- প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ৫, ২০২২
নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সাময়িক যুদ্ধ বিরতি রাশিয়ার!
রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভারতীয় সময় অনুযায়ী সাড়ে ১১টায় মস্কোর তরফে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করা হয়।
সাম্প্রতিক বৈঠকে দুই দেশের তরফেই যে মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হয়েছিল, সেই প্রস্তাব মেনেই সাময়িক যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করা হয়েছে।ইউক্রেনে রুশ হামলা বন্ধ করার অনুরোধ করা হচ্ছিল বিগত কয়েক দিন ধরেই, এবার সেই প্রস্তাবই মেনে নিল রাশিয়া। সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধারকার্যের জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করা হল। রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক বৈঠকে দুই দেশের তরফেই যে মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হয়েছিল, সেই প্রস্তাব মেনেই সাময়িক যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করা হয়েছে। রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৬টা নাগাদ (ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১১টা) রাশিয়ার তরফে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করা হয়। ইউক্রেন ও অন্যান্য দেশের সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য এই সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করা হয়েছে।
রাশিয়ার সংবাদসংস্থা স্পুটনিকের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন সকালে রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। আপাতত সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য এই বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কোনও হামলা চালাবে না রুশ সেনা। পাল্টা প্রত্যাঘাত করতে পারবে না ইউক্রেনও।
গত সপ্তাহ থেকে দুইবার মুখোমুখি বৈঠকেও বসেছে দুই দেশ। প্রথম বৈঠক বিশেষ ফলপ্রসূ না হলেও, চলতি সপ্তাহেই বেলারুশের সীমান্তে বৈঠকে বসে দুই দেশ। সেখানেই দেশের সাধারণ মানুষদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং দুই দেশই সেই প্রস্তাবে রাজি হয়। ওই দিন মানবিক করিডর নিয়ে বিশেষ কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হলেও, এদিন সকালে জানানো হয় সাময়িক যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করা হচ্ছে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য এই যুদ্ধবিরতি জারি করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যেই সংঘর্ষস্থলগুলি থেকে সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধার করে বের করে আনা হবে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, মারিউপোল ও ভলনোভাকায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ওই শহরগুলির নাগরিকদের নিরাপদভাবে শহর ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। এদিকে, ইউক্রেন সূত্রে জানা গিয়েছে, মারিউপোলে বিদ্যুৎ, জল, পরিবহন ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। খাবার সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবারই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে ইউক্রেনে এখনও দুই থেকে তিন হাজার ভারতীয় আটকে রয়েছেন। এদের মধ্যে ৭০০ জন সুমিতে এবং ৩০০ জন খারকিভে আটকে রয়েছেন। পূর্ব ইউক্রেনের এই জায়গাগুলিতেই মূলত সংঘর্ষ চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনার মধ্যে। তারমধ্যেই আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদভাবে বের করে আনা কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়ুয়াদের প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত অবধি নিয়ে আসার জন্য বাসের ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না।
ইউক্রেন জুড়ে কেবলই যুদ্ধের সাইরেন। মিলিটারি অপারেশন চালাচ্ছে রাশিয়ার সেনা। এরই মাঝে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যদি দাবি মেনে নিতে সম্মত থাকে তাহলে রাশিয়া এই যুদ্ধপরিস্থিতির কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রস্তুত।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে ইউক্রেনে এই যুদ্ধের কারণে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ জাহার মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন। রাশিয়ার হামলার মুখে পড়ে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, মলদোভা এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় খুঁজছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যুদ্ধে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খারকিভ, কিয়েভ, সামি, ম্যারিওপুল শহরগুলি।
ম্যারিওপুলের স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতিকে কাজে লাগিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিকাঠামো পুনরুদ্ধারের চেষ্টাও করা হবে যাতে নাগরিকদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় পরিষেবা সরবরাহ করা যায়।
❤ Support Us