- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মে ১১, ২০২৩
কর্ণাটকে কুর্শি হারাচ্ছে বিজেপি ? বুথ ফেরত সমীক্ষায় কীসের ইঙ্গিত

কর্ণাটকের কুর্শি কি বিজেপির হাত ছাড়া হচ্ছে? তেমনই ইঙ্গিত মিলছে বুথ ফেরত সমীক্ষায় । এখনও পর্যন্ত বুথ ফেরত সমীক্ষার যা ফল তাতে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস । যাকে বলা যায় “অ্যাডভান্টেজ কংগ্রেস” । আর এই বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল সামনে আসতেই “কর্ণাটকের মানুষকে ধন্যবাদ” , লিখে টুইট করেছেন রাহুল গান্ধী । কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লিখেছেন, খুব ভালোভাবে পরিচালিত, মর্যাদাপূর্ণ এবং মানুষের জন্য জোরদার প্রচারের জন্য বব্বর শের কর্মী এবং কংগ্রেসের নেতাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই । উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বড় সংখ্যায় ভোটদানের জন্য কর্ণাটকের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
তবে আসলে ভোটের ফল কোন দিকে যায় সেটা জানতে আগামী শনিবার ,১৩ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কংগ্রেস-বিজেপি-জেডিএসকে । এক্সিট পোলের পূর্বাভাস বলছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কর্ণাটকে ক্ষমতায় আসবে কংগ্রেস । এমনটাই বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানাচ্ছে ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার বুথফেরত সমীক্ষা । তাদের সমীক্ষা বলছে, কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেতে পারে ৬২-৮০ টি আসন । কংগ্রেস পেতে পারে ১২২-১৪০ টি আসন । জেডিএস পেতে পারে ২০-২৫ টি আসন । তাদের হিসাব ঠিক হলে এককভাবে কর্ণাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে কংগ্রেস । এবিপি সি-ভোটার বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, কর্ণাটকে বিজেপি পিছিয়ে, কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে । তাদের বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিজেপি পেতে চলেছে ৮৮-৯৮ টি আসন । কংগ্রেস পেতে চলেছে ৯৯-১০৯ টি আসন । জেডিএসের পেতে চলেছে ২১-২৬ টি আসন । জি নিউজ-ম্যাট্রিজ বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে কর্ণাটকে সেঞ্চুরি করতে চলেছে কংগ্রেস । তাদের বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে কংগ্রেস ১০৩-১১৮ টি আসন পেতে চলেছে । ৭৯-৯৪ টি আসন পেতে চলেছে বিজেপির । জেডিএসের হাতে আসতে পারে ২৫-৩৩ টি আসন। ২ থেকে ৫টি আসন পেতে পারে অন্যান্যরা । নিউজ ২৪-টুডেজ চানক্য বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে কর্নাটকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কংগ্রেস । তাদের হিসেবে বিজেপির ৯২ টি আসনে জয়ের সম্ভাবনা । কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা ১২০ টি আসনে । জেডিএস পেতে পারে ১২ টি আসন । অর্থাৎ যা ইঙ্গিত, তাতে জোরদার লড়াই হতে চলেছে কর্ণাটকে । আর এই লড়াইয়ে “গ্রেট ফ্যাক্টর” হতে পারে জেডিএস ।
এখন ভোটের ফল প্রকাশের পর যদি প্রয়োজন হয় সরকার গড়তে কংগ্রেস কি জেডিএস -এর হাত ধরবে? এই প্রসঙ্গে কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমারকে প্রশ্ন করলে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “কুমারস্বামীদের সঙ্গে জোট গঠনের কোনও প্রশ্নই নেই ।”
আসলে ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দলের জায়গা পেয়েছিল বিজেপি । ১০৪ টি আসন সেই নির্বাচনে বিজেপির হাতে এসেছিল। কংগ্রেস পেয়েছিল ৮০ টি আসন । জেডিএস ৩৭ টি আসন পেয়েছিল। একটি করে আসনে জিতেছিল নির্দল, বিএসপি এবং কর্ণাটক প্রজ্ঞাবন্ত জনতা পার্টি। অর্থাৎ কোনও দলই সরকার গড়তে “ম্যাজিক ফিগার” অর্থাৎ ১১৩টি আসন পায়নি । এই অবস্থায় জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়তে চায় কংগ্রেস। তবে তার আগেই সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি এবং সরকার গঠন করেও ফেলেছিল। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা । কিন্তু মাত্র তিনদিন টিকেছিল সেই বিজেপি সরকার । পর্যাপ্ত বিধায়ক সংখ্যা না থাকায় আস্থাভোটের আগেই সেবার বিজেপি সরকার পড়ে গিয়েছিল। তারপর জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কর্ণাটকে সরকার গঠন করেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কুমারস্বামী। তবে সেই জোট সরকারও বেশিদিন টেকেনি । ১৪ মাসের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। নির্দল-সহ ১৭ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে দিয়েছিলেন তখন । সেই পরিস্থিতিতে কর্ণাটকের কুর্শি ফের দখল করেছিল বিজেপি । ২০১৯ সালে যে উপ-নির্বাচন হয়েছিল, তাতে ১৫ টি আসনের মধ্যে ১২ টিতে জিতেছিল গেরুয়া শিবির । কংগ্রেসের জেডিএস-এর সঙ্গে ঘর করার সেই অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি। তাই এবার আর তারা চাইছে না জেডিএস-এর সঙ্গে হাত মেলাতে ।
গেরুয়া শিবির বুথ ফেরত সমীক্ষা সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করলেও, বিজেপির অন্দর মহলের খবর দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে ক্ষমতার বদল হলে তার প্রভাব পরবে ২০২৪ এর লোকসভায় । পাশাপাশি আগামী নভেম্বরে আরও চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, তাই মোদি ম্যাজিকের সম্মোহনি শক্তিকে ফের পুনরুজ্জীবিত করতে এবং ২৪ এর লক্ষ্যে বেশ কিছু সংস্কার এবং পরিবর্তনের পথে হাঁটবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী নয়াদিল্লির মন্ত্রীসভাতেও হতে পারে বেশ কিছু রদবদল ।
❤ Support Us