- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ৪, ২০২৪
বসিরহাটে বড়ো ব্যবধানে জয় হাজি নুরুলের
সন্দেশখালিতে এগিয়েও পরাজিত রেখা

বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়। তবে সন্দেশখালিতে তৃণমূল পিছিয়ে থাকলে। দোটা রাজ্য তাকিয়েছিল বসিরহটে কী হয়। সন্দেশখালির মানুষ কী করে। বসিরহাট জিতলেও সন্দেশখালি কাঁটা হয়ে রইল। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে সন্দেশখালি বিধানসভায় গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে রাখল তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামকে। ১৫ রাউন্ডের শেষে ২,১০৪ ভোটে রেখা হাজি নুরুলকে পেছনে ফেলে। সেটা আর কভার করতে পারেননি হাজি নুরুল। সন্দেশখালিতে বিজেপি পেয়েছে ৯৫৮৬২ ভোট, সেখানে তৃণমূল পেয়েছে । ৮৭৪৭৫ ভোট সন্দেশখালিতে ৮ ,৩৮৭ ভোটে পরাজয় তৃণমূলের। সন্দেশখালিতে এগিয়ে থাকার চ্যালেঞ্জটা বড় ছিল তৃণমূলের কাছে। কারণ গত ৫ জানুয়ারি থেকে সন্দেশখালিতে একের পর এক যে ঘটনা ঘটেছে তাতে সবার নজর ছিল বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের ওপর। বিশেষ করে সন্দেশখালি বিধানসভার ফলাফল কী হয় সেটাই ছিল দেখার। সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপির, সিপিএম সহ বিরোধী দলের একটার পর একটা কুৎসা, ইডি, সিবিআই দিয়ে তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারি, হয়রানি বন্ধ হয়নি। ভোটের দিন এবং গণনার আগের দিন পর্যন্ত সন্দেশখালিতে হিংসা চলেছে। তৃণমূল একেবারে কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে যেভাবে নির্বাচনে লড়াই দিয়েছে তা অভাবনীয়। সন্দেশখালিতে হারলেও বসিরহাট কেন্দ্রে দলের জয় সম্পর্কে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, এই জয় সন্দেশখালির মানুষের জয়। কুৎসা, মিথ্যা অপবাদে, মিডিয়া ও বিজেপির লাগাতার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির মানুষ মমতা ব্যানার্জির ওপর ভরসা দিয়েছেন। সন্দেশখালিতে সুকুমার বলেন, আমরা সন্দেশখালির সমস্ত মানুষকে সংযত থাকার আবেদন জানিয়েছি। দলের কর্মী সমর্থকরা যেন সকলে সংযত থাকেন। বিরোধীদের কোনরকম প্ররোচনায় যেন কেউ পা না দেন। সন্দেশখালি শান্ত থাকুক এটাই চাই। ভোটের ফল ঘোষণার পরেই সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পথে নেমে উৎসব পালন করেন। চলে আবির খেলা, একে অপরের মিস্টি মুখ করানো। ৫ মাস পর সন্দেশখালির মানুষ আনন্দ উৎসবে মেতে উঠল। জয়ের পর হাজি নুরুল বলেন, আমাকে নির্বাচিত করায় আমি বসিরহাটের মানুষের কাছে ঋণী। উন্নয়ন করে এই ঋণ শোধ করব। সন্দেশখালির ঘটনা যে মিথ্যা, নাটক তা প্রমাণ হয়ে গেল।
বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুলের জয় প্রমাণ করে দিল সন্দেশখালির ঘটনা কোন দাগ কাটেনি এই কেন্দ্রের মানুষের মনে। বিপুল ব্যবধানে তিনি পরাজিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশির্বাদধন্যা প্রার্থী রেখা পাত্রকে। এদিন সকালে ভ্যাবলা পলিটেকনিক কলেজে যথা সময়ে শুরু হয় এই কেন্দ্রের ভোট গণনা। প্রথম রাউন্ডের গণনার শেষে দেখা যায় তৃণমূলের হাজি নুরুল ইসলাম বিজেপির রেখা পাত্রর থেকে থেকে ২৮ হাজারেরে বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। সেই ব্যবধান প্রতি রাউন্ডে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তৃতীয় রাউন্ডে ব্যবধান ৬৬ হাজার ছাড়ায়। গণনার গতিপ্রকৃতি দেখে বিজেপি প্রার্থী সন্দেশখালির ‘শক্তিস্বরূপা’ রেখা পাত্র গণনা কেন্দ্র ছাড়েন। রেখা দাবি করেন, তাঁর কেন্দ্রে ৫০০ বুথে ছাপ্পা হয়েছে। গণনা কেন্দ্রের বাইরে আসতেই রেখা বাইরে অপেক্ষারত জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন। রেখার গাড়ির ওপর অনেকেই চড়াও হতে গেলে তৃণমূলের নেতারা কর্মীদের সংযত করেন। তৃণমূল সমর্থকরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তোলেন। রেখার নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে যান। গণনার শেষে হাজি নুরুল পেয়েছেন ৭ লাখ ৯৮ হাজার, ৫০ ভোট। রেখা পাত্রর প্রাপ্ত ভোট ৪ লাখ ৩৬২ হাজার,৩০১ ভোট। হাজি নুরুলের জয়ের ব্যবধান দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৯ ভোট। ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৩৭ ভোট পেয়ে আইএসএফ প্রার্থী আখতার রহমান বিশ্বাস তৃতীয় স্থানে । চতুর্থ স্থানে সিপিএমের নিরাপদ সরদার পেয়েছেন ৭৭ হাজার ১৮০ ভোট। তৃণমূলের এই জয় প্রত্যাশিত ছিল । প্রথম থেকেই তৃণমূলের নেতা কর্মীরা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। প্রতি রাউন্ডে জয়ের খবর আসতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বাইরে অপেক্ষারত তৃণমূল সমর্থকরা। সবুজ আবিরে ভরে যায় গোটা এলাকা। বাজি, ঢাক, ব্যান্ড পার্টি নিয়ে তৃণমূল সমর্থকরা উল্লাস করতে থাকেন।
❤ Support Us