নিজেকে দেখায়, মানে আমি আছি তো চিন্তা করো ক্যানে ! আমরাই ফিরব । আশা নিয়ে দলের লোক কাজ করে যায় কিন্তু বুকের বেলুনের ঝিম ধরে থাকা আত্মবিশ্বাস আসতে আসতে বেরিয়ে যেতে থাকে ।
মাঠভর্তি সবুজ ধানের ওপর যেমন বাতাস খেলে যায় ঠিক তেমনি মাথাগুলো এলোমেলো হয়ে ঘুরতে থাকে। ঘনঘন লাশভর্তি হল্লা গাড়ি হুটার বাজিয়ে ঢোকে । চাপা জনতার ভিড় আসতে আসতে সরে যায়, সরে গিয়ে ঢোকার রাস্তা করে দেয় । জ্যান্ত জনতার ভিড়ের যোনি ছিড়ে মরা মানুষের নিথর দেহের স্তূপ জমে ওঠে । চারিদিকে হাহাকার
ভোট কোন স্রোতে বইতে থাকে আছমান ঠাওর করে । দিনরাত সারা ব্লকে দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে। সত্যিই তো মনে হচ্ছে, মানুষ বাগে আসছে না , তবে কি তার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল ! জোর করে শ্বাসটানে বুকের খাঁজে , শরীরকে চাঙ্গা করে আবার ছুটতে থাকে। কিছু ভুলত্রুটি হয়েছে নিশ্চয় ভেবে অনুশোচনায় দগ্ধ হতে থাকে । দল পূর্ণ সমর্থন, গাড়ি, অস্ত্র, লোকবল কী সাপ্লাই দেয়নি । আছমান যা চেয়েছে তাই করেছে । তার কথায় সাত হাজার বোমা বাঁধা হয়েছে। বুথস্তরের নেতারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সারারাত মিটিং , দফায় দফায় গোপন বৈঠক করে দলের কর্মিদের মনোবল বাড়াতে থাকে । ওপর মহলের কড়া হুকুম, তেরোটা অঞ্চলই চায়। ফলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় আছমানের । পাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে হুমকি দেওয়া হয়, অন্য চিহ্নে ভোট পড়লে জান কবুজ করে নেবে আছমান । তবু মানুষকে টলান যাচ্ছে না এবার, সমস্ত বুথসভাপতিদের ডেকে ব্যাগ ভরে পাঠিয়ে দেওয়া হল রক্ত খাওয়ার যন্ত্র। শতাধিক মাস্তান হায়ার করা হয় । পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঝাকে ঝাকে মানুষ ঢোকে । রক্ত চায় রক্ত ! তবেই হনহন করে ভোটও দৌড়ে আসবে ঘরে।
ভোটেরদিন সকালে মেজাজ হারায় আছমান । ভৈরবের পঙ্কিল জল হয়ে ওঠে জবার মতো লাল। একের পর এক লাশ এসে জমা হয় থানার ছঞ্চে জুড়ে। সাদা সাদা পলিথিনে জড়ানো কালছে হয়ে ওঠা সব লাশের শরীর । কারও মুখ খোলা কারও হাত উঁচানো, কারও চোখ খোলা। শরীরের দখল নিতে মৃত্যুকেও বোধকরি কম লড়াই করতে হয়নি ! লাশের গন্ধে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমেছে থানায় । লাশের দলের পরিচয় নিয়ে শুরু হয় মালিকানার লড়াই । থানার ছোট্ট চত্ত্বরে কেবল কালো কালো মাথার সেকি এলোমেলো ঢেউ । মাঠভর্তি সবুজ ধানের ওপর যেমন বাতাস খেলে যায় ঠিক তেমনি মাথাগুলো এলোমেলো হয়ে ঘুরতে থাকে। ঘনঘন লাশভর্তি হল্লা গাড়ি হুটার বাজিয়ে ঢোকে । চাপা জনতার ভিড় আসতে আসতে সরে যায়, সরে গিয়ে ঢোকার রাস্তা করে দেয়। জ্যান্ত জনতার ভিড়ের যোনি ছিড়ে মরা মানুষের নিথর দেহের স্তূপ জমে ওঠে । চারিদিকে হাহাকার -কান্না, কারও সন্তান , কারও বাবা, কারও ভাই । একটা ছোট্ট শিশুর লাশ পড়ে আছে শেষ প্রান্তে । রাস্তায় খেলতে বেরায় তখনই বোমাটা ওরপাশে এসে পড়ে , আল্লা বলারও সময় পায়নি । থানাজুড়ে স্লোগান উঠল, সরকারের কালো হাত গুড়িয়ে দাও গুড়িয়ে দাও । সরকার পক্ষের দিক থেকেও আওয়াজ উঠল, “শালাহেরে মার, ওরাই কলল সারা মুল্লক ছারখার।” লাশের সারির পাশে মেতে উঠল দুই পক্ষ হাতাহাতিতে । পুলিশ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে । তা না হলে আরও কত যে দেহ পড়ত ! তা ভেবেই মানুষের হাত পা শীল হয়ে যায় ।
ভোট শেষ, ফল ত্রিশঙ্কু । কে বোর্ড গঠন করবে তা নিয়ে জল ঘোলা শুরু হয়, যে দলের সাথে এতো মারদাঙ্গা, রক্ত ঝরাঝরি তাদের সমর্থন করা নিয়ে দলের মধ্যে মতানৈক্য শুরু হয় । রুলিং দলের বোর্ড হলে মানুষের লাভ বেশি, তাই হলো বিরোধী জোট ভেঙে থানথান হয়ে গেল । এতো খুন, এতো রক্ত সব ছাপিয়ে গড়ে ওঠে নতুন পঞ্চায়েত । চক্রান্তের শিকার হল আছমান, নতুন বোর্ডে সে সম্পূর্ণ গুরুত্ব হারাল । মানুষের মাথার ওপর থেকে নেমে এলো পায়ের নীচে। যে আছমানের কথায় এলাকার হাওয়া বয়ত, আকাশে সূর্য উঠত তার নিয়ন্ত্রণের দড়ি অন্যজন ধরল । আছমানের পিছুনে লেলিয়ে দেওয়া হলো পুলিশ । সে পালিয়ে বেড়াতে বেড়াতে ফেরার হয়ে গেল। কলাবাগান, বাঁশবাগান, মাঠ, শ্মশানঘাট, কবরস্থান লুকিয়ে লুকিয়ে হয়ে পড়ল বনের মানুষ। লম্বা, চওড়া, ডাকাবুকো মানুষটা দিনকে দিন মুষড়ে গেল। যার জীবন কেটেছে মানুষের সমাদরে, কাজের মধ্যে তার দুঃসময়ে পাশে কেউ থাকল না। থাকেনি ভাই বোনও। নিঃসন্তান আছমান ভবঘুরের মতো ঘুরতে ঘুরতে শেষ সঞ্চয় হারিয়ে নিঃস্ব হয় পড়ে। এইসময় তার পুরানো একটা সমস্যা মাথা চাড়া দেয়। গ্লুকোমায় আক্রান্ত হয়ে ঝাপ্সা দেখতে থাকে। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকে। কিন্তু টাকার অভাবে ডাক্তার আর দেখানো হয়ে ওঠে না । চুপেচাপে অনেক নেতার সাথে সে দেখা করে কিন্তু কোন কাজ হয় না । তারপর চোখের অন্তর্বাহী রোগ একসময় দুই চোখ কুরে কুরে খেয়ে ফেলার কাজ সাঙ্গ করে ।
যে সব মানুষের জন্য জীবনকে বাজী রেখে লড়ে গিয়েছে, যেসব মানুষের জন্য নিজের সবটা দিয়েছে তারা মুখের খোঁজটুকুও নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি ! অথচ অন্য দলের কাছে সে বারবার ডাক পেয়েছে তবু আছমান যায়নি, মাথা নোয়াতে পারেনি। নিজের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে দুচোখে বাঁচার স্বপ্ন বুনেছে । কিন্তু সেই চোখই তো আজ যেতে বসেছে। আর কী নিয়ে স্বপ্ন দেখবে। গুমরে ওঠে মনের কোণে, ভিতরের কান্নাটা দমকা হাওয়ার মতো হুড়মুড় করে বেরিয়ে এসে সব ক্ষেদ-গ্লানি ভেঙেচুরে তছনছ করে দিতে চায় । মনের আঙ্গিনায় গুমরে ওঠে, তাহলে সেই কি ভুল ছিল ! নিজের আদর্শকে কোরবানী করে অন্য মতকে সেজদা দিতে পারেনি, সেটা কি তার ভুল ! আল্লা বলে চিৎকার করে ওঠে আছমান। হাছন বাইরে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল, ছুটে এসে বন্ধুর পাশে বসে । সে এতক্ষণ পরিচিত নেতাদের সাথে কথা বলে, সবাই এড়িয়ে যায়। একজন তো বলেই বসে, তুই কী করতে বুলছিস হাছনা ? উ সারাজীবন দলের হয়ে কাজ করেছ্যা টাকা লিয়েছ্যা , মাঙনা কাজ করেছ্যা নাকি ! আর আমি কি আমার চোখদুটি উপরে আছমান্যাকে দিয়ে আসব নাকি ? হাছন আর কিছুই বলতে পারেনি। সে বুঝেছে , সারা জীবন আছমানের ঘাড় ধরে ঘুরে বেড়ানো লোকগুলো আসলে ধান্দাবাজ ছিল । কিন্তু আছমান বেচারা, সারাজীবন মিথ্যা ভালোবাসার ছলনে ভুলে নিজেকে শেষ করে দিল। বিনিময়ে কী পেল !
আছমান, বন্ধুর হাত ধরে বাইরে এসে দাঁড়ায়। একদল কুকুরের চিতকারে চমকে উঠে দুজনেই। কী ব্যপার খুঁজতে আছমান মরিয়া হয়ে ওঠে। আঁধার হয়ে আসা পৃথিবীর আলো যেন প্রাণভোরে নিতে চায় আরও একটু, কিন্তু পূর্ণতেজি রোদের আলিংনেও চারপাশ ক্যামন ফ্যাকাশে দেখায় । পিট পিট করে তাকিয়ে থাকে আওয়াজের দিকে । অনেক চেষ্টার পরে বুঝতে পারে সামান্য দূরে একটা ঘোড়া মাটিতে শুয়ে আছে । শুয়ে শুয়ে শুকিয়ে আসা ঘাস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে । তাকে ঘিরেই কুকুরের দল অত্যাচার শুরু করেছে। নির্বিকার ঘোড়াটি নিরুপায় হয়ে চারদিকে তাকায় । আছমানের মনে পড়ে যায় ছোটবেলার কথা । তার বাবা একটি ঘোড়া পুষত । ঘোড়ার গাড়ি টানাত ওকে দিয়ে । কিন্তু একসময় ঘোড়াটি অক্ষম হয়ে পড়ল । পশু ডাক্তার জানান, ঘোড়াটির বাত হয়েছে । ও আর মাল টানতে পারবে না । তাই দীর্ঘদিনের সংসারের সহযোগীকে বিদায় দিয়ে নতুন ঘোড়া কিনে আনে । কিন্তু পুরানো ঘোড়াটি তাদের জন্য চাপ হয়ে গেল । সে গাড়ি টানতে পারে না অথচ নতুন ঘোড়ার খাবার খেয়ে নেয় । তাড়া মারলেও যেত না, কোথাও গেলেও ফিরে আসত। বাড়ির মানুষের কাছে সে একটা বোঝা । বেতো ঘোড়ার কোন কাজ নেই ! একদিন আছমান রেগে গিয়ে মোটা একটা তলতা বাঁশ দিয়ে খুব করে মার ধরল। সে দিনই মরে যেত ঘোড়াটা কিন্তু মরল সপ্তাহখানিক পরে। মনে পড়তেই বুকের মধ্যে হুহু করে ওঠে। মনের কথা সে কাকে জানাবে। বিবেকের দংশনে কুরে কুরে খেতে থাকল সে। আজ তার মনে হল; সময়ের কাছে আমরা সকলেই বেতো ঘোড়া ।
♦·♦–♦·♦♦·♦–♦·♦
❤ Support Us