Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • জানুয়ারি ১৭, ২০২২

একাকিত্ব পেরিয়ে নিঃশব্দে শাঁওলি মিত্রের প্রস্থান । শোকাহত বাংলার নাট্যজগত। শোক মুখ্যমন্ত্রীর

একাকিত্ব পেরিয়ে নিঃশব্দে শাঁওলি মিত্রের প্রস্থান । শোকাহত বাংলার নাট্যজগত। শোক মুখ্যমন্ত্রীর

বাবা শম্ভু মিত্রের মতো নিঃশব্দে চলে গেলেন শাঁওলি মিত্র। বয়স হয়েছিল ৭৪। দীর্ঘদিন নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। হাসপাতালে যেতে চাননি। বাড়িতেই চিকিৎসা হচ্ছিল। বাংলা নাটকের কিংবদন্তী অভিনেত্রী ও আবূত্তিকার।সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি, পদ্মশ্রী, বঙ্গবিভূষণ, দীনবন্ধু পুরস্কার সহ নানা সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন । ২০১১ সালে বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি হয়েছিলেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ‘বিতত বীতংশ’, ‘নাথবতী অনাথবত্‍’, ‘পুতুলখেলা’, ‘লঙ্কাদহন’, ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’, ‘হযবরল’, ‘পাখি’, ‘গ্যালিলিওর জীবন’, ‘ডাকঘর’, ‘যদি আর এক বার’।

ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে ‘বঙ্গবালা’র চরিত্রে তাঁর অভিনয় স্মরনীয় হয়ে আছে। বাবা শম্ভু মিত্র এবং মা তৃপ্তি মিত্রকে আশৈশব কাছ থেকে দেখেছেন । ‘ডাকঘর’-এ অমলের চরিত্রে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাটকের সঙ্গে গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়েন। গড়ে তোলেন নিজের দল । তাঁর একক অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে থাকতেন দর্শকরা।

শাঁওলি মিত্রের প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘প্রবাদপ্রতিম শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা শাঁওলি মিত্র বাংলা অভিনয় জগতে মহীরুহ ছিলেন। ‘নাথবতী অনাথবৎ’ বা ‘কথা অমৃতসমান’ এর মতো সৃষ্টিকর্ম বাংলার লোকমানসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শাঁওলি মিত্র আমার বহুদিনের সহযোগী ছিলেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তিনি আমার সঙ্গে একসঙ্গে ছিলেন।’ ‘আমাদের বহুদিনের সহকর্মী এবং সুহৃদ হিসেবে তিনি আমাদের মনের মণিকোঠায় থেকে যাবেন। আমি শাঁওলিদির পরিবার- পরিজন ও অগণিত গুণগ্রাহীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

বাংলা নাট্যজগতের অপর কিংবদন্তি রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘শাঁওলিরা তো আর পুরোপুরি চলে যায় না। না থেকেও তাঁরা থেকে যায় নিজেদের কাজের মধ্যে, আলোচনায়, মননে। শাঁওলির সঙ্গে শুধু সহ অভিনেত্রী হিসেবে সম্পর্ক ছিল না। বরং ব্যক্তিগত স্তরেও সম্পর্ক ছিল। সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করেছি। গ্যালিলিওতে অভিনয় করেছি। খুব হইহই হত। স্বাতীলেখা, শাঁওলি, বিভাস, অরুণ, আমি সবাই একসঙ্গে কাজ করতাম। স্বাতীলেখার পর শাঁওলিও চলে গেলেন। যাঁদের যাওয়ার কথা নয়, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। আমার মতো মানুষের কাছে এটা খুবই বেদনাদায়ক।

নাট্য ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী বলেছেন, ‘শাঁওলি নেই, একথা ভাবতে পারছি না। আমি যখন বহুরূপীতে ছিলাম কিছুদিনের জন্য, শাঁওলি তখন কিশোরী, ছুটে বেড়াচ্ছে । অসম্ভব গুণী মেয়ে। একসঙ্গে টেলিভিশনে ট্রেনিংয়ে ছিলাম। পরে শাঁওলি অসুস্থ হয়ে পড়ে । টেলিভিশনে থাকে নি। শাঁওলির সঙ্গে নাটক, থিয়েটার করেছি।

আরেক নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমি শেষ মুহূর্তে শাঁওলিদিকে ছুঁতে পেরেছি এটাই আমার সব থেকে বড় পাওয়া। অনেক স্মৃতি। আলাদা করে কিছু বলার মতো অবস্থায় আমি নেই। এটুকু বলতে পারি আমার একজন অভিভাবককে হারালাম। যখনই যা কিছু লিখেছি, পড়েছি, করেছি একবার ফোন করতাম শাঁওলিদি এটা কেমন লাগল। বলার লোকটা চলে গেল।’


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!