Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • অক্টোবর ৫, ২০২৩

“ইডি-সিবিআই পিসি-ভাইপোর দালালি করছে”, সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভে সরব বামেরা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
“ইডি-সিবিআই পিসি-ভাইপোর দালালি করছে”, সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভে সরব বামেরা

ইডি-সিবিআই-র নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বামেদের সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করল। উল্টোডাঙার হাডকো মোড় থেকে মিছিল করে ইডি, সিবিআইয়ের দফতরের সামনে যান সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিম প্রমুখ। এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্রও। এই মিছিলে হাঁটতে হাঁটতেই কেন্দ্রীয় সংস্থার দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন সেলিম,সুজন সহ বাম নেতৃত্ব।

বামেদের অভিযোগ, ইডি এবং সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কাজ করছে না, নিস্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। তৃণমূলের “দুর্নীতিগ্রস্ত”দের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওরা দালালি করছে। কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও পিসি-ভাইপোর দালালি করা হচ্ছে। আসলে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির নির্দেশেই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ওরা পিসি, ভাইপোকে সাহায্য করছে। ইডি, সিবিআই যে অপদার্থ, সেটা ওরা প্রমাণ করে ফেলেছে। ওদের জবাব দেব বলে আমরা আজ এখানে সমবেত হয়েছি।’’

বুধবার দিল্লিতে তৃণমূলের কর্মসূচিকে ‘নাটক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন মহম্মদ সেলিম। এদিন সুজনও সেই সুরেই বলেন, ‘‘দিল্লি গিয়ে নাটক করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। সবাই তা বুঝে গিয়েছে। ১০ লক্ষ বলে দু’হাজার লোকও ওঁরা নিয়ে যেতে পারেননি। নাটকটা যে হেতু ধরা পড়ে গিয়েছে, আর একটা নতুন নাটক করার জন্য এ বার ওরা রাজভবন যাচ্ছে। রাজ্যপাল নেই জেনেই ওরা ওখানে যাচ্ছে।’’

ভাষণ দিতে উঠে সুজন অভিষেকের সংস্থা লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসকে কড়ূ ভাষায় আক্রমণ করেন। সুজন বলেন, ‘‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসের কথা আমাদের নেতারা ২০১৩ সাল থেকে বলে আসছেন। ওখানে কালো টাকা সাদা করা হয়। দুর্নীতিগ্রস্তদের রক্ষা করা হয়। যাঁরা সে দিন বিদ্রুপ করেছিলেন, এখন তাঁরাই সপরিবারে জেলে যেতে শুরু করেছেন।’’

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, ‘‘আমরা চাই, সব চোরদের শাস্তি দিতে হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, চাকরি না দিয়ে যাঁরা সংস্থা খুলে চাকরি নিলাম করেছে, তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। ইডি, সিবিআই তো কালীঘাটের ঠিকানা খুঁজেই পাচ্ছে না। হাই কোর্ট বলার পরেও অভিষেকের ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছে না। এঁরাই তো ভবিষ্যকের শুভেন্দু। এঁদের তাই ইডি, সিবিআই বাঁচাচ্ছে। আমরা ওদের নাড়া দিতে এসেছি। রাজনৈতিক স্বার্থে ইডি, সিবিআইকে ব্যবহার করা যাবে না।’’

বামেদের সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান ছিল পূর্বঘোষিত। সেই মতো বৃহস্পতিবার বেলার দিকে বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল করে সিজিও কমপ্লেক্সের কাছে আসতে শুরু করেন বাম কর্মী, সমর্থকেরা। সিজিও-র একেবারে সামনে তাঁরা যাননি। ইডি, সিবিআইয়ের দফতর থেকে বেশ কিছুটা দূরে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই জমায়েত করেন বামেরা। মঞ্চে উঠে একে একে সিপিএম নেতৃত্ব ভাষণ দেন। ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমেরা। গোলমাল এড়াতে এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বামেদের কয়েক জন প্রতিনিধি সিজিওতে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসেন। আপাতত সেটি ‘প্রস্তাব’ আকারে রয়েছে। এর পরেও কাজ না হলে ‘চার্জশিট’ নিয়ে আসবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বাম নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের একাধিক নেতা, মন্ত্রীর। কিন্তু বামেদের অভিযোগ, ইডি বা সিবিআই আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে তেমন কড়োর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই ইডি, সিবিআইয়ের তদন্তে এই ‘ঢিলেমি’ চলছে। বিজেপি এবং তৃণমূল প্রকাশ্যে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তাদের মধ্যে গোপন সাঁট রয়েছে বলে বামেদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ। সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানে সেই ‘বিজেমূল’ তত্ত্বই যে এখন প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে সেই বার্তাই দেন বাম নেতৃত্ব।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!