- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ৮, ২০২৪
“ইংরেজি না জানা কোনও অপরাধ নয়, তবে শিখে নেওয়া জরুরি”, বললেন মুখ্যমন্ত্রী
ইংরেজি না জানা কোনও অপরাধ নয়, তবে ইংরেজি শিখে নিজেকে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে, তাই বলে মাতৃভাষা ভুলে গেলে চলবে না। স্টুডেন্টস উইকের অনুষ্ঠানে আলিপুরের ধনধান্য স্টেডিয়াম থেকে “যোগ্যশ্রী” প্রকল্প শুরুর অনুষ্ঠানে এই কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণত যারা ভালো ইংরেজি জানেন না, তাদের অনেককেই ইংরেজি জানা লোকেরা ব্যঙ্গবিদ্রূপ করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। এটা বহুকালের একটা অভ্যাস। এই অভ্যাসের বিরুদ্ধেই এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠান থেকে বলেন, “অনেকে আমাদের শিক্ষক ব্যবস্থা নিয়ে অনেক অবজ্ঞা করে। কেউ একটু ভালো ইংরেজিতে কথা বলতে না পারলে, বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র-ছাত্রীরা, অনেকে আমরা তাঁদের অবহেলা করি। তাঁদের মনে করি, তাঁরা যেন মানুষই নয়। স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কোন ইংলিশ মিডিয়াম থেকে পড়েছিলেন? তখন তো ইংরেজি মাধ্যম ছিলই না, এখন তো আমরা সুযোগটা পাচ্ছি, ছেলে-মেয়েদের বলছি ইংরেজি পড়তে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা ক্লাস ওয়ান থেকে ইংলিশ চালু করেছি। শুধু তাই নয়, আমরা নতুন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অনেক করেছি। আজকের দিনে মনে রাখতে হবে প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক এই তিনটি যুগকে যদি সংযুক্ত করতে হয়। আজকের যুগের জন্য, মেধার জন্য কি প্রয়োজন সেদিকে ভাবতে হবে। যুগের উপযোগী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য বাংলা পড়ব, যার যেটা মাতৃভাষা সেটা পড়ব, যে ভাষা আমায় মা বলতে শেখায়, পাশাপাশি কেউ সাঁওতালী, ইংলিশ, হিন্দি, অলচিকি, গোর্খা,উর্ধু পড়বে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ইংরেজিতে পড়তে পারে তার জন্য ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। অনেক জায়গায় ইংলিশ প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আমাদের আগের অনেক ডাবলু বি সি এস, ডাবলু বি পি এস অফিসাররা ইংরিজিতে ভালো চিঠি ড্রাফট করতে পারতেন না বলে অনেক কথা শুনতে হতো। তাঁদের আমরা এখন গ্রেট ব্রিটেনে, ইউকে-তে পাঠাই ইংলিশ লার্নিংয়ের তিন মাসের কোর্সের জন্য। তাতে অনেকে যাচ্ছেন এবং ফ্লুয়েন্ট ইংলিশ বলছেন।” মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন ইংরেজি না জানা অপরাধ নয় তবে সুযোগ থাকলে নিজেকে উপযুক্ত করে তোলার জন্য ইংলিশ শেখাও প্রয়োজন।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্টস ইন্টার্নশিপ প্রকল্প চালু করলেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই, যৌবন অবস্থা থেকেই ছেলে-মেয়েরা সরকারি কাজের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। এই প্রশিক্ষণে তাঁরা যদি সফল হয়, তাঁরা সার্টিফিকেট পাবেন। এক বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ দেওয়া হচ্ছে আড়াই হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে। আমরা তৃণমূলস্তর থেকে যোগ্য কাজের মানুষ তুলে আনার চেষ্টা করছি। যাঁরা ভালো কাজ করবেন, তাঁদের ইন্টার্নশিপ নবীকরণ হবে। এর ফলে ছাত্র জীবন থেকেই প্রশাসনিক কাজের ধারণা হয়ে যাবে। মাসে ইন্টার্নশিপের জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর ফলে তাঁরা ডাবলু বি সি এস, আই এ এস, আই পি এস যে পরীক্ষাই দিক সেই সুযোগ পাবেন।”
এদিন “যোগ্যশ্রী” প্রকল্পের মাধ্যমে এসসি/এসটিদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষা ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্টুডেন্টস উইক গত বছর থেকে চালু হয়েছে। প্রতি কোকোর ১ থেকে ৭ জানুয়ারি স্টুডেন্টস উইক পালিত হবে। এই সময়ের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের রাজ্য সরকারের তরফে প্রদেয় যাবতীয় বৃত্তি, সুবিধা প্রদান করা হবে। আমি ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠান করে শিক্ষক, শিক্ষিকা, অধ্যাপকদের সঙ্গে আলোচনা করব। এবার থেকে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান ৮ জানুয়ারি হবে এবং ১ থেকে ৭ জানুয়ারি স্টুডেন্টস উইক পালিত হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাঁর বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন, রাজ্যের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছেলে-মেয়েরা যাতে শিক্ষার দরজায় পৌঁছতে পারে , পড়াশোনা শিখে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার সব রকম সহায়তা করছে।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে এদিনের অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কলকাতা এখনও দেশের মধ্যে নিরাপদ শহর। শ্রীমপুর থানা সেরার শিরোপা পাচ্ছে কি করে? আমি শিক্ষা দফতরকে বলবো নেতাজির “তরুণের স্বপ্ন” ও স্বামী বিবেকানন্দের “কল টু দ্য নেশন” বই দুটো স্কুল শিক্ষায় বাধ্যতামূলক করতে।”
❤ Support Us