- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
ক্লাবগুলিকে আর কোনও আর্থিক অনুদান দেবে না তৃণমূল সরকার, সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন

রাজ্যের ক্লাব সংগঠনগুলি ‘পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য’ আর কোনও সরকারি টাকা পাবে না। সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, কয়েক বছর ধরে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে, বহু ক্লাবই তার খরচের কোনও যথাযথ হিসাব জমা দেয়নি। ফলে এই সিদ্ধান্ত। কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই অনুদান? প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, রাজ্য সরকারের শর্ত ছিল, যে সমস্ত ক্লাব সংগঠন এই অর্থ নিচ্ছে, তাদের খরচের হিসাব অর্থাৎ ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট সরকারের কাছে সময় মতো জমা দিতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্লাবই সেই হিসাব জমা দিতে পারেনি। মূলত সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
এদিকে ক্লাবগুলিকে এই অনুদান বন্ধের খবর যখন সামনে এসেছে ঘটনাচক্রে সেই সময়েই দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে দেওয়া রাজ্য সরকারের অনুদান নিয়ে তির্যক মন্তব্য শোনা গিয়েছে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের এক বিচারপতির গলায়। তমলুকের এক পুজো কমিটির করা মামলার শুনানি চলাকালীন শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ‘‘আমি অনেক মামলা শুনেছি, যেখানে মানুষ বেতন পাচ্ছেন না, চাকরি পাচ্ছেন না, পেনশন পাচ্ছেন না। আর পুজো কমিটিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে!’’ তবে নবান্ন সূত্র বলছে, বিচারপতির এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে ক্লাবের টাকা বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক নেই।
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরের বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ক্লাবগুলির পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেন। বাছাই করা ক্লাবগুলি প্রথম বছরে এককালীন ২ লাখ টাকা এবং পরবর্তী ৩ বছর ১ লাখ করে মোট পাঁচ লাখ টাকা পেত। যদিও কোভিড পর্বে, ২০২০ সাল থেকে এই প্রকল্পে অর্থ দেওয়ার কাজ স্থগিত রাখা হয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, এই অনুদান আর দেওয়া হবে না।
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম বছর ৭৮১টি ক্লাব এই অনুদান পেয়েছিল। সেই খাতে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। পরের বছর ১৫০০ ক্লাবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যার জন্য রাজ্য সরকারকে অতিরিক্ত ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয়েছিল। প্রকল্পের সূচনালগ্ন থেকেই এই আর্থিক অনুদানকে রাজনৈতিক উপঢৌকন বলে আক্রমণ করেছিল বিরোধী দলগুলি। তৎকালীন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, পরবর্তী কালে আব্দুল মান্নান এই প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এই অনুদান যখন দেওয়া হত, সেই সময় বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে ছিলেন। পরে তিনিও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই অভিযোগ করেন, এই প্রকল্প মারফত ক্লাব সংগঠনগুলির রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। কারণ, অনুদান পেতে নতুন ক্লাব সংগঠনগুলির নাম নথিভুক্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় শাসকদলের বিধায়কদের।
তবে নবান্নের এই ঘোষণায় যে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি আছে সেটা নিশ্চিত । এখন প্রশ্ন একটাই, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের মুখে ঋণমুলের এই সিদ্ধান্তটা কি খুব বাস্তবসম্মত হল? এর প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়লে বা বিজেপি যদি এই সুযোগে ভোটের আগে ঘোষণা করে দেয় ভোট জিতলে তাঁরা ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দেবে তাহলে সেটা তৃণমূলের পক্ষে সুখকর হবে কি? এই প্রসঙ্গে বিজেপি ও সিপিএম-এর বক্তব্য, তৃণমনুলের মতো তারা কোনও দিন টাকা দিয়ে ক্লাবগুলোকে কিনে রাজনীতির সুবিধা নিতে যাবে না।
❤ Support Us