- দে । শ
- মে ১১, ২০২৩
শুভাপ্রসন্নের বাড়িতে দিদির দূত কুণাল। সিদ্ধান্তে অনড় চিত্রশিল্পী

“দ্য কেরালা স্টোরি” বাংলায় দেখানো যাবে না। রাজ্য সরকার তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তের পর মমতা ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন চিত্রশিল্পী ও ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের অন্যতম ব্যক্তি শুভাপ্রসন্ন। বলেছিলেন, “মমতা এই সিনেমাটা দেখেননি। স্তাবকদের কথায় এসব করেছেন। এটা শিল্পীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।” তার পরে শুভাপ্রসন্ন দাবি করেছিলেন, “মমতাকে কেউ জানতো না। পরিবর্তনের জন্য আমি তাঁকে নিয়ে গিয়েছি অনেক জায়গায়,তাঁকে সবাই পছন্দ করতেন না।” শুভাপ্রসন্নর সমালোচনার জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের মুখ পোড়ার উপক্রম হয়। তিনি মমতার বোধ, বুদ্ধি, সংস্কৃতি নিয়ে বুধবার খুব বেশি রকমের সরব হয়েছিলেন। পাল্টা শুভাপ্রসন্নকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, কামারহাটি বিধায়ক মদন মিত্র। বুধবার একটি সংবাদ মাধ্যমে শুভাপ্রসন্ন মমতা ও তাঁর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এমন বিতর্কিত মন্তব্য করেন যায় যে রাজ্য জুড়ে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। এর পড়ই বুধবার সন্ধ্যায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ “দিদির দূত” হয়ে শুভাপ্রসন্নর বাড়ি চলে যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে ৫০ মিনিট আলোচনা হয়। বেরিয়ে এসে কুণাল ঘোষ জানান, “আমায় সকালে শুভা’দা ফোন করেছিলেন। আমার একটি নিমন্ত্রণ শুভাদার কাছে পাওনা আছে। তাই চলে এলাম। আমি শুভদাকে বলেছি, যাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ রয়েছে আপনি তাঁদের মধ্যে একজন। তা হলে রাজ্য সরকারের একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ভাবে বাইরে মুখ খুলছেন কেন?” এর পর কুণাল ঘোষ বলেন, “আমার কথা শুভাদা মেনে নিয়েছেন।”
এদিকে কুণাল ঘোষ যখন শুভাপ্রসন্নর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বুধবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে এই কথা বলছেন তখন তাঁর থেকে একটু দূরত্বে শুভাপ্রসন্ন দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি কুণালের কথা শেষে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দ্য কেরালা স্টোরি নিয়ে তিনি তাঁর অবস্থান বদল করছেন না।
এর আগে বুধবার একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভাপ্রসন্ন বলেছেন, “মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল, কিন্তু মমতাকে নিয়ে নয়। মমতা ছাড়া বিকল্প ছিল না তাই আমরা মমতাকে বলেছি।এখন ভালো আছে, যখন এরা শোষকের ভূমিকা নেবে, তখন পাল্টে দেব। মমতাকে কেউ চিনতো না। এই পরিবর্তনের কারিগর আমি। মমতার উচ্চারণ, কথাবার্তা শুনে এলিটরা ব্যঙ্গ করছিল, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। আমি তৃণমূল করি না। আমার কিছু পাওয়ার নেই তৃণমূলের কাছে।”
তবে কি শুভাপ্রসন্ন এই হুঁশিয়ারিতে আতঙ্কিত হয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে শুভাপ্রসন্নর বাড়ি চলে গেলেন কুণাল ঘোষ? না হলে যে কুণাল ঘোষ মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মমতা-শুভাপ্রসন্ন মতপার্থক্য হওয়ার পর লাগামছাড়া ভাষায় শুভাপ্রসন্নকে গালমন্দ করেছিলেন, দ্য কেরালা স্টোরি প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানের বিরোধিতা করার পর শুভাপ্রসন্নকে তীব্র ভাষায় গালমন্দ করেছেন, সেই কুণাল ঘোষ কেন শুভাপ্রসন্নর বাড়ি বুধবার সন্ধ্যায় ছুটে গেলেন? কুণাল ঘোষ যখন শুভাপ্রসন্নর বাড়ি থেকে বেরিয়ে “সব ঠিক আছে”, বলে বার্তা দিচ্ছেন, তখন মদন মিত্র শুভাপ্রসন্নকে কটাক্ষ করে বলছেন, “কে শুভাপ্রসন্ন? কজন তাঁকে চেনেন?” পাল্টা শুভাপ্রসন্ন মদনকে বলছেন, “ভবানীপুরের স্তাবক, কীট, তোর কথার জবাব আমি দিই না।”
❤ Support Us