উপাচার্য নিয়োগ মামলায় কাটল না জটিলতা, আদালতের নির্দেশ পালন না করে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের, তিন পক্ষকে বসে তালিকা তৈরির নির্দেশ

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতা এড়াতে আলোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তবে সেই পরামর্শ ফলপ্রসূ হয়নি। তার ফলে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনায় এবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে তিন পক্ষকে একসঙ্গে বসে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিল আদালত, পাশাপাশি ভর্ৎসনাও করেছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১ ডিসেম্বর।

রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত বহুদিন ধরেই চলছে। সেই মামলার শেষ পর্যন্ত রাজ্যের গন্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছয় শীর্ষ শীর্ষ আদালতে। রাজ্যের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সি ভি আনন্দ বোস প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। গত ৬ অক্টোবরের সেই শুনানিতে সি ভি আনন্দ বোসকে সাত দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জবাব দিতে বলে নোটিসও জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যপাল আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। যে উপাচার্যদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরাও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বেতন পাবেন না। একই সঙ্গে তিন পক্ষকে মুখোমুখি বসে সমস্যা  মেটানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।

এই  মামলার শুনানির শুরুতেই সোমবার রাজ্যের আইনজীবী জানান, ২ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে দেখা করে আসেন রাজ্যপালের সঙ্গে। তা সত্ত্বেও জট খোলেনি। উলটে আচার্য তথা রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, আদালতের কোনও লিখিত নির্দেশ নেই। একথা শুনে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ভর্ৎসনা করে বলেন, “আগের দিন সবার সামনে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেছিলেন আপনারা আলোচনা করে সমস্যা মেটান। তার পরও আপনাদের লিখিত নির্দেশ প্রয়োজন? তার মানে পর্যবেক্ষণের কোনও গুরুত্ব নেই? তাহলে কি আমরা অর্ডার পাশ করব?”

এর পরই এদিন রাজ্য, রাজ্যপাল ও ইউজিসির প্রতিনিধিদের একসঙ্গে বসে একটি তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয় বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। আগামী মাসের ১ তারিখ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেই দিনই আদালত ঠিক করবে, আদৌ কোনও কমিটি গঠন করা হবে কি না। তাই বলা যায় উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল-রাজ্যের সংঘাত কিছুতেই কাটছে না।