Advertisement
  • জুলাই ১৪, ২০২৪

৩৯ বছর পর খুলবে রুদ্ধ দ্বার, জনসমক্ষে আসবে কী জগন্নাথের রত্নভান্ডারের তথ্য ?

নীলাচল, পুরী, পুরুষোত্তম, জগন্নাথধাম —একাধিক নামে অভিহিত পুরী তীর্থকে ঘিরে রয়েছে একাধিক রহস্য । যার অন্যতম হল- রত্নভাণ্ডার । কেউ কেউ বলেন, মণি মাণিক্যে জগন্নাথ তাঁর সমকক্ষ কেরালার পদ্মনাভস্বামী মন্দির, কিংবা অন্ধ্রের তিরুপতি বালাজিকে টেক্কা দিতে পারেন । তবে আজ পর্যন্ত কত শত সম্পদ ওই ভান্ডারে লুকিয়ে আছে, তার কোনও সঠিক তথ্য নেই । রবিবার ৩৯ বছর পর জগন্নাথ দেবের রত্ন ভাণ্ডারের দরজা খোলা হবে । ইতিহাস বলে, মূল মন্দিরের গর্ভগৃহের কাছেই রয়েছে রত্নভাণ্ডার । দুটি ভাগে বিভক্ত এই রত্ন ভাণ্ডার, বাহির ভাণ্ডার ও ভিতর ভাণ্ডার । বিভিন্ন উত্‍সবের সময় জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা মূর্তি যে অলঙ্কারে সাজিয়ে তোলা হয়, তা থাকে বাহির ভাণ্ডারে । ভিতর ভাণ্ডারে থাকে মূল্যবান গয়না, মোহর, রত্ন । রত্ন ভাণ্ডারের তিনটি চাবি তিনজনের কাছে গচ্ছিত থাকে । এই তিনজন হলেন- শ্রী মন্দির অর্থাৎ জগন্নাথের মন্দিরের প্রধান সেবায়েত গজপতি রাজা, ১৯৬০ সাল থেকে মন্দিরের মূল স্বত্বাধিকারী ওড়িশা প্রশাসন এবং তিন দেবদেবীর সাজগোজের দায়িত্বে থাকা সেবায়েত 'ভাণ্ডার মেকাপ ।' ভিতর ভাণ্ডারের চাবি থাকে পুরীর জেলা কালেক্টরের কাছে । জেলা কালেক্টরেটের দাবি জানা গেছে, তাদের কাছে অনেকগুলি চাবি ভর্তি একটি সিল করা খাম রয়েছে । ওই খামটি মুখ বন্ধ অবস্থাতেই মন্দির প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা । যদিও সেবায়েতরা বলেছেন সে চাবি তারা পাননি ।

  • ১৯৭৮ সালের অডিটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ভাণ্ডারে আছে মোট ৪৫৪টি সোনার গহনা, যার ওজন আনুমানিক ১২৮৩৮ ভরি এবং ২৯৩টি রুপোর গহনা রয়েছে, যার ওজন ২২১৫৩ ভরি । ৭৯টি সোনার গহনা, ৩৯টি রুপোর গহনা আছে । সঙ্গে রয়েছে নিত্য ব্যবহারের আরও সোনাদানা । ব্রক্ষ্মজ্যোতি হিরে, বলরামের নীলা, সুভদ্রার মণিমুক্তোও রয়েছে । ৩৫০-রও বেশি সোনার গহনা ও ২৩০টিরও বেশি রুপোর গহনা আছে বলে অনুমান করা হয়েছে ।

    (1/4)
  • রত্ন ভাণ্ডারের চাবি কোথায় আছে, তা নিয়ে ২০২১ সালে একটি তথ্যের অধিকার আইনে একটি মামলা করা হয় । সেখানে জানা যায়, ১৯৭০ সাল থেকে ওই নির্দিষ্ট চাবির কোনও হদিশ নেই । ফলে ১৯৭৮ সালের অডিট ও ১৯৮৫ সালের রত্ন ভান্ডারের তথ্য নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয় । ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল ওড়িশা হাইকোর্ট রত্নভান্ডার পরিদর্শনের নির্দেশ দেয় । সেই মতো সরকারি কর্তা, ইঞ্জিনিয়ার থেকে সেবায়েতসহ ১৭ জনের দল মন্দিরে হাজির হয় । তাঁর দেখেন দশম শতকের পর নির্মিত এই মন্দিরের গায়ে বহুদিন ধরে ফাটল দেখা গেছে । নিত্য পূজা এবং দর্শনার্থীদের চাপে মন্দিরের বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে । ভিতর ভাণ্ডার প্রায় চার দশক খোলা হয়নি । ফলে সেখানে কি পরিস্থিতি তা জানাটা আবশ্যক ছিল সরকারের । তাছাড়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রত্ন ভাণ্ডারের সংস্কার না করলে হয়ত কোনোদিন গর্ভগৃহের ছাদটাই না ধসে পড়ে যায় !

    (2/4)
  • ২০১৮ সালে এএসআইয়ের স্থাপত্যবিদ, সরকারি আধিকারিকরা গিয়ে জানতে পারেন চাবি হারিয়ে গেছে । প্রচলিত বিশ্বাস , জগন্নাথের মণিমুক্তোর ঔজ্জ্বল্যে নাকি মানুষের চোখ অন্ধ হয়ে যায় । ফলে ভিতর ভান্ডারের দিকে একবার জোরালো আলো ফেলে সে স্থান পরিত্যাগ করেন আধিকারিকেরা । সে কথা তাঁরা ২০২১ সালের আরটিআইয়ের পর স্বীকারও করেছিলেন । ২০২৪ এ ওড়িশা বিধানসভা ভোটে তাই রত্ন ভাণ্ডার রহস্যকেই অন্যতম ইস্যু করে বিজেপি । প্রচলিত বিশ্বাস, অন্ধকার কুঠুরিতে সাপখোপ রাজ্য বিস্তার করেছে । অজস্র সাপ জগন্নাথ দেবের অলঙ্কার পাহারা দেয় । কেউ সেখানে প্রবেশ করলেই সাপের হিসহিস শব্দ শুনতে পান । ১৯৮৪ সালেও নাকি পরিদর্শকরা সেই আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন । ২০১৮ সালে পরিদর্শন কমিটির সঙ্গে তাই সাপ-তাড়ানোর ওঝা ছিল । তবে অনেকেরই অনুমান, পুরীর রত্নভাণ্ডারে যা রাখা আছে, তার সম্পত্তি দক্ষিণ ভারতের যেকোনও মন্দিরকে হার মানাবে । তবে সেই সম্পত্তি কত তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২৪ ঘণ্টা। ১৫ জুলাই উল্টোরথ । বহু মানুষের জমায়েতে সরগরম সৈকত তীর্থ । গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ এত জন সমাগমে করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের । তাছাড়া রত্নভাণ্ডার সংস্কারের জন্য ওই সমস্ত বহুমূল্য ধন কোথায় কতদিনের জন্য গচ্ছিত থাকবে , তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা জোরদার হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ।

    (3/4)
  • (4/4)

  • Tags:

Read by:

Advertisement
2024 Lakshman Seth
Advertisement
2024 Debasish
Advertisement
শিবভোলার দেশ শিবখোলা স | ফ | র | না | মা

শিবভোলার দেশ শিবখোলা

শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।

সৌরেনি আর তার সৌন্দর্যের সই টিংলিং চূড়া স | ফ | র | না | মা

সৌরেনি আর তার সৌন্দর্যের সই টিংলিং চূড়া

সৌরেনির উঁচু শিখর থেকে এক দিকে কার্শিয়াং আর উত্তরবঙ্গের সমতল দেখা যায়। অন্য প্রান্তে মাথা তুলে থাকে নেপালের শৈলমালা, বিশেষ করে অন্তুদারার পরিচিত চূড়া দেখা যায়।

মিরিক,পাইনের লিরিকাল সুমেন্দু সফরনামা
error: Content is protected !!