- এই মুহূর্তে দে । শ
- আগস্ট ২৯, ২০২৪
নদী লোগোয় জনপদের করুণ চিত্র, ভাগীরথীর ভাঙন ছুঁলো রেলপথ
কথা রেখেছেন বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শর্মিলা সরকার। লোকসভা ভোটের প্রচারে বেরিয়ে ভাগীরথী লাগোয়া জনপদগুলির ভাঙন নিয়ে সরব হবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শর্মিলা। লোকসভার অধিবেশনে বলার সুযোগ পেতেই নদী ভাঙনের ভয়াবহ সমস্যার কথা তথ্য-পরিসংখ্যান-সহ তুলে ধরেছেন তিনি। সমাধান চেয়েছেন অবিলম্বে। প্রশ্ন তুলেছেন, ভাঙন মোকাবিলায় স্থায়ী কাজ হয়নি কেন?
অধিবেশনে কালনা মহকুমার কালনা থেকে পূর্বস্থলী, মাজিদা হয়ে কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ পর্যন্ত ফি-বছরের ভাঙনে জমি, বসত, স্কুল, কলেজের ক্ষতির ছবিটা পেশ করেছেন শর্মিলা। পূর্বস্থলী ১নং ব্লকের জালুইডাঙা গ্রামটির ভয়াবহ ভাঙনে এক চতুর্থাংশের অস্তিত্ব কবেই মুছে গিয়েছে। বাকিটুকুর অস্তিত্বও নড়বড়ে। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এখানকার ভাঙন সমস্যা বহুদিনের। চোখের সামনে কত ভিটে, কত চাষজমি, বাগান, নদী সেচ প্রকল্প, স্কুল, ইদগাহ্ যে নদীর পেটে চলে গিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। বহু বাসিন্দা মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। গ্রামের সিংহভাগ গিলে ভাগীরথী এখন হাঁ বাড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান রেলপথটির দিকে। এখানে রেলপথের মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে বইছে ভাগীরথী। জালুইডাঙা শ্মশানটিও ভাগীরথীর হাঁ-মুখের সামনে দাঁড়িয়ে। ‘এই রেলপথ নদীগর্ভে চলে গেলে বিশাল ক্ষতি’ বলে মনে করেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনিও বিষয়টি আগেই কেন্দ্র সরকারের নজরে এনেছেন বলে জানান। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রাজকুমার পাণ্ডে, এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস পালদের কথায়, ‘রাজ্য সরকার এখানে ভাঙন রোধে প্রায়ই কাজ করে। কিন্তু দরকার বড় প্রকল্প করে স্থায়ীভাবে বাঁধ তৈরি। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
শুধু এই এলাকার কথাই তোলেননি বর্ধমান পূর্বের সাংসদ। তাঁর সংসদ-ভাষণে ভাঙন কবলিত কালীনগর, অগ্রদ্বীপ, কৃষ্ণপুর, পলাশি, পিলা, পাটুলি, ঝাউডাঙা, মাজিদা, ডাঙাপাড়ার কথাও উল্লেখ করায় খুশি এলাকার আমজনতা। কাবাডি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি এই কালীনগর গ্রাম। এখানকার বহু বাসিন্দা রাজ্য স্তর থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁদেরই একজন হাবিব শেখ বলছিলেন, ‘ভাঙ্গন রোধে যেটুকু কাজ হয়, তা করে রাজ্যের সেচ দপ্তরই। দরকার কেন্দ্রের পদক্ষেপের।’ পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চ্যাটার্জি বলছিলেন, ‘ঝাউডাঙা, পাটুলির ন’পাড়া, দামপাল, মাজিদার তামাঘাটা, নিমদহর যজ্ঞেশ্বরপুর, পিলার শিমুলডাঙার ভাগীরথীর ভাঙন রোখা জরুরি। সাংসদ এই দাবি তুলে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন।’ কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের ভাগীরথীর ভাঙন সমস্যা ২০ বছরের। জমি-বাড়ির সঙ্গে তলিয়ে গেছে নদিয়ার বেথুয়াডহরি পর্যন্ত রাজ্য সড়কও। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি বলেন, ‘ভাঙন রোধের ব্যাপারে কেন্দ্র সরকার একেবারেই উদাসীন। নমামি গঙ্গে প্রকল্পে ভাঙন রোধের জন্য কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েও কোনও ফল মেলেনি।’
❤ Support Us