শূন্য যখন সংখ্যা

ফোনটা সন্ধেবেলাতেই এল। বেশি কিছু কথাও বলে নি । শুধু জিজ্ঞেস করে, ‘এটা অমিত ব্যানার্জির বাড়ি?’ রূপা ‘হ্যাঁ।’ বলতেই ওপাশ থেকে একজন বললেন, ‘উনি মারা গেছেন। আমরা সব কাজ করে আপনাদের জানিয়ে দেব।’
মানে! রূপা আকাশ থেকে পড়ে। ‘উনি কীভাবে মারা গেলেন? সুস্থ মানুষ, এভাবে মারা গেল।’
কীভাবে মারা গেল এর উত্তর কী দেব ? সবই তো জানেন, কীভাবে কত লোক মারা যাচ্ছে, তার হিসাব তো সারা পৃথিবী দেখছে।
রূপার মাথাটা গরম হয়ে গেল। ভেতর থেকে একটা চাপা কষ্ট কেমন যেন ডুকরে বেরিয়ে আসতে চেয়ে বারবার ফেরত চলে যাচ্ছে। কীভাবে মাকে কথাগুলো বলব? আজ বাবার জন্মদিন । লোকটাও কেমন করে কথা বলছে।রূপা নিজেকে সামলে আস্তে আস্তে উত্তর দিল, ‘আমরা কীভাবে এবং কোথায় যাবো ?’
ক্ষেপেছেন? কোথায় আসবেন, সব তো বন্ধ । আসবেনই বা কীভাবে, আর এলেও আপনাকে দেখা করতে দেবে না।
বাজে বকবেন না। আমার বাবা আর আমি দেখতে পাব না ?
দেখুন অত কথা বলবার সময় এখন নেই । আপনাকে জানিয়ে দিলাম, এদিকের কাজ মিটলে হাসপাতাল আর শ্মশানের সার্টিফিকেটের সঙ্গে ওঁর সব জিনিস পত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া আসা হবে।
রূপা আরো কিছু বলতে গেলেও ওদিকের ফোনটা কেটে যেতে রূপা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না।ওই জায়গাতেই বসে পড়ল। পাশের ঘর থেকে মায়ের চিৎকার কানে এল, ‘কার ফোন রে? তোর বাবার কোন খবর পেলি? লোকটার যে আজ জন্মদিন ।’
খবর ! খবরই বটে ।
নিজেকে সামলে নিয়ে মায়ের ঘরে যাবার জন্য তৈরি হতে একটু সময় নিতে হল। একটু সামলে নিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই বাবা মায়ের একটা ছবির দিকে চোখ গেল। বিয়ের প্রথম বছরে বেড়াতে গিয়ে তোলা। তখন ব্ল্যাক অ্যাণ্ড হোয়াইট ছিল। বাবা পরে ছবিটাকে রঙিন করেছিল। সারাটা ঘরের প্রতিটা কোণে বাবা ছড়িয়ে ও জড়িয়ে রয়েছে। যাবার আগের দিন দু’প্যাকেট আটা নিজে কিনে তাকের মধ্যে রেখে বলে গেল, ‘এই দু’প্যাকেট এনে দিলাম, বারবার বাজার যেতে আর ভালো লাগে না।’
কথাগুলো মনে পড়তেই রূপার শরীরের ভিতরটা ফেটে গেলেও কিছু করবার নেই। মায়ের কাছে এভাবে দাঁড়ালে মা সহ্য করতেই পারবে না।
সেদিনও ফোনটা এমনি ভাবেই এসেছিল। শুধু রূপার বদলে মা ফোনটা ধরেছিল। তারপর রূপা মাছ আর একটু কাঁচা সব্জি কিনে দরজা খুলে ঘরের ভিতর ঢুকতেই তার মা অনিমা দেবী বলে উঠলেন,‘কী রে এখনও তো কেউ ফোন করল না? তুই কিছু খবর পেলি?’
–আমি কীভাবে খবর পাব? তুমিও যেখানে আমিও সেখানে। সবই তো জানো। অনিমা দেবী আর কোন উত্তর না দিয়ে রূপার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল। রূপা নিজেই বাজার থেকে আনা সব্জি ও মুদিখানার জিনিসপত্র ব্যাগ থেকে নামিয়ে রাখবার সময় বলে উঠল, ‘চারনম্বরের বোসকাকুর এক ভাই সরকারের কোন এক উঁচু পোস্টে কাজ করেন, তাঁর মাধ্যমে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করছি। তবে উনি বললেন ব্যাপারটাতে কতটা কি করতে পারবেন সন্দেহ আছে।’
কথাগুলো শুনেই আনিমা দেবী একরকম ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলতে লাগলেন, ‘বারবার বারণ করেছিলাম, এখন বাইরে যেতে হবে না। সব কিছু মিটুক তারপর যাবে। কে কার কথা শোনে। এখন কিছু হয়ে গেলে আমি কী করব বল তো?’

---

কয়েকদিন ধরে অনবরত টিভিতে সারা বিশ্বে যেভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে আর অনবরত তার কথা বিশ্বের বেঁচে থাকা লোকগুলোর কানে পৌঁছাচ্ছে, তাতে মরে যাওয়া আর বাঁচার মধ্যে সেরকম কোনও পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

---

মা! তুমি খুব বাজে কথা বল। কী হবে, হাসপাতালে আছে, ডাক্তার দেখছেন, খুব অল্প দিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে ঘরে ফিরে আসবে।
মানুষটার সাথে একবার কথাও বলতে পারলেও বুঝতে পারতাম । সেদিকেও কীরকম একটা বাধা হয়ে গেছে।
শেষের কথাগুলোর সাথে একটা লম্বা শ্বাসের আওয়াজ রূপার কানে ঢুকল। রেগে উঠলেও মানুষটাই বা কী করবে? অফিসের কাজে বাইরের রাজ্য থেকে ফেরবার দিন দুপুর বেলা হঠাৎ বাড়িতে ফোন করে বলে উঠলেন, ‘শোনো, আমাকে এখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে ।’
আঁৎকে উঠেছিলেন অনিমা দেবী।হাত পা কাঁপতে আরম্ভ করেছিল।রূপা আবার সেসময় বাড়িতে ছিল না।অর্ধেক কথা শুনলেন অর্ধেক মাথা থেকে বেরিয়ে চলে এল। কিছু কথা আটকে গেল দু’কানের ভেতরে। রূপা বাড়ি ফেরবার পর অনিমা দেবীর মুখে সব কিছু শুনে রূপাও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘কী বলছ গো? বাবা তো নেমেও ফোন করে ছিল। আমাকে পোনা মাছ কিনে আনতে বলল। আমি তো সে জন্যেই বাজারে গেলাম।তুমি ভুলভাল শুনেছ। এসব আবার হয় নাকি?’
আমি যদি ভুল শুনব তাহলে তুই নিজে ফোন করে কথা বলে নে।
রূপার ফোনটা সেই সময় চার্জে বসানো থাকায় আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি মায়ের ফোন থেকে বাবাকে ফোন করতেই ওপাশ থেকে যা শুনল তাতে মাথা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়। ফেরাবার সময় মাঝ রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পুলিশ ও ডাক্তার মিলে অমিতবাবু মানে রূপার বাবার শারীরিক পরীক্ষা করবার সময় জ্বর ও একটু কাশি ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের অ্যাম্বুলেন্স চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে চলে যায়। অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকেই অমিতবাবু রূপার ফোন বন্ধ পেয়ে অনিমা দেবীকে সব কিছু জানান। পরে রূপা ফোন করে শুধু সেই মাত্র মায়ের মুখে শোনা কথা গুলোই আরেকবার ঝালিয়ে নেয়। বাকি সব একই। বাবার থেকে আবার অ্যাম্বুলেন্সের একজন ফোনটা নিয়ে বলেন, ‘আপনারা চিন্তা করবেন না, আমরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে টেস্ট করব, যদি নেগেটিভ হয়, ওনাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, তা না হলে কয়েকদিন হাসপাতালে রেখে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ রূপা বার বার করে হাসপাতালের কথা জিজ্ঞেস করেও কোন সঠিক উত্তর পায় না। উনি বলে ওঠেন, ‘দেখুন কোন হাসপাতালে ওনাকে নিয়ে যাওয়া হবে সে খবর আমরাও জানি না। এখন আরো অনেককে একটা সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছি, পরে বুঝে শুনে ওনাকে কোন একটা হাসপাতালে নিয়ে যাব।’
আমি কি ওনাকে দেখতে যেতে পারি?
কথাগুলো জিজ্ঞেস করতেই ভদ্রলোক অদ্ভুত ভাবে উত্তর দিয়ে বললেন, ‘ক্ষেপেছেন, আপনাদের খুব ভাগ্য উনি বাইরে আছেন, না হলে আপনাদের সবাইকে এক্ষুণি তুলে নিয়ে আসত।’
ভদ্রলোকের কথাগুলো শুনে রূপার ভালো না লাগলেও কিছু করবার তো নেই। ফোনটা রেখে মায়ের দিকে তাকাতেই দু’চোখে একটা ভয় দেখতে পায় । রূপা মায়ের কাছে গিয়ে বলে,‘তুমি চিন্তা করবে না, সব তো বুঝছ, অবস্থা খুব খারাপ। বাবা এখন অসুস্থ, কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে ফিরে আসবে।’
কয়েকদিন কী বলছিস রে ? সবাই তো বলছে দু’সপ্তাহ লাগবে।
রূপা চমকে ওঠে। আসলে কয়েকদিন ধরে অনবরত টিভিতে সারা বিশ্বে যেভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে আর অনবরত তার কথা বিশ্বের বেঁচে থাকা লোকগুলোর কানে পৌঁছাচ্ছে, তাতে মরে যাওয়া আর বাঁচার মধ্যে সেরকম কোনও পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মাকে কিছু না বললেও রূপার নিজেরও বাবার জন্য চিন্তা হয়। মানুষটা কীরকম আছে কে’জানে? এত দিন হয়ে গেল অথচ মানুষটার কোন খবর নেই। রূপাদের কাছে থাকা টাকাও শেষের পথে। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টটা মা বাবার জয়েন্ট হলেও এটিএম তো বাবার কাছে। রূপার নিজস্ব অ্যাকাউন্টে যে কটা টাকা আছে তাতে কোন রকম করে কয়েক দিন চালবে তারপর? মায়ের চিন্তার সাথে সুগার লেভেল বেড়ে উঠছে । বাড়ছে আরো কয়েকটি উপসর্গ। হাউস ফিজিসিয়ান না দেখলেও উনি হোয়াটস অ্যাপে কয়েকদিনের ওষুধ প্রেসক্রাইব করে পাঠিয়েও বার বার চিন্তা করতে বারণ করে দিয়েছেন। বারণ আর কে শুনবে? একটা মানুষ বাড়ি ফেরবার রাস্তা থেকে হঠাৎ উধাও, কোনও খোঁজ নেই, কেউ কিছু বলতে পারছে না। এমন অবস্থায়…..।
একদিন অনিমাদেবী বলেন,‘রূপা তুই এক কাজ কর, বাবার অফিসের কাউকে একবার ফোন কর, ওঁরা যদি কিছু বলতে পারেন?’
কথাগুলো শুনেই রূপা অফিসের কাউকে ফোন করবার চেষ্টা করে। সব ফোন নম্বর তো বাবার মোবাইলে। যে কয়েকজন কাছাকাছি থাকেন তাঁদের কারোরই তো ফোন নম্বর নেই। বাড়ির ঠিকানাও জানা নেই। জানলেও যাওয়াও যাবে না।বাবার অফিসও এখন বন্ধ। খুব সমস্যার মধ্যে পড়েও রূপার চিন্তা করা ছাড়া আর কোন কিছু করবার থাকল না। অনিমা দেবী প্রায় প্রতি মুহূর্তে টিভির খবর দেখে রূপাকে বলছেন, ‘হ্যাঁরে অবস্থা তো আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তোর বাবা বেঁচে আছে তো ?’
রূপা মায়ের উপর রেগে গেলে এই উত্তর তার কাছে নেই।
দু’দিন আগেই বাজার করতে গিয়ে এক চেনাজানা কাকু রূপাকে দেখতে পেয়ে অমিতবাবুর খবর জিজ্ঞেস করেন। তারপর নিজেই বলতে আরম্ভ করেন, ‘একটু খোঁজ খবর করবার চেষ্টা কর। অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। কত যে মানুষ মারা যাচ্ছে তার কোন হিসাব নেই। মারা গেলে কোন খবর পাবে কিনা সেটাও সন্দেহের। এইতো আমার চেনা একজনের পাড়াতে একজন মারা গেলন। পুলিশ কোথায় পুড়িয়ে দিল কেউ জানে না। বাড়িতে শুনলাম কুশের পুতুল পুড়িয়ে কাজ হল। এমন রোগ না ছুঁচছে ডোম, না হচ্ছে হোম।’
বাড়ি ফিরে মাকে কথাগুলো না বললেও বাবার মৃত্যু ভয় রূপাকে প্রতিটা মুহূর্ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। মোবাইল আর টিভির খবরের দিকেই সব সময় চোখ পড়ে আছে। কোন মৃত্যুর খবর পেলে আগেই বাবার নাম খোঁজ। টিভি ছাড়াও আরো বিভিন্ন ভাবে বাবার নাম খুঁজে পাবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। না পাচ্ছে বাবার বেঁচে থাকবার খবর না মারা যাবার। একদিন মা হঠাৎ করে বলেন, ‘হ্যাঁ রে তোর বাবার যে সুগার আছে। টিভিতে ডাক্তারবাবুরা যে বলছেন সুগার থাকলে নাকি বেশি…..’
–থাম তো।
রেগে ওঠে রূপা। মাকে থামিয়ে দিলেও চিন্তাটা তার নিজের শরীরে অনেকদিন আগেই বাসা বাঁধতে আরম্ভ করেছে। যে কোন একটা খবরের খুব দরকার। হয় বেঁচে থাকবার খবর অথবা….। আত্মীয়রা কয়েকদিন ধরে ফোন করবার পর এখন ক্লান্ত। কমপ্লেক্সের লোকজনও খুব একটা কথা বলছে না। বললেও কেমন যেন সন্দেহের চোখে দেখছে। কমপ্লেক্সের বাইরে বের তো হতেই দিচ্ছে না।ব্যাগ ছাড়া নিচে নামলেই আড় চোখে দেখে নিচ্ছে। যেন জিজ্ঞেস করছে, ‘হাসপাতাল থেকে ঘুরে এলে নাকি?’
এত সবের মধ্যেও প্রতিদিন সিঁড়িতে বা লিফ্টে কারোর পায়ের শব্দ হলেই রূপা কান খাড়া করে অপেক্ষা করছিল । তারপর একটা লম্বা শ্বাসের সাথে বেরিয়ে যাচ্ছিল সব আশা ভরসা। গভীর রাতে শহরের চারদিকে আলোকিত অন্ধকারটাকে একটা নাটকে পড়া সমুদ্রের মত মনে হত। মা যেন নাটকের সেই বুড়ি যে,শুধু মৃত্যু দেখে দেখে ক্লান্ত হয়ে গেছে, আর রূপা নিজেই দুটো মেয়ে।পৃথিবীতে কেউই চিরকাল বেঁচে থাকে না।আমাদের এই নিয়েই চলতে হবে। কিন্তু বেঁচে থাকবার আশাটা কি আরো অনেককে বাঁচিয়ে রাখে না?
রূপা ফোনটা রেখেই চোখদুটো মুছে বাথরুম থেকে মুখটা ভালো করে ধুয়ে মায়ের ঘরে ঢোকে। টুকটাক কথাবার্তার মাঝে মায়ের সন্ধেবেলার জল খাবার, ওষুধ দিতে গিয়ে পরের দিন সুগার টেস্টের কথাও বলে। অনিমা দেবীর শরীর এই কয়েকদিন আরো খারাপ হয়ে গেছে। কথা বলতে শুধু বাবার কথা জিজ্ঞেস করা। সেদিনও রূপার মুখে সব কিছু শুনে রূপাকে বলেন, ‘তোর বাবার কোন খবর পেলি?’
রূপা না বলতেই মা উত্তর দেয়, ‘টিভিতে কোন নাম টাম দেয় নি তো?’ রূপা কিছু সময় আগে হলে স্বাভাবিক ভাবেই রেগে উঠে বলত,‘মা! কী হচ্ছেটা কী? সব কিছুর একটা লিমিট থাকে।’ এবার সব শুনেও জবাব না দিয়ে কিছু সময়ের জন্য চুপ থেকে গেল।মুখটা দেওয়ালের দিকে রেখে দুটো ঠোঁট চাপতেই শরীরটা কেঁপে ওঠে। চোখদুটো বন্ধ হয়ে যায়। মুখটা মুছে জোর করে রেগে ওঠে,‘মা! এটা কী হচ্ছে ? আমি যে তোমাকে বারণ ….’
–আজ তোর বাবার জন্মদিন, মনে আছে তো?
-তা থাকবে না কেন?
মা খানিকক্ষণ সময় চুপ থেকে বলে, ‘একটা মালা আনতে পারতিস তো।’
চমকে ওঠে রূপা। ঢোঁক গেলে মায়ের দিকে না তাকিয়েই প্রশ্ন করে, ‘মালা দিয়ে কী হবে? বাবা ফিরে এলে….’
–আমাদের ঘরে একবার সত্যনারায়ণ পূজা করতে এসেছিলেন, ঐ ঠাকুর মশায়ের কী যেন নাম। মাথার পিছনে ঝুঁটি বাঁধা ছিল।
রূপার কথা থেমে যায়, চমকে ওঠে। মায়ের কাছে আস্তে আস্তে এসে কাঁধে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘ঠাকুরমশাই….’
অনিমা দেবী কোন উত্তর না দিয়ে একটা লম্বা শ্বাস ফেলেন। তারপর আস্তে আস্তে পাশে থাকা মোবাইলটা রূপার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,‘ঘন্টা খানেক আগেই এস.এম.এসটা এসেছে।এবার বল, কি করবি, যেতে তো মনে হয় দেবে না….’
রূপার মুখ দিয়ে কোন কথা না বেরোলেও একটু দূরে চলে যাওয়া একটা অজানা অ্যাম্বুলেন্সের হুটারের সেই ভয়ঙ্কর আওয়াজটা কানে লাগে।

♦–♦–♦