- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
কমিউনিস্টদের অন্তর্দ্বন্দ্বে দিশাহীন নেপাল। মাওবাদী পুষ্পকমলকে প্রচন্ড আঘাত জোটের অঙ্গসঙ্গীদের। সরকার পতনের আশঙ্কায় কম্পমান বহুদলীয় ক্ষমতা
নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখবেন প্রচণ্ড ? নাকি আবার ঝরে পড়বে সরকার ?

নেপালে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্টরা পরস্পরের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়ল। হিমালয়ের কোল ঘেঁষা ভারতের প্রতিবেশী দেশটিতে নতুন রাজনৈতিক সংকট মাথাচাড়া দিচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল তথা প্রচণ্ড নিজের সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবেন কিনা এই নিয়ে চলছে জল্পনা। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জোটসঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলির নেতৃত্বের সংঘাতের পরিণতিতে কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট ( ইউএমএল ) – এর আটজন মন্ত্রী এবং শীর্ষনেতা, উপ -প্রধানমন্ত্রী বিষনু পাউডেল পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাওবাদী সেন্টার পার্টির সুপ্রিমো এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড বিরোধী রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেস পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রামচন্দ্র পাউডেলকে সমর্থনের জন্য জোটসঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলিকে আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনে সাড়া দিতে একেবারেই নারাজ ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট পার্টি (ইউএমএল)। এর জেরে যে বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে তাতে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে টলোমলো অবস্থা তৈরি হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডর নেতৃত্বে নেপালে ক্ষমতাসীন সাতটি দলের জোট সরকার চলছে। ক্ষমতাসীন মাওবাদী সেন্টার পার্টি ও কমিউনিস্ট ইউনিফাইয়েড মার্ক্সিস্ট -লেনিনিস্ট ( ইউএমএল) ছাড়াও জোটসঙ্গী হয়ে আছে আরও পাঁচটি ছোট ছোট দল।
আগামী মাসের ৯ তারিখ নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট কর্মভার নেবেন। ২০০৮ সালে নেপাল থেকে ২৩৯ বছরের প্রাচীন রাজতন্ত্রের উচ্ছেদ হয়, রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের পরে। এরপর নেপাল প্রজাতন্ত্রে উন্নীত হলেও বারেবার রাজনৈতিক রদবদল হয়েছে। ১১ বার সরকার পরিবর্তন হয়েছে।
বিরোধের সূত্রপাতের অন্যতম প্রধান কারণ, প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড জোটসঙ্গী কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট – লেনিনিস্ট ( ইউএমএল) – এর প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীকে সমর্থন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েও সিদ্ধান্ত ত্থেকে সরে দাঁড়ান। সরকারি মন্ত্রীরা, এমনকি উপ-প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পদত্যাগ করে বসেন। যা কার্যত অন্তর্দ্বন্দ্বের পরিণাম। ইতিমধ্যে উপ – প্রধানমন্ত্রী এও হুমকি দিয়ে রেখেছেন, জোট সরকারের ওপর থেকে তারা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবেন।
যেসব মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তাদের অন্যতম নেপালের বিদেশমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড গতকালই নির্দেশ দিয়েছেন, জেনেভায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বৈঠকে বিদেশমন্ত্রীর যোগ দেওয়া চলবে না।
পরিস্থিতি সবদিক থেকেই প্রতিকূল। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডকে আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে। নেপালের সংসদে মোট সদস্য সংখ্যা ২৭৫। এর মধ্যে মাওবাদী সেন্টার পার্টির ৩২।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, সরকার টিকিয়ে রাখতে মাওবাদী প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডকে এবার নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে। একক রাজনৈতিক দল হিসেবে সংসদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য কংগ্রেসের। তবে কি অদূরভবিষ্যতে মাওবাদী প্রচণ্ড মার্ক্সিস্ট ও লেনিনিস্ট জোটসঙ্গীদের সঙ্গে সম্পর্কত্যাগ করে বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস পার্টির সঙ্গে জোট গড়বেন?
❤ Support Us