Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • নভেম্বর ১৯, ২০২৩

মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়ালেন হেড, সবরমতীর তীরে ভরাডুবি, বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ ভারতের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়ালেন হেড, সবরমতীর তীরে ভরাডুবি, বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ ভারতের

খেলাধূলায় ‘‌ল অফ অ্যাভারেজ’‌ বলে একটা কথা আছে। ভারতের ক্ষেত্রে সেই কথাটাই সত্যি হয়ে দাঁড়াল। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগোচ্ছিল ভারত। টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে। সব প্রতিপক্ষকেই একপ্রকার উড়িয়ে ফাইনালে উঠে এসেছিলেন রোহিত শর্মারা। আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ফাইনালে এসে ভরাডুবি হবে না তো?‌ সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়ে দাঁড়াল। আসল ম্যাচেই জ্বলে উঠতে ব্যর্থ রোহিত শর্মারা। ২০০৩ সালে ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়া হল না ভারতের। সবরমতীর তীরে বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ রোহিত শর্মাদের। ভারতকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে বিশ্বকাপে আধিপত্য বজায় রাখল অস্ট্রেলিয়া। দুরন্ত সেঞ্চুরি করে দলকে বিশ্বকাপ এনে দিলেন ট্রাভিস হেড।

বিশ্বকাপে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দেখে গেছে টস বড় ফ্যাক্টর। তবে এদিন ততটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়নি ভারতের কাছে। টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। রোহিতেরও পরিকল্পনা ছিল, টস জিতলে প্রথমে ব্যাটিং নেবেন। সুতরাং টস হেরে যে রোহিতকে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল এমন নয়। অস্ট্রেলিয়ার বোলাররাই বেসামাল করে দিয়েছিল ভারতীয় ব্যাটিং লাইনকে।

আগের ম্যাচগুলোর মতোই টপ গিয়ারে শুরু করেছিলেন রোহিত শর্মা। পরিকল্পনা ছিল অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়া। পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছিলেন হিটম্যান। পঞ্চম ওভারে মিচেল স্টার্কের বলে শুভমান গিল (‌৪)‌ ফিরে গেলেও নিজের পরিকল্পনা থেকে সরে আসেননি। আর তাঁর সেই আগ্রাসী ব্যাটিংই কাল হয়ে দাঁড়াল ভারতের কাছে।

দশম ওভারে ম্যাক্সওয়েলকে ছক্কা ও চার হাঁকানোর পর আবার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে গ্যালারিতে পাঠাতে গিয়েছিলেন। ব্যাটে–বলে ঠিকভাবে সংযোগ না হওয়ায় ট্রাভিস হেডের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রোহিত। ৩১ বলে তিনি করেন ৪৭। মারেন ৪টি ৪ ও ৩টি ৬। পরের ওভারে শ্রেয়স আয়ারকে (‌৪)‌ তুলে নিয়ে ভারতকে চাপে ফেলে দেন প্যাট কামিন্স।

দ্রুত ২ উইকেট হারানোয় পার্টনারশিপ গড়ার দিকে নজর দেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দাপটে রান তোলার গতিও কমে যায়। ২৯তম ওভারে কামিন্সের তৃতীয় বল ব্যাটের ভেতরের দিকের কানায় লাগিয়ে বোল্ড হন কোহলি। ৬৩ বলে তিনি করে ৫৪। রবীন্দ্র জাদেজা (‌৯)‌, সূর্যকুমার যাদবদের (‌১৮) আক্রমণাত্মক হওয়ার সুযোগ দেননি অসি বোলাররা। ধসের মুখে ১০৭ বলে ৬৬ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন লোকেশ রাহুল। ৫০ ওভারে ২৪০ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। ২টি করে উইকেট নেন হ্যাজেলউড ও কামিন্স।

ফাইনালের মতো মেগা ম্যাচে ২৪০ রানের পুঁজি একেবারেই আহামরি নয়। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে এত কম রান নিয়ে লড়াই করতে গেলে বিধ্বংসী হয়ে উঠতে হত বোলারদের। শুরুতে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন বুমরা, সামিরা। এদিন সিরাজের বদলে সামির হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন রোহিত। দ্বিতীয় ওভারেই ওয়ার্নারকে (‌৭)‌ তুলে নেন সামি। তাতেও থামিয়ে রাখা যায়নি ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শকে।

পঞ্চম ওভারে আবার ধাক্কা। এবার মার্শকে (‌১৫ বলে ১৫)‌ ফেরান বুমরা। এক ওভার পরে স্মিথকেও (‌৪)‌ ফিরিয়ে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেনের জুটি ভারতকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। চাপের মুখে ভেঙে না পড়ে পাল্লা আক্রমণ শানিয়ে ভারতীয় বোলারদের ছন্দ নষ্ট করে দেন হেড। ৯৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করার নজির গড়লেন।

হেডের পাশাপাশি লাবুশেনের কথাও বলতে হবে। ঠান্ডা মাথায় হেডকে সঙ্গ দিয়ে যান। চাপের মুখে যেভাবে ধৈর্যশীল ইনিংস খেললেন, সত্যিই প্রশংসনীয়। ৯৯ বলে তিনি হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। হেড ও লাবুশেনের জুটিই অস্ট্রেলিয়াকে ষষ্ঠবারের জন্য বিশ্বকাপ এনে দেয়। দুজনের জুটিতে ওঠে ১৯২ রান। ১২০ বলে ১৩৭ রান করে সিরাজের বলে আউট হন ট্রাভিস হেড। মারেন ১৫টি ৪ ও ৪টি ৬। হেড আউট হওয়ার পর দলের জয়সূচক রান নেন ম্যাক্সওয়েল (‌অপরাজিত ২)‌। ১১০ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকেন মার্নাস লাবুশেন। ৪৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান তুলে বিশ্বকাপ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!