Advertisement
  • পা | র্স | পে | ক্টি | ভ প্রচ্ছদ রচনা
  • মার্চ ১১, ২০২৩

পশ্চিম এশিয়ায় হাওয়া বদলের নাটকীয় ইঙ্গিত।সৌদি ইরানের সম্পর্কে নবায়ন আসন্ন! চিনের নিঃশব্দ প্রবেশে বিপন্ন মার্কিন অবস্থান

ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধের বিদায় অবশ্যম্ভাবী

বাহার উদ্দিন
পশ্চিম এশিয়ায় হাওয়া বদলের নাটকীয় ইঙ্গিত।সৌদি ইরানের সম্পর্কে নবায়ন আসন্ন! চিনের নিঃশব্দ প্রবেশে বিপন্ন মার্কিন অবস্থান

চিত্র: সংবাদ সংস্থা

পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন অবস্থানের অবক্ষয় আর আরব দেশগুলোর ‘উত্তর-পূর্বে তাকাও’- বিদেশ নীতির ঊষালগ্ন আরম্ভ হয়ে গেল হয়তো। এক্ষেত্রে চিনের নিঃশব্দ, সংযত কৌশল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইয়েমেনে ইরানের ভূমিকা প্রশ্নহীন নয়। গৃহযুদ্ধরত দেশটির উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে সৌদি আরব আর আমেরিকার পারস্পরিক সহযোগিতা সর্বজনবিদিত। পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম দেশ ও আমেরিকা গত ৭ বছর ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এবার যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে চিনের প্রবেশ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছে এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের দুদশকের উত্তেজনার দিনও সম্ভবত শেষ। চিনের মধ্যস্থতায় রিয়াধ আর তেহরান তাদের বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। এতদিন ইয়েমেনের হাউথি যোদ্ধাদের অস্ত্র আর অর্থ জোগাচ্ছিল ইরান। ইরানকে কৌশলগত সমর্থন করছিল চিন। হাউথিদের দমন করতে সৌদির পাশে দাঁড়ায় আমেরিকা। ইরান ও ইরাকের শিয়া মিলিশিয়ার সাহায্যে মার্কিন-সৌদি আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখে হাউথি বিদ্রোহীরা। ৭ বছরের যুদ্ধে ইয়েমেনের অর্থনীতি আর রাজনীতি বিপর্যস্ত। দুপক্ষই মুখ বাঁচিয়ে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ২০২২ সালের যুদ্ধ বিরতির পর পরিস্থিতি খানিকটা বদলাতে থাকে। বিদ্রোহীরা বুঝতে পারে, অস্ত্রের সাহায্যে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়। গত অক্টোবরে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। দুপক্ষই অস্ত্রের সংঘাত আর চায় না।আমেরিকাও বুঝতে পারে, পশ্চিম এশিয়ায় তাদের হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য নয় এবং চিনের বাণিজ্যিক ও সামরিক প্রবেশ দ্রুত বাড়ছে। 

আমেরিকার উদ্বেগ বাড়িয়ে সম্প্রতি ৫ দিন সৌদির সঙ্গে বৈঠকে বসে চিন, খোদ বেইজিংএ। বৈঠকের বিষয়-আশয় এখনো জানা যায়নি। তবু, পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ইরান আর সৌদি আরবকে চিন কাছাকাছি নিয়ে আসছে। সৌদির হবু বাদশা, যুবরাজ সালমনের সঙ্গে বেইজিং-এর নির্মীয়মাণ সম্পর্ক অত্যন্ত ইতিবাচক। চিন সফরে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন জানায় বেইজিং।

জো বাইডেন সৌদি সফরের কিছুদিনের পরেই প্রেসিডেণ্ট শি জিনপিংকে লাল কার্পেট বিছিয়ে অভ্যর্থনা জানায় রিয়াধ। সৌদির কাছে কমিউনিস্ট চিন আর আগের মতো ব্রাত্য নয়। চিন-সৌদি ব্যবসা বাড়ছে। চিন পশ্চিম এশিয়, উপসাগরীয় অঞ্চল আর তার মধ্য এশীয় উপস্থিতির স্বার্থে ইরান ও সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের নব বিন্যাস চাইছে। সামাজিক অশান্তি আর আমেরিকার অর্থনৈতিক সন্ত্রাসে ক্ষতবিক্ষত তেহরানও নতুন দৃষ্টিতে, পশ্চিম এশিয়া বিশেষ করে সৌদি আরবের দিকে তাকাচ্ছে ।সম্ভবত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিই শিয়া শাসিত দেশকে প্রতিবেশী সুন্নি আরব দেশগুলোর সঙ্গে সদ্ভাব গড়ে তুলতে বাধ্য করে তুলবে।

মার্কিন চক্রান্তের ফাঁদে পড়ে ৬৯ সাল থেকে তেহরানকে বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। শাতিল আরবের জল নিয়ে ইরাকের সঙ্গে লাগাতার যুদ্ধ, আরব–আযমের ইতিহাস ছোঁওয়া অবান্তর বৈরিতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে গোটা আরব ভূখণ্ডকে তেহরানের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া, শিয়া বিপ্লবের সাফল্যে ইরানের পুনরুত্থানের দুঃস্বপ্নে আমেরিকা নির্ভর দেশগুলির নিরর্থক সংহতি আর আতঙ্কের শিকার হতে হয়েছে তেহরানকে। গণতন্ত্রহীনতা অভ্যন্তরীন অন্তরায় হলেও বিপ্লবোত্তর ইরান হার মানেনি। তার জেদ, তার জাতীয় অঙ্গিকার তাকে মারমুখী করে তুলেছে। আমেরিকার হুমকি যত বেড়েছে, ততই সে প্রতিবেশী সিরিয়া, ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন আর ইয়েমেনে ‘বিপ্লব’ পাচার করতে চেয়েছে।ইদানিং আরব দেশগুলির বিলম্বিত বোধদয় হচ্ছে। বুঝতে পেরেছে, উচ্চাকাঙ্খী ও সামরিক শক্তিতে বলবান ইরানকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে পশ্চিম এশিয়ার উন্নয়ন সম্ভব নয়। শান্তি স্থাপনও অধরা লক্ষ্য হয়ে থাকবে। আমেরিকা অনেকটাই সরে গেছে। আরও সরবে। চিন নিঃশব্দ বাঘের মতো মরুপ্রান্তরে প্রবেশ করছে। আরব স্বার্থকে বাঁচাতে বা পুনরুজ্জীবিত করতে হলে ইরানের সঙ্গেও স্বাভাবিক ও সম্ভবনাময় সম্পর্কের ভিত্ স্থাপন করা জরুরি। প্রয়োজনে আমেরিকার একনম্বর প্রতিদ্বন্দ্বী চিনের নিকটস্থও হতে পারে। এক্ষেত্রে ভারতের পশ্চিম এশীয় বিদেশনীতির সাম্প্রতিক অবস্থানের উল্লেখ সম্ভবত অপ্রাসঙ্গিক নয় । আমেরিকাকে এড়িয়ে নয়া দিল্লি ইরানের সঙ্গে তো বটে, পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার প্রতিটি দেশের সঙ্গে সম্পর্কের নবায়নকে অপরিহার্য করে তুলেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এাকায় সে চিনকে রুখতে চায়, অবাধ বানিজ্যের স্বার্থে, কিন্তু মার্কিন উসকানিকে আমল দেয়নি। ইরান কিংবা উপসাগরীয় দেশগুলিতেও তার বিদেশনীতির অভিমুখে প্রবল চিন বিরোধিতা নেই। মার্কিন বিরোধিতাও নেই। সেখানে স্পষ্টভাবে সে জোট নিরপেক্ষ। আফগান কিংবা ইউক্রেন ইস্যুতে দিল্লির সজল নৈর্ব্যক্তিকতার মতো পশ্চিম ও মধ্য এশীয় অবস্থানও অশ্রুমুখর। ভূকম্পিত তুরস্ক আর সিরিয়ায় দিল্লি যে মানবিক মুখকে উঁচু করেছে, তা ভারতীয় ঐতিহ্যের আরেক মহান উত্তরণ। আমাদের বিশ্বাস, ইরান আর সৌদি আরবের কাছাকাছি আসার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। প্রয়োজন হলে ভারতও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে। দেশের ভেতরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আধিপত্যবাদী চেহারা আর তার বিদেশ নীতির নবায়নের প্রবণতা একধরনের নয় । লক্ষ্য তার সুদূর প্রসারী এবং ঐতিহ্যবাহী । নেহরু-লালবাহাদুর শাস্ত্রী থেকে ইন্দিরা রাজীব আর অটলবিহারী পর্যন্ত ইনসানিয়ত, জমহুরিয়ত, হিন্দুস্তানিয়ত এর যে স্রোত বইছিল, তা মনমোহিত হয়ে মোদিত পাত্রে বিরাজ করছে। এটি অবশ্যই ভারতীয় বিদেশনীতির বিশ্বমানবিক লক্ষ্য। এরকমই মুখ আর অবিমুখের রচনায় সৌদি-ইরানের হাত ধরাধরির প্রারম্ভ আবশ্যিক হয়ে উঠছে। ইঙ্গিত স্পষ্ট। আরবের মরুপ্রান্তে, উপসাগরীয় ইরানেও অমর কবি হাফিজ সিরাজির ফুল শাখাতে, এই বুঝি বুলবুলিরা দোল দিতে শুরু করল ।

 

 


  • Tags:

Read by: 121 views

❤ Support Us
Advertisement
homepage vertical advertisement mainul hassan publication
Advertisement
homepage vertical advertisement mainul hassan publication
Advertisement
Advertisement
শিবভোলার দেশ শিবখোলা স | ফ | র | না | মা

শিবভোলার দেশ শিবখোলা

শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।

সৌরেনি আর তার সৌন্দর্যের সই টিংলিং চূড়া স | ফ | র | না | মা

সৌরেনি আর তার সৌন্দর্যের সই টিংলিং চূড়া

সৌরেনির উঁচু শিখর থেকে এক দিকে কার্শিয়াং আর উত্তরবঙ্গের সমতল দেখা যায়। অন্য প্রান্তে মাথা তুলে থাকে নেপালের শৈলমালা, বিশেষ করে অন্তুদারার পরিচিত চূড়া দেখা যায়।

মিরিক,পাইনের লিরিকাল সুমেন্দু সফরনামা
error: Content is protected !!