- এই মুহূর্তে দে । শ
- এপ্রিল ৭, ২০২৩
কেন্দ্রের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে এডিটর গিল্ডের আপত্তি । ভুয়ো খবর ঠেকানোর নামে মতপ্রকাশের স্বাধনীতায় হস্তক্ষেপ কাম্য নয়
মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা নিয়ে সরব সম্পাদকদের গিল্ড। সম্প্রতি তাঁরা জানিয়েছেন, সামাজিক প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত ভুল খবর সংশোধনের নামে দানবীয় আইন চাপিয়ে দেওয়া কাম্য নয়। সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ স্বাধীনতা সুরক্ষিত। কোনো অজুহাতেই তা খর্ব করা উচিত নয়।
তথ্য প্রযুক্তি আইন অনুযায়ী, সামাজিক প্রচার মাধ্যমে সরকার সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশ করা উচিত নয়। কিন্তু বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন সময়ে বহুবার দেখা গেছে এমন খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হতে, যার সঙ্গে বাস্তবের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ভুল খবর পরিবেশন আটকাতে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করে, একটি ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিট গড়ে তোলা হবে যার প্রধান কাজ হবে যাবতীয় বিভ্রান্তিকর সংবাদকে চিহ্নিত করা। যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে সম্পাদকদের গিল্ড।
শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের পদক্ষেপ স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী ও সেন্সরশিপ জারি করার সমতুল্য। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ তাই নিঃস্নদেহে দুঃখজনক। সরকারের কাছে গিল্ডের আর্জি, বিজ্ঞপ্তি যেন দ্রুত খারিজ করা হয়। আর ভবিষ্যতে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ যদি গ্রহণ করতেই হয়, তাহলে সংবাদ সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর অবশ্য সেন্সরশিপের আশঙ্কার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ভারতের সংবিধানে যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধসহ মৌলিক অধিকার রূপে এটি স্বীকৃত। সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী বিচারবিভাগের দায়িত্ব হল মৌলিক অধিকারের কোনো অপব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা দেখা। শাসনবিভাগ তবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এমন কোনো আইন সরকার পার্লামেণ্টে পাশ করাতে পারে না যা সংবিধানে বর্ণিত নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করে। ভারতীয় সংবাদপত্রে তাঁর সূচনা কাল থেকে বিভিন দানবীয় আইনের সম্মুখীন হয়েছে। পরাধীন ভারতে ঔপনিবেশিক সরকার একাধিক বার সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে। কিন্তু মানুষের সচেতন প্রতিবাদের কাছে তাঁদেরকেও মেনে নিতে হয়েছে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের প্রতিষ্পর্ধী অস্তিত্বকে। ব্রিটিশ শাসনোত্তর ভারতেও স্বাধীন সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের রোষানলে পড়েছে। জরুরি অবস্থা তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। সময় বদলেছে। বর্তমানে সামাজিক প্রচার মাধ্যম প্রযুক্তির গণতন্ত্র রূপে স্বীকৃতি পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মুক্তমঞ্চে যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সংগঠন তাঁর মতামত জানাতে পারেন, সংবাদ শেয়ার করতে পারেন। এমতাবস্থায় ভুল সংবাদ পরিবেশন ও প্রসারকে আটকানো প্রইয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে কিন্তু তা কখনোই গণতন্ত্রের মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন করে নয়।
❤ Support Us