Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ২৬, ২০২৩

আদিবাসীদের চিত্ত জয়ে জনসংযোগে বাড়তি গুরুত্ব।বান্দোয়ানে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেকের বার্তা

জঙ্গলমহলের জেলাগুলির মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়া অন্য সব জেলায় বিশেষ করে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই কি পঞ্চায়েত ও ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের মন জয়ের হোমওয়ার্ক শুরু করলেন অভিষেক?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
আদিবাসীদের চিত্ত জয়ে জনসংযোগে বাড়তি গুরুত্ব।বান্দোয়ানে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেকের বার্তা

আদিবাসীদের মন জয়ের এবং জঙ্গলমহলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার জন্য বান্দোয়ান থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের আদিবাসীদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাঁকুড়ায় কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তার পর বৃহস্পতিবার পুরুলিয়াতে অভিষেকের যাত্রাপথে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা এসে দাঁড়ায়। এর ফলে তৃণমূলের সঙ্গে কুড়মি সম্প্রদায়ের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। পরিস্থিতি বুঝে  শুক্রবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে আভ্যন্তরীন জেলাস্তরীয় পর্যালোচনা বৈঠকে দলীয় স্থানীয় নেতাকর্মীদের আদিবাসীদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলরের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া উভয় জেলাতেই নবজোয়ার যাত্রায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাত্রাপথে কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা এসে দাঁড়ান এবং তাদের দাবিদাওয়ার কথা তৃণমূলের সেকেণ্ড-ইন-কমান্ডকে বলেন। অভিষেক তাদের সমস্যার কথা শোনেন পাশাপাশি সমাধানের আশ্বাস দেন।

তবে বাঁকুড়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রকাশ্যে বলেন, “কুড়মিরা তৃণমূলকে কোনও দিন ভোট দেয়নি ।” আর কুড়মি  সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অভিষেককে পাল্টা বলেন,”এরকম করলে কুড়মিদের ভোট  তৃণমূল পাবে না।”

বাঁকুড়া সফরকালে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার সময় অভিষেকের বলা কিছু কথা নিয়ে কুড়মি সমাজ তথা বঙ্গ রাজনীতিতে এখন জোর জল্পনা চলছে। তাই এই মন্তব্য নিয়ে জঙ্গলমহলে যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে পঞ্চায়েত তথা লোকসভা নির্বাচনের আগে তা সামাল দেওয়া তৃণমূলের কাছে বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুড়মি আন্দোলনের এক নেতা স্পষ্ট বলে দেন, “আগামী নির্বাচনে কিন্তু এই কুড়মি  সম্প্রদায়ের মানুষ আপনার সমর্থনে থাকবে না।” উত্তরে অভিষেক খুব শান্ত ভাবে বলেন, “আমি আপনাকে ক্যামেরার সামনেই বলছি শুনে নিন। আপনার কুড়মি  সম্প্রদায়ের লোকেরা কোনওদিন আমাদের ভোট দেয়নি। পুরুলিয়াতে ২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থী ২ লক্ষ ভোটে জিতেছে। পুরুলিয়ায় ৯টা  আসনের মধ্যে ৬টা  আসন আমরা হেরেছি। আমার দরকার ছিল না এখানে দাঁড়ানোর। এতো প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে বলছেন, তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে না।” এর পর কুড়মি আন্দোলনকারী নেতা কিছু বলতে গেলে অভিষেক তাঁকে থামিয়ে তাঁর হাত ধরে বলেন, “ভোটের পলিটিক্স !. বাবু ২০১৯ সালেও করো নি ২০২১ সালেও করোনি।”  প্রকাশ্যে, রাজপথে তবে খুব ঠান্ডা মাথায় অভিষেক কুড়মি আন্দোলনের নেতাকে ভোটের হিসেবে বুঝিয়ে দেন।

বান্দোয়ানে অভিষেক অভ্যন্তরীণ জেলাস্তরীয় পর্যালোচনা বৈঠকে দলের নেতাদের আদিবাসী সমাজের মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ রক্ষা করে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। পুরুলিয়া জঙ্গলমহলের জেলা। এই জেলায় ২৪ শতাংশ শুধু কুড়মি ভোট আছে। এছাড়াও অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই জেলা দখল করে রয়েছে। তাই অভিষেক হয়তো বুঝেছেন, ঝোঁকের বসে কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভোট নিয়ে এ ভাবে কথা বলা তাঁর ঠিক হয়নি। তাই হয়তো তিনি এখন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে আদিবাসীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে নির্দেশ দিলেন। কেননা জঙ্গলমহলের জেলাগুলির মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়া অন্য সব জেলায় বিশেষ করে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই কি পঞ্চায়েত ও ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের মন জয়ের হোমওয়ার্ক শুরু করলেন অভিষেক?

এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতা শান্তিরাম মাহাতো বলেছেন, “আদিবাসীদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনওদিন খারাপ সম্পর্ক ছিল না। এখনও আদিবাসী, কুড়মি সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের সুসম্পর্কই রয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশ দেওয়ার পর সেই সম্পর্কের আরও উন্নতি হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!