- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মে ৮, ২০২৩
“তদন্তে সহযোগিতায় সমস্যা কোথায়?” প্রশ্ন তুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে যুক্ত করলেন বিচারপতি অমৃতা
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেছেন, “তদন্তে সহযোগিতা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা কোথায় ?” কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বক্তব্য, “তদন্তকারী সংস্থা যে কোনও কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে, এতে অসুবিধা কীসের ?” পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুক্ত করার নির্দেশও দিলেন বিচারপতি অমৃতা ।
প্রসঙ্গত,বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে চলতি মাসের শুরুতেই প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই মামলা গিয়েছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে । সৌমেন নন্দী, রমেশ মাহাতোর মামলা গিয়েছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। যে মামলার শুনানিতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতে তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করার বার্তা দিয়ে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আদালতে ওঠা ও তাঁকে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরা করা প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বার্তা নিয়ে দিনকয়েক আগেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েচিল। টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল অভিজিৎ গোংয়োপাধ্যায়ের এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে। এর পর এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার পরই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি মামলা সরানোর জন্য কলকাতা হাই কৌর্টকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশেই এই মামলা দুটি বিচারের ভার চলে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট বলছে, এর আগে গত ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেছিলেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআই, ইডি-র। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে এই পর্যবেক্ষণের উপর প্রথমে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। পরে মামলাগুলি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানিতে, একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি। আবেদনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের অনুবাদও জমা তখন তাঁরা দিয়েছিল শীর্ষ আদালতে। এরপর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পি এস নরসিমহার বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিষয়টি জানাতে শীর্ষ আদালতে জানাতে হবে। সাক্ষাৎকারের অনুবাদের ভিত্তিতেই তাঁদের নির্দেশ জানায় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে বলা হয় পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা দুটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। তারপরই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সেই মামলাগুলি যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন।
প্রসঙ্গত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর হাত থেকে এই মামলা সরে যাওয়ার পরে বলেছিলেন,”অভিষেকের নাম আকাশ থেকে উড়ে আসেনি। আমার যতদূর মনে পড়ছে, কুন্তল ঘোষের দেওয়া তথ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল।”
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে এই মামলা সরে যাওয়ার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বিচার ব্যবস্থার উপর আমার আস্থা আছে।” তবে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে এই মামলা সরে যাওয়ার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সমালোচনা করে বলেছিলেন, “বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতি হিসেবে তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। কেউই আদালতের ঊর্ধ্বে নয়।”
❤ Support Us