গঙ্গাধর কয়ালকে মানিনা, ভাইরাল ভিডিয়ো বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত বললেন রেখা।রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণেই কী সন্দেশখালিতে বাড়ি ভাড়া শুভেন্দুর, প্রশ্ন বিরোধীদের

শুভেন্দু অধিকারি ভোটে মরসুমে সন্দেশখালিতে থাকবেন বলে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। শুভেন্দুর থাকার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে তা আন্দাজ করে তৃণমূল এমনকী সিপিএম সেদিন আশংকা করেছিল কোন গভীর ষড়যন্ত্রের। সন্দেশখালির ইস্যুকে বিজেপি জিইয়ে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তা কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলির একের পর সন্দেশখালির অভিযানে প্রমান হয়ে গেছে। এবার একটি গোপন ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই সন্দেশখালির ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল।

এতদিন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল যে চক্রান্তের কথা বলে আসছিল সেটাই সত্য প্রমানিত হল বলে সন্দেশখালির সাধারণ মানুষ মনে করছে। গোপন ভিডিও নিয়ে হতবাক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি বলেছেন, ‘‌বাংলার বিরুদ্ধে এ এক গভীর ষড়যন্ত্র।’‌ এদিন গোপন ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় । ভিডিওতে  বিজেপির  সন্দেশখালির ২ ব্লকের এক মন্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‌সন্দেশখালির ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো। রাজনীতির জন্য মিথ্যে ষড়যন্ত্রের ছক কষা হয়েছে। তাবড় তাবড় নেতাদের গ্রেপ্তার না করলে তোমরা দাঁড়াতে পারবে না।’‌ গঙ্গাধরকে বলতে শোনা যায়, ‘‌আপানাদের এই আন্দোলন ধরে রাখতে হলে ওদেরকে গ্রেপ্তার না করলে এই আন্দোলন সফল হবে না।’‌ (‌‌‘‌আরম্ভ’‌ ডিজিটাল ডেস্ক এই ভিডিওর  সত্যতা যাচাই করেনি)‌। তবে রীতিমত স্ট্রিং অপারেশেনের কায়দায় এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির ওই মন্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল জানাচ্ছেন, শুভেন্দু দার (‌শুভেন্দু অধিকারি)‌ নির্দেশে কীভাবে সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপরে নির্যাতনের ঘটনা সাজিয়ে অভিযোগ করে তৃণমূল নেতাদের ফাঁসানো হয়েছে। শুধু তাই নয় মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে। আরেক ভিডিওতে সন্দেশখালির প্রতিবাদী মহিলাদের মধ্যে জবা রানী সিং বলেতে শোনা গেছে ইংরেজিতে লেখা অভিযোগ পত্রে তাঁকে সই করে নেওয়া হয়েছে। অথচ তিনি ইংরেজি ভালো পড়তে পারেন না।

এই ভিডিওকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। রেখা বলেন, এই ভিডিও কোন সত্যতা নেই। এটা বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত। ভয় দেখিয়ে গঙ্গাধর কয়ালকে দিয়ে বলানো হয়েছে। তবে এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরই তৃণমূল  বলছে এই চক্রান্তের কথা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম। এবং এর পেছনে শুভেন্দু অধিকারির হাত রয়েছে। তৃণমূল নেতা , বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারি বসিরহাট স্টেশন সংলগ্ন মাঠে প্রকাশ্য সভায় তৃণমূল নেতাদের নাম করে ইডি,  সিবিআই–‌র ভয় দেখিয়ে ছিলেন। তিনি সেদিন সরাসরি শেখ শাহাজানের নাম করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে জব্দ করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার পরে চলতি বছরে ৫ জানুয়ারি ইডি শেখ শাজাহানের বাড়িতে অতর্কিতে হানা দেয়। এখন পরিস্কার এসবে সন্দেশখালিতে অস্থিরতা তৈরি করাই ছিল উদ্দেশ্য। সন্দেশখালি ঘটনা যখন চরম আকার নিচ্ছে সেই সময় রেখা পাত্রকে বিজেপি প্রার্থী করে আদতে এলাকায় উস্কানি চালিয়ে যাবার ছক কষেন শুভেন্দু। এবং সন্দেশখালিতে থাকার অভিপ্রায় নিয়ে শুভেন্দুর জন্য বাড়ি ভাড়াও নেওয়া  হয়েছে। এসব থেকে পরিস্কার বাংলায় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করে রাজ্য সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলাই উদ্দেশ্য। সন্দেশখালির মহিলাদের অন্যান্য কেন্দ্রে ভোটের প্রচারে নিয়ে যাওয়ার উদ্যেশ্য একই। গঙ্গাধরের এই ভিডিও কথোপোকথন সেটা আর একবার প্রমান করে দিয়েছে। তবে সন্দেশখালির প্রতিবাদী মহিলাদের একাংশ মনে করছেন, সন্দেশখালিতে যে প্রতিবাদ হয়েছে তা স্বতস্ফুর্ত। সেখানে গঙ্গাধর কয়ালকে কোন দিন দেখা যায়নি। একজন গোপনে কী বললেন তাতে কিছু যায় আসে না। তৃণমূল গঙ্গাধরকে হয় ভয় দেখিয়ে , নয়তো টাকা দিয়ে  এসব বলিয়েছে। আন্দোলনকারী মহিলাদের দাবি, এই আন্দোলনে গঙ্গাধর কয়ালকে কোন দিন পাইনি। কোন অধিকারে তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। ওনাকে আমাদের হাতে ছেড়ে দিক আমরা বুঝে নেব কেন সন্দেশখালির আন্দোলনকে ছোট করলেন।